পৌর ছাত্রলীগ সভাপতি ও তার বাহিনীর হামলা ও মারধরের শিকার হয়েছেন বেলকুচি উপজেলার ভাঙ্গাবাড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও প্যানেল চেয়ারম্যান। থানা চত্তরের পাশের সেদিনের সেই ঘটনার ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলেও পুলিশ কোন তাৎক্ষনিক ব্যবস্থা নেয়নি ও মামলা নিতে গড়িমসি করেছে বলে অভিযোগ বেলকুচি স্থানীয় সরকার প্রতিনিধি ফোরামের।
বৃহস্পতিবার (৯ জুন) সংবাদ সম্মেলন করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে প্রধান আসামি গ্রেপ্তার না হলে আগামী ১২ জুন থেকে কলম বিরতির ঘোষণা দিয়েছে বেলকুচি স্থানীয় সরকার প্রতিনিধি ফোরাম।
এর আগে ৫ জুন বিকেলে বেলকুচি উপজেলার জিধুরী মোড়ে আকস্মিকভাবে ভাঙ্গাবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও প্যানেল চেয়ারম্যানের পথরোধ করে পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি। আর এরপরই তার বাহিনীর অন্যরা আক্রমণ করে দু’জনের ওপর। সিসিটিভি ফুটেজে এ ঘটনার সত্যতা মেলে।
ভাঙ্গাবাড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জহুরুল হক ভূঁইয়া অভিযোগ করেন, গত ৫ জুন দুপুরে বেলকুচি উপজেলার আদাচাকি গ্রামে মাদক কেনা-বেচাকে কেন্দ্র করে হট্টগোল করে বেলকুচি পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি আক্তার হামিদ ও তার দলবল। মাদকের বিষয়টি জানতে পেরে স্থানীয়রা তাদের আটকও করে। তবে জন প্রতিনিধি হিসেবে ভাঙ্গাবাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান জহুরুল হক ভূঁইয়া বিষয়টি মীমাংসার জন্য উদ্যোগ নেন। কিন্তু এতে ক্ষুব্ধ হন পৌর ছাত্রলীগ সভাপতি। আর এতেই পরে একই দিন বিকেলে ক্ষুব্ধ পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি ও তার দলবল উপজেলার জিধুরী মোড়ে আকস্মিকভাবে দেশিয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে চেয়ারম্যান ও প্যানেল চেয়ারম্যানের ওপর হামলা করে গুরুতর আহত করে। আর হামলার ভিডিও ফুটেজ ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
বেলকুচির স্থানীয় সরকার প্রতিনিধি ফোরামের সভাপতি আব্দুল মজিদ বলেন, সেদিনের সেই ঘটনার ভিডিও ফুটেজ পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এলেও থানা ২ দিন পর মামলা আমলে নেয়। এই সুযোগে ঘটনার ৪ দিন পর ৭ আসামীর মধ্যে ৬ জন আদালত থেকে জামিন নিয়ে নেয়।
কিন্তু প্রধান আসামী এখনো গ্রেপ্তার না হওয়ায় জনপ্রতিনিধিরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ছাত্রলীগের নাম পরিচয় ব্যবহার করে চাঁদাবাজী আর মাদকের কারবার করছে অসাধুরা। আর তাদের বাঁচাতে একটি মহল তৎপর। এর সঠিক বিচার না পেলে আগামী রোববার থেকে সকল প্রতিনিধিরা কলম বিরতিতে অংশ নেবে।
এদিকে উপজেলা চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম সাজেদুল ও পৌর মেয়র সাজ্জাদুল হক রেজা বললেন এ ধরনের ঘটনা কোনভাবেই কাম্য না।
ছাত্রলীগের কোন নেতা কর্মীই মাদকের সাথে জড়িত নয় দাবি করে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রকি বলেন, পৌর ছাত্রলীগ সভাপতির কোন দোষ নেই। তবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ হওয়া ভিডিও বিষয়ে তিনি কোন মন্তব্য করেননি।
বেলকুচি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম মোস্তফা জানান, মামলার জন্য কাগজপত্র কম থাকায় মামলা এন্ট্রি করতে সময় লেগেছে। ইতিমধ্যে এই মামলার ৬ আসামী আদালত থেকে জামিন নিয়েছেন। অপরজনকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।