একটু শান্তি, একটু তৃপ্তি, একটু আরাম কিংবা একমুঠো আয়েশের সানিধ্য পেতে, অনেক সময় মানুষ নিজের জীবন থেকে মূল্যবান অনেক কিছু বিসর্জন দেয়। কখনো জেনে, কখনো বা না জেনে। জেনে শুনে নিজের জীবনের উপর আঘাত আনাটা তাও আবার কু-অভ্যাসের মাধ্যমে নিজেকে তিলে তিলে শেষ করে দেওয়াটা আত্মহত্যার শামিল বলে উল্লেখ করেন সচেতন মহল।
গরম চায়ের সঙ্গে সিগারেট, বড় বিপদের সম্ভাবনা স্বীয় জীবনের। চায়ের সঙ্গে ধূমপান করার মতো বদ অভ্যাস রয়েছে অনেকেরই। এতে সিগারেট এবং চা খাওয়ার মজা দ্বিগুণ বেড়ে যায়, এমনটাই ধারণা তাদের। কিন্তু এই অভ্যাস যে কত বড় বিপদ ডেকে আনছে, সে সম্পর্কে অনেকেই অবগত নন।
দেশের প্রায় প্রতিটি চা স্টল গুলিতে এমন আড্ডা পরিলক্ষিত হয়, সাম্প্রতিক সময়ে ঘটে যাওয়া যেকোন ঘটনা নিয়েই চলে তুমুল বাকযুদ্ধ। এর ফাঁকে ফাঁকে গরম চায়ে চলছে চুমুক ও সিগারেটে মনের সুখে টান।
কুলিয়ারচরের আগরপুর দেখা মিলে মধ্য বয়সী দুই বন্ধু আঙ্গুলের ফাঁকে সিগারেট ও চায়ের কাপ। বহুদিন পর দুজনার দেখা তাই মনে জমে থাকা কথাগুলি বলছে আর চায়ের কাপে এক চুমুক আবার সিগারেটে এক টান।
তাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, তারা জানে এটা ক্ষতিকর তবুও চলছে। আসলে এটা অভ্যাসে পরিনত হয়ে গেছে।
এক কাপ ধোঁয়া ওঠা চা বা কফির সঙ্গে একটি সিগারেট বা বিড়ি। ব্যস্ততার ফাঁকে অনেকেরই এভাবে কাটে। অথবা পাড়ার মোড়ে চায়ের দোকানে প্রায়ই এমন চিত্র ধরা পড়ে। বিষয়টি ক্ষণিকের আরাম দিলেও আদতে নাকি বড় বিপদ ডেকে আনতে পারে।
সম্প্রতি হওয়া এক গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, যারা নিয়মিত ধূমপান বা মদ্যপান করেন, তাদের গরম চা খাওয়া এড়িয়ে যাওয়া উচিত।
সম্প্রতি ‘অ্যানলস অব ইন্টার্নাল মেডিসিন’ নামক জার্নালে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে গবেষকরা জানিয়েছেন, যে ব্যক্তিরা নিয়মিত ধূমপান ও মদ্যপান করেন, তাদের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত গরম চা পান করাটা খাদ্য নালীর ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।
গবেষকদের মতে, ধূমপান ও মদ্যপানের অভ্যাস না থাকলে শুধু চা পান করা নিয়ে চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই। ৩০ বছর থেকে ৭৯ বছর বয়সী সাড়ে ৪ লক্ষ ব্যক্তির ওপরে করা সমীক্ষা থেকে গবেষকরা ভয়াবহ এই তথ্য খুঁজে পেয়েছেন।
ধূমপান, মদ্যপান এবং চা পান অভ্যাসের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছিল এই গবেষণার জন্য। গবেষণার শুরুতে তাদের কারও ক্যান্সার ছিল না। এই সাড়ে ৪ লাখ মানুষের তথ্য নেয়া হয় ৯ বছর ধরে। তাদের মধ্যে ১৭৩১ জনের ইসোফ্যাজিয়াল বা খাদ্যনালীর ক্যান্সার দেখা দেয় ওই সময়ের মধ্যে। যারা অতিরিক্ত গরম চা পান বা মদ্যপান করেন এবং পাশাপাশি ধূমপান করেন, তাদের ইসোফ্যাজিয়াল ক্যান্সারের ঝুঁকি পাঁচগুণ বেশি।