বিজয়ের মাস ডিসেম্বর বাংলাদেশের মানুষের কাছে একটি অবিস্মরণীয় মাস৷ বাংলাদেশের সবুজ ফসলের মাঠ ও মাটির বুকে এই দেশের বীর বাঙ্গালীর রক্তে ভেজার মধ্য দিয়ে অর্জিত হয় লাল সবুজের পতাকা। জাতীয় পতাকা আমাদের গৌরবের প্রতিক। বিজয়ের মাস ডিসেম্বরে পতাকা কেনার ধুম পড়েছে কিশোরগঞ্জে। কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলাতে বিজয়ের মাসে জাতীয় পতাকা নিয়ে ফেরি করে বেড়াচ্ছেন আব্দুল কাদির। বিজয় দিবস ও স্বাধীনতা দিবসের মাসে পতাকা নিয়ে ফেরি করে বিক্রি করেন তিনি।
সরেজমিনে দেখা যায়, মাথায়, বুকে, হাতে লাল সবুজের পতাকা নিয়ে কটিয়াদী বাজারে ঘুরে বেড়াচ্ছেন কাদির। ছোট বড় বিভিন্ন পতাকা, স্টিকারে সজ্জিত তার হাত। কাঁধে হ্যান্ড মাইকে দেশাত্মবোধক সঙ্গীত ও বঙ্গবন্ধুর ভাষণ প্রচার করে চলেছেন। পতাকা সংগ্রহ করতে মানুষকে উদ্ভুদ্ধ করছেন। ভোর থেকে রাত পর্যন্ত পৌর এলাকা ও গ্রামে ঘুরে বেড়ান পতাকা নিয়ে।
আব্দুল কাদিরের বয়স (৫৫) কটিয়াদী পৌর এলাকার সাব রেজিস্টার অফিসের পিছনে ছোট্ট একটি ঘরে পরিবার নিয়ে বসবাস করেন তিনি। এছাড়াও তিনি পএিকাও বিক্রি করেন। করোনার সময় তিনি জীবনের মায়া ত্যাগ করে ঘুরে ঘুরে হ্যান্ড মাইক দিয়ে মানুষকে সচেতন করেছিলেন। স্থানীয় প্রশাসন ও দেশের যে কোন জরুরী বিষয়, দুর্যোগেও মানুষকে নিঃস্বার্থ ভাবে সচেতন করে বেড়ান ঘুরে ঘুরে। তবে আব্দুল কাদিরের রয়েছে কষ্টে গাঁথা জীবন। নিজের ভাগ্যের কোন পরিবর্তন হয়নি। না না টানাপোড়েনের মধ্য দিয়ে চলতে হয় তাকে। জনসেবায় নিঃস্বার্থ ভাবে কাজ করলেও সরকারি বা বেসরকারি কোন রকম সহযোগিতাও এখন পর্যন্ত জোটেনি কাদিরের ভাগ্যে। নেই থাকার মতো নির্দিষ্ট কোন যায়গা। আব্দুল কাদির কটিয়াদীর একজন হাসোজ্জল ও সাদা মনের মানুষ হিসেবে পরিচিত নিজ এলাকায়।
আব্দুল কাদির বলেন, দেশের প্রতি ভালোবাসা থেকেই বিজয়ের মাসে জাতীয় পতাকা নিয়ে ফেরি করে বেড়াই। এ থেকে যা পাই, তা নিয়ে খুশি আমি। নিছক ব্যাবসা নয়, এটা আমার মনের টান। সরকারি জনকল্যাণমুখী জরুরি কোন বার্তা নিজ উদ্যোগে হ্যান্ড মাইক দিয়ে ঘুরে ঘুরে প্রচার করি। আমার থাকার মতো নির্দিষ্ট কোন জায়গা নেই। সংসার নিয়েও চলতে হিমসিম খেতে হচ্ছে। ছেলে মেয়ের লেখাপড়ার খরচ চালাতে পারছিনা। আর্থিক ভাবে কোন সহায়তা পেলে উপকৃত হতাম।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কটিয়াদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জ্যোতিশ্বর পাল বলেন, জাতীয় পতাকার প্রতি তার এ ভালোবাসা প্রশংসনীয়। ওনি (কাদির) করোনার সময়’ও জনগনকে সচেতন করেছিলেন। তার এমন দুরবস্থার বিষয়টি জানা ছিল না। শীঘ্রই প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাকে প্রয়োজনীয় সহায়তা করা হবে।
Discover more from MIssion 90 News
Subscribe to get the latest posts to your email.