গাজীপুরের কালিয়াকৈরে পারিবারিক কলহে শাশুড়ি জোলেখা বেগমকে (৫৫)কে মারপিট করে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে নিজ পুত্র বধূর বিরুদ্ধে।
বৃহস্পতিবার রাত আটটার দিকে উপজেলার কতুবদিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় শুক্রবার (৫ এপ্রিল) দুপুরে ভুক্তভোগীর স্বামী বাদী হয়ে থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করে। ভুক্তভোগী শাশুড়ি হলেন উপজেলার কুতুবদিয়া গ্রামের আলিম উদ্দিনের স্ত্রী।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, প্রায় ৬ বছর আগে ছেলে রনি মিয়ার সাথে পারিবারিক ভাবে পুত্র বধূ বৃষ্টির সাথে বিয়ে হয়। তাদের ঘরে একটি কন্যা সন্তানও রয়েছে। বিয়ে পর থেকেই স্বামী স্ত্রীর মধ্যে পারিবারিক কলহ চলে আসছে। এ নিয়ে বছর খানেক আগে পুত্র ও পুত্র বধুর মাঝে ডিভোর্স হয়। তবে ডির্ভোসের কিছুদিন যেতে না যেতেই ফের আবার স্বামী স্ত্রীর বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়।
স্বামীর স্ত্রীদের মাঝে ঝগড়া সৃষ্টি হলে শাশুড়ি বাঁধা দিতে গেলে পুত্র বধূ বৃষ্টি শাশুড়িকে অকাথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতো। বিষয়টি নিয়ে কয়েকবার গ্রাম্য শালিস হয়। তাতেও পুত্রবধূ ক্ষান্ত্য হয়নি। বিচারের পর থেকেই বৃষ্টি তার স্বামী ও পরিবারের লোকজনের সাথে আরোও বেশি খারাপ আচারণ করে আসছিলো। পরে ছেলের বাবা আলিম উদ্দিন গ্রামের লোকজন ডেকে ছেলে ও তার স্ত্রীকে পৃথক করে দেয়। পৃথক করে দেয়ার পর থেকে বৃষ্টি আরও বেপরোয়া হয়ে উঠে। তারই-ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার রাত আটটার দিকে বাড়ি ফাঁকা পেয়ে পুত্রবধূ বৃষ্টি শাশুড়ির ঘরের ভিতরে ঢুকে মেইনফটক তালা লাগিয়ে ঘরের ভিতর গিয়ে শাশুড়ির চুলের মুঠো ধরে টানা হেচরা করে মাটিতে ফেলে বাঁশের লাঠি দিয়ে এলোপাথারী ভাবে মারপিট করে শরীরের বিভিন্ন স্থানে নীলাফুলা জখম করে। এসময় শাশুড়ি চিৎকার করলে তাহার গলায় চাপ দিয়ে ধরে রাখে। পরে শাশুড়ির মুখ থেকে পুত্রবধূ হাত সরিয়ে নিলে তাহার ডাক-চিৎকারে আশেপাশের লোকজন ছুটে আসলে বৃষ্টি বেগম ততক্ষণে শাশুড়িকে মেরে ফেলার হুমকী দিয়ে ঘর থেকে বেড়িয়ে যায়।
বৃষ্টি ওই ঘটনার পর থেকে স্বামীর বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র চলে যায়। পরে পরিবারের লোকজন ও এলাকাবাসী তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। ওই ঘটনায় জোলেখা বেগমের স্বামী আলিম উদ্দিন বাদী হয়ে শুক্রবার দুপুরে কালিয়াকৈর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছে।
চাপাইর ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত মহিলা ইউপি সদস্য রওশনারা জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি পুত্রবধূ শাশুড়িকে মেরে ফেলে রেখেছে। পরে তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য ভর্তি করা হয়। তবে বিষয়টি নেক্কারজনক এভাবে শাশুড়িকে মারতে পারে আগে কখনো দেখিনি। এর বিচার হওয়া উচিত।
কালিয়াকৈর থানার ডিউটি অফিসার উপপরিদর্শক (এসআই) আলমগীর জানান, এবিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তসাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।