রাজশাহী

শিক্ষার্থীদের বাকি খাইয়ে নিঃস্ব হয়ে হোটেল ছাড়লেন বাবু

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীদের বাকি খাইয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন হোটেল ব্যবসায়ী মানিক হোসেন বাবু। শিক্ষার্থীদের কাছে প্রায় আড়াই লাখ টাকার বাকি পড়ে আছে তার। এ টাকা আদায় করতে না পারায় তিনি হোটেল বন্ধ করে মানবতার জীবনযাপন করছেন।

বুধবার (২১ ডিসেম্বর) তিনি তার খাবারের দোকানটি বন্ধ করে দিয়েছেন। বাবু বলেন, ‘আমার দোকানে ১৩ জন কর্মচারী রয়েছেন। তাদের দৈনিক ৪-৫ হাজার টাকা দেওয়া লাগে। ঠিকমতো কর্মচারীদের মজুরি দিতে না পারায় দোকানের ১৩ জন কর্মচারী কাজ হারিয়েছেন।

বাবুর বাড়ি বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন মেহেরচণ্ডী এলাকায়। ২০০০ সাল থেকে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে হল সংলগ্ন একটি খাবারের দোকান চালিয়ে আসছেন।

দোকান মালিক ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত ১২ নভেম্বর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কমিটি হওয়ার কথা ছিল। এ কমিটি হওয়ার আগে দলবল নিয়ে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তার হোটেলে খেয়েছেন। আর মানিককে বলা হয়েছিল কমিটি হলে তারা পুরো টাকা দিয়ে দেবেন। কিন্তু কমিটি না হওয়ায় হোটেলে ব্যবসায়ীকে কোনো টাকা দেওয়া হয়নি।


এ সময় তিনি ১৫০ জনের নাম সংবলিত একটি টালি খাতা দেখান। সেখানে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে পাওনা টাকার বিভিন্ন অঙ্ক দেখা যায়। সব মিলিয়ে শিক্ষার্থীদের কাছে বাকি টাকার পরিমাণ প্রায় দুই-আড়াই লাখ টাকার ওপরে। এতে এক নেতার কাছে সর্বোচ্চ ২৯ হাজার টাকা পাওয়ার কথাও বলেন তিনি।

শিক্ষার্থীদের এমন কর্মকাণ্ডে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম নষ্ট হচ্ছে উল্লেখ করে শহীদ জিয়াউর রহমান হলের আবাসিক শিক্ষার্থী শাহরিয়ার আজিম বলেন, ‘আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পড়ালেখা করলেও অনেকে নৈতিকতায় পিছিয়ে রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হয়ে ন্যূনতম নীতি-নৈতিকতা তাদের মধ্যে নেই। এই সকল শিক্ষার্থীদের জন্য ক্যাম্পাসের সুনাম নষ্ট হচ্ছে। এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। আর শিক্ষার্থীদের বাকি দেওয়ার বিষয়ে দোকানদারদের আরও সচেতন হওয়া উচিত।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি শাকিল হোসেন বলেন, ছাত্রলীগ করে বলেই তারা এত বাকি করেছে। সাধারণ শিক্ষার্থীরাও হয়তো বাকি করেছে তবে পরিমাণ খুবই কম।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ (রুনু) বলেন, ‘ছাত্রলীগের নাম ব্যবহার করে বাকি খাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তবে কে খেয়েছেন আর কে বাকি রেখেছেন, এটা আমার জানা নেই। এত টাকা বাকি তিনি কেন দিলেন সেটিও আমার বোধগম্য নয়। তবে ওই খাবারের দোকানের মালিক এ বিষয়ে আমাদের জানালে ছাত্রনেতা হিসেবে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে তার বাকি পড়ে যাওয়া টাকাগুলো তুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করব।

সম্পর্কিত সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker