কুমিল্লা

আগ্নেয়াস্ত্র হাতে নিয়ে ঘুরছেন গ্রেপ্তারি পরোয়ানার আসামি!

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক ও শ্রীপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান শাহজালাল মজুমদারের ওপর সন্ত্রাসী হামলা চালানো হয়েছে। এতে শাহজালাল ও তাঁর গাড়িচালক আমজাদ হোসেন আহত হয়েছেন। অভিযোগ উঠেছে, অন্য মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানার আসামি মনিরুজ্জামান জুয়েলের নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে এই হামলা চালায়।

গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে উপজেলার শ্রীপুর ইউনিয়নের নালঘর বাজারে এই ঘটনা ঘটে।

এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়াধাওয়ির ঘটনাও ঘটে। শাহজালাল মজুমদারের ব্যক্তিগত গাড়ি ভাঙচুর করা হয়।

হামলার ঘটনার পর অভিযুক্ত মনিরুজ্জামান জুয়েলের হাতে এমপি-৫ মডেলের মেশিনগানসহ একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ছবিতে দেখা যায়, জুয়েল উপজেলার মিয়াবাজারে গ্রিন ভিউ রেস্টুরেন্টের সামনে একটি মেশিনগান এক হাতে নিয়ে আরেক হাতে সিগারেট টানছেন। আগ্নেয়াস্ত্র হাতে তাঁর আরেকটি ছবিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। ধারণা করা হচ্ছে ঘটনাস্থল থেকে জুয়েলের চলে যাওয়ার সময়ের ছবি এটি।

আহত যুবলীগ নেতা শাহজালাল মজুমদার বলেন, ‘দুপুরে (বৃহস্পতিবার) পাশের গোলাপনগর গ্রাম থেকে একটি সামাজিক অনুষ্ঠানের দাওয়াত খেয়ে আসার পথে চিহ্নিত ক্যাডার মনিরুজ্জামান জুয়েলের নেতৃত্বে সাত-আটজন সন্ত্রাসী আমার গাড়ির গতি রোধ করে। তাদের প্রত্যেকের হাতে অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশীয় বিভিন্ন অস্ত্র ছিল। আমার গাড়িতে আমি আর চালক আমজাদ হোসেন ছাড়া কেউ ছিল না। সন্ত্রাসীদের হামলায় আমি দৌড়ে নালঘর বাজারের পাশে সামাদ মেম্বারের বাড়িতে আশ্রয় নিই। এ সময় সন্ত্রাসীরা আমার প্রাইভেট কারটি ভাঙচুর করে। পরে স্থানীয় জনতা একত্র হলে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। ’

শাহজালালের দাবি, যুবলীগ ক্যাডার হিসেবে পরিচিত মনিরুজ্জামান জুয়েলের বিরুদ্ধে একাধিক মামলায় আদালতের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে। কিন্তু রহস্যজনক কারণে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্যরা তাঁকে গ্রেপ্তার করেন না। জুয়েল একাধিক মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামিও।

শাহজালাল বলেন, ‘হামলায় আমি ও গাড়ির চালক আমজাদ আহত হয়েছি। হামলাকারী জুয়েলের কাছে আমেরিকার তৈরি একটি এমপি-৫ মডেলের মেশিনগান রয়েছে। অত্যাধুনিক মেশিনগানটি সঙ্গে রেখেই জুয়েলের নেতৃত্বে ক্যাডার বাহিনী আমার ওপর হামলা করে। তাঁর কাছে বিপুল পরিমাণ অবৈধ অস্ত্র রয়েছে। এসব অস্ত্র উদ্ধারে পুলিশের ভূমিকা রহস্যজনক। ’

হামলার ঘটনার পর আগ্নেয়াস্ত্রের ছবিটি ফেসবুকে ভাইরাল হলে এ নিয়ে উপজেলাজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়। এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছিল।

জানা গেছে, অভিযুক্ত মনিরুজ্জামান জুয়েল নিজেকে যুবলীগের নেতা পরিচয় দিয়ে থাকেন। অস্ত্রের ছবি ও হামলা সম্পর্কে বক্তব্য জানতে তাঁর সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। তাঁর ব্যবহৃত মোবাইল ফোনও বন্ধ পাওয়া গেছে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে চৌদ্দগ্রাম থানার ওসি শুভ রঞ্জন চাকমা বলেন, ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে ঘটনাটি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তিনি বলেন, ‘মনিরুজ্জামান জুয়েলের বিরুদ্ধে আদালতের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে। আমরা তাঁকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছি। তবে সে এলাকায় থাকে না। হঠাৎ হঠাৎ এসে আবার চলে যায়। ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া তার হাতে থাকা অস্ত্রটির বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। ’

সম্পর্কিত সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এছাড়াও পরীক্ষা করুন
Close
Back to top button

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker