ইতিহাস ও ঐতিহ্য

গ্রাম বাংলা থেকে হারিয়ে যাচ্চে দেশী খেজুর রস

জৈষ্ঠ্য মাসে আম, জাম, কাঁঠাল, লিচু ও দেশি খেজুর ফলের রস বেশ কদর ছিলো। এসব ফলের প্রায় মানুষেই খেয়ে থাকতো। শীত এলেই এলাকার হাট বাজার গুলোতে অবাদে বিক্রি হয়ে থাকতো এসব খেজুরের রস। পরিকল্পিত ভাবে গাছ কাটার ফলে গ্রাম বাংলার মানুষ এসব মৌসুমি ফলের মধ্যে দেশি খেজুর রস এখন আর পাই না।

জানা গেছে, আবহমান গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য খেজুর গাছ প্রায় মাঠে প্রচুর ছিল। শীত মৌসুমে গাছিরা খেজুর গাছ কেটে রস আহরণ করে গুড় তৈরি করত। গাছ কাঁটা শেষ হলেই গাছ থেকে খেজুরের মৌচা বাহির হত। প্রথমে ফুল পরে সবুজ রংয়ের ফল ধরে। জৈষ্ঠ্য মাসের দিকে গাছেই লাল এবং খাওয়ার উপযোগী হত। এ খেজুর রস শিশু, কিশোর থেকে মধ্যে বয়সি সব মানুষই খেতো।

কৃষক ও এলাকার বৃদ্ধ থেকে শুরু করে সকল বয়সের লোকজন খেজুরের রস খাওয়ার জন্য ভীড় জমাতো হাট বাজারে। গাছে খেজুরের রসের স্বাদ বেশ ভালো। তাই সবাই খেজুর রস গুলো নিজে খেতো ও বাড়ির ছেলে, মেয়েদের জন্য নিয়ে আসতো। খেজুরের রস না পেলে অনেকেই খেজুরের কাঁদি কেটে বাড়ি নিয়ে যেতেন এবং লবন পানি দিয়ে ভিজিয়ে বস্তার ভিতরে রাখতেন।

প্রায় ১৫-২০ বছর আগে থেকেই ফল ব্যবসায়ীরা মধ্যে প্রাচ্যের দেশ সৌদি আরব থেকে বিভিন্ন জাতের খীর, খেজুর আমদানি করতেন। আর এই খেজুর গুলো গ্রামের বিভিন্ন দোকানে সব সময় বিক্রি হচ্ছে। বিশেষ করে রমজান মাসে খীর খেজুরের চাহিদা বেশি থাকে। তাই মানুষ খেয়েও থাকেন বেশি। রক্ষণাবেক্ষনের অভাবে দেশী খেজুর গাছ ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় দেশি খেজুর রসের প্রতি মানুষের অনিহা। ফলে গাছের খেজুর রস এখন আর তেমন একটা চোখে পড়ে না।

মো: আক্কাছ আলীসহ প্রবীণরা জানান, ছোট বেলায় খুব দেশি খেজুর রস পেট ভরে খেঁয়েছি। এই খেজুর রস বাজারেও বিক্রি হতো, শহরের লোকজন কিনে খেতো। কালের বিবর্তনে আজ দেশি খেজুরের রস থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে মানুষ। বর্তমান প্রজন্ম একদিন দেশি খেজুর রসের নামটাও মুখে আনবে না। এখন খেজুর রসে ভরা মৌসুমেও খেজুর রস পর্যাপ্ত না পাওয়ায় আর কেউ খাচ্ছে না।

সম্পর্কিত সংবাদ

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Back to top button

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker