সরিষাবাড়ী

টেনে-হিঁচরে হাজতে, পুলিশের অমানবিক আচরণে সরিষাবাড়ী থানার ৬ পুলিশ বহিস্কার

জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আসামিদের টেনে-হিঁচড়ে হাজতে নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় অভিযুক্ত চার পুলিশ উপ-পরিদর্শককে সাময়িক বহিষ্কার ও দুই কনস্টেবলকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

গত মঙ্গলবার (১০ মে) সকালে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালের পুলিশের অমানবিক আচরণের কারনে তাদের বরখাস্ত করেন জেলা পুলিশ সুপার। এ ঘটনায় ঘটনায় তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানা যায়।

বহিষ্কৃত পুলিশ সদস্যরা হলেন, পুলিশ উপ-পরিদর্শক আলতাফ হোসেন (এসআই), সাইফুল ইসলাম (এসআই), ওয়াজেদ আলী (এসআই) ও মুনতাজ (এসআই)। এছাড়াও মোজাম্মেল হক (কনস্টেবল) ও (নারী কনস্টেবল) সাথী আক্তারকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

আরও পড়ুন: হাসপাতাল থেকে টেনে-হিঁচরে নামালো আহত আসামী

জানা যায়, সরিষাবাড়ী পৌর বাউসি বাজার এলাকার মৃত মহির উদ্দিনের ছেলে আব্দুল জলিলের ২০ শতাংশ বসতভিটার জমি নিয়ে প্রতিপক্ষ মুজিবুর রহমানের সাথে বিরোধ চলে আসছে।

প্রতিপক্ষ মজিবুর রহমান দাবি করে আসছেন ওই ভিটার ২০ শতক জমি তার। আব্দুল জলিল জবরদখল করে ভোগকরছে। এ নিয়ে দু-পক্ষের মধ্যে দীর্ঘ দিন ধরে বিরোধ চলমান। আদালতে মামলা করে ইতোমধ্যে আব্দুল জলিল তার পক্ষে রায় দিয়েছেন। আদালতের আদেশ অমান্য করে সোমবার সকাল থেকে মজিবুর রহমানের নেতৃত্বে তার দলবল নিয়ে হামলার প্রস্তুতি নেয় জমি দখল নিতে।

এদিকে আব্দুল জলিল তার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বসতভিটা রক্ষায় দলবদ্ধ হলে প্রতিপক্ষ মুজিবুর রহমানের লোকজন দেশীয় অস্ত্র রামদা, লোহার রড়, নিয়ে অতর্কিত হামলা চালায়। হামলা চালিয়ে রামদা দিয়ে এলোপাথারী কুপিয়ে আব্দুল জলিলসহ পরিবারের সবাই গুরুতর আহত করে। আহত এবং আটকৃতরা হলেন, আব্দুল জলিল(৬৪) আব্দুল জলিলের স্ত্রী লাইলী বেগম(৫০),বড় ছেলে আবু বক্কর সিদ্দিক(৩০) মেজো ছেলে ওয়াজ করোনী (২৫), ছোট ছেলে হামদাদুল হক(১৬)। তাদের সরিষাবাড়ী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভর্তি করা হয়।

এদিকে ঘটনার পর উল্টো মুজিবুর রহমান বাদী হয়ে চিকিৎসাধীন চারজনসহ ১৫ জনকে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার পর মঙ্গলবার দুপুরে পুলিশ হাসপাতালে ঢুকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এজাহারভুক্ত চার আসামিকে আটক করে। হাসপাতালের শয্যা থেকে পুলিশ তাদের হাত পা দরে নামিয়ে নিয়ে আসে। পরে হাত-মুখ চেপে ধরে পিটিয়ে গাড়িতে তুলে। এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

আব্দুল জলিলের জামাতা চাঁন মিয়া, মেয়ে জুলেখা বেগম ও ভাতিজা রানা মিয়া অভিযোগ করে জানান, আব্দুল জলিল সোমবার রাতে থানায় মামলা করতে গেলেও পুলিশ তাদের মামলা নেয়নি। উল্টো আব্দুল জলিলকে থানায় আটকে রাখা হয়। পরে বাকীদের টেনে হিচরে হাসপাতাল থেকে নিয়ে হাজতে দেয়।

এ বিষয়ে জামালপুর সদর সার্কেল অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাকির হোসেন সুমন জানান, উক্ত ঘটনার সাথে জড়িত পুলিশ কর্মকর্তাদের সাসপেন্ড করে সরিষাবাড়ী থানা থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত পুর্বক সর্বোচ্চ বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ ব্যাপারে জামালপুর জেলা পুলিশ সুপার নাসির উদ্দিন আহমেদ বলেন, উক্ত ঘটনায় জড়িত পুলিশ সদস্যদের ইতিমধ্যে বরখাস্ত করা হয়েছে। তদন্ত পুর্বক সর্বোচ্চ বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


Discover more from MIssion 90 News

Subscribe to get the latest posts to your email.

সম্পর্কিত সংবাদ

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Back to top button

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker