রংপুরে কোটি টাকার প্রলোভন দেখিয়ে ৭৪ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে স্ত্রীসহ এক জ্বিনের বাদশাকে গ্রেপ্তার করেছে মহানগর ও জেলা পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
রবিবার (১২ ডিসেম্বর) দুপুরে রংপুর মহানগর ও জেলা সিআইডি কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার মো: আতাউর রহমান।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- রংপুর সদর উপজেলার মমিনপুর চৌধুরীপাড়া গ্রামেরর সবুজ মিয়া ওরফে সবুজ মেম্বার (৪৩) ও তার স্ত্রী পারভীন বেগম (৩৩)।
মামলার বরাত দিয়ে অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার আতাউর রহমান বলেন, রংপুর নগরীর শাপলা চত্ত্বরে মামুনুর রহমান মনা নামে এক ব্যবসায়ীর ইলেকট্রনিক্সের একটি দোকান রয়েছে। সেখানে ২০০৫ সালে সবুজ মিয়া ওরফে সবুজ মেম্বার ও পারভীন বেগমের সঙ্গে মামুনুর রহমানের পরিচয় হয়। এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে অত্যন্ত ঘনিষ্ট সম্পর্কের সুযোগে সবুজ মিয়া নিজেকে জ্বিনের বাদশা হিসেবে পরিচয় দেয়। এ সময় প্রতারণার উদ্দেশ্যে প্রকৃত নাম ঠিকানা ও পরিচিতি গোপন রাখেন তারা।
তিনি আরো বলেন, মামুনুর রহমানকে ব্যবসায়িক ভাবে লাভবান হওয়াসহ অল্পদিনের মধ্যে কোটি কোটি টাকার মালিক হওয়ার প্রলোভন দেখানো হয়। তাকে ইউএস ডলার, প্রাচীন ধাতব মুদ্রা, স্বর্ণ মূর্তি, মূল্যবান পাথরের মূর্তি সংগ্রহ করে দেয়ার আশ্বাস দেন। শুধু তাই নয় খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে শত শত কোটি ডলারের মালিক হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তা ব্যাংকে জমা হবে। ব্যাংক হতে টাকা তুলে বস্তায় করে তারা মামুনুর রহমানকে বাড়িতে পৌঁছেও দিবেন। এসব কথার ফাঁদে ফেলে ব্যবসায়ী মামুনুর রহমানকে দিয়ে ব্যাংক হিসাব চালু করে তার কাছ থেকে স্বাক্ষর করা চেকবই হাতিয়ে দেন প্রতারক দম্পতি।
লোভে পড়ে নিজের জমিজমা বিক্রয় করে সবুজ ও পারভীন দম্পতিকে কয়েক দফায় ৭৪ লাখ টাকা প্রদান করেন ব্যবসায়ী মামুনুর রহমান। এ ঘটনায় গত বছর ২৭ জুলাই রংপুর মহানগর কোতোয়ালি থানায় প্রতারণার বিষয়টি তুলে ধরে অর্থ আত্মসাতের মামলা করেন রংপুর নগরীর পশ্চিম বাবুখাঁ এলাকার ব্যবসায়ী মামুনুর রহমান।
শনিবার দিবাগত রাতে মমিনপুর ইউনিয়নের চৌধুরীপাড়া গ্রামে অভিযান চালিয়ে ওই দম্পতিকে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি পুলিশ। বর্তমানে মামলাটি সিআইডিতে তদন্তাধীন রয়েছে বলেও জানান তিনি।