রাজধানীতে ষষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্রীকে পড়াতেন গৃহশিক্ষক মামুন (৩১)। ছাত্রীর অজান্তে গোপন ছবি ও ভিডিও ধারণ করেন তিনি। পরে সেই ছবি ও ভিডিও দেখিয়ে জিম্মি করে তাকে কুপ্রস্তাব দেন। এতে রাজি না হওয়ায় ছাত্রীর নামে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ফেসবুক আইডি খুলে ছবিগুলো ছড়িয়ে দিতে শুরু করেন। এছাড়া ছাত্রীর গোপন ছবিগুলো তার মায়ের মেসেঞ্জারে পাঠিয়ে তাকেও কুপ্রস্তাব দেন।
এ ঘটনায় ছাত্রীর মা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে অভিযোগ করেন। পুলিশ অভিযোগ পেয়েই ওই শিক্ষককে গ্রেফতারে তৎপর হয়। শুক্রবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ এলাকায় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) অভিযান চালিয়ে মামুনকে গ্রেফতার করে। রাতে জাগো নিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিআইডির অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) আজাদ রহমান।
তিনি বলেন, সুমি (ছদ্মনাম) দশম শ্রেণির ছাত্রী। অভিযুক্ত শিক্ষক মামুন একই এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা হওয়ায় সুমিকে প্রাইভেট পড়াতেন। গৃহশিক্ষক মামুন গোপনে সুমির অজান্তে তার আপত্তিকর কিছু ছবি মোবাইলের মাধ্যমে ধারণ করে রাখেন। বিভিন্ন সময় সুমির আরও ছবি তুলে নিজ মোবাইলে সংরক্ষণ করে রাখেন। সুমি অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় ভয়ে বিষয়টি পরিবারের কাউকে জানায়নি।
সুমির অষ্টম শ্রেণির রেজাল্ট খারাপ হওয়ার কারণে তার পরিবার মামুনকে গৃহশিক্ষক হতে বাদ দেয়। এরপর থেকে অভিযুক্ত মামুন সুমির স্কুলে যাতায়াতের সময় ধারণকৃত আপত্তিকর ছবি প্রকাশ করার ভয় দেখিয়ে তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করার কুপ্রস্তাব দেন। মামুনের দেওয়া কুপ্রস্তাবে সুমি রাজি না হওয়ায় মামুন ছাত্রীর পরিবারের ছবি ব্যবহার করে তার নামে একটি ভুয়া ফেসবুক আইডি খোলেন।
সিআইডির এ কর্মকর্তা বলেন, ভুয়া ফেসবুক আইডি থেকে মামুন সুমির মায়ের মেসেঞ্জারে বার্তা পাঠিয়ে কুপ্রস্তাব দেন। সুমির মা মামুনের কুপ্রস্তাবে সাড়া না দিলে তিনি সুমির আপত্তিকর ছবি পাঠিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল করার হুমকি দিতে থাকেন। বিভিন্ন সময় অভিযুক্ত মামুন ওই ভুয়া আইডির মেসেঞ্জার থেকে সুমির মাকে বিভিন্ন ধরনের অশ্লীল ছবি ও ভিডিও পাঠাতে থাকেন। এরপর সুমির মা সিআইডিতে অভিযোগ করেন। এরপর গৃহশিক্ষক মামুনকে গ্রেফতার করা হয়।
তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলেও জানান এ অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার।