কুমিল্লার মনোহরগঞ্জে বাবাকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় তিন ছেলেকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। হত্যাকাণ্ডের প্রায় ১০ বছর পর আজ মঙ্গলবার দুপুরে কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ তৃতীয় আদালতের বিচার রোজিনা খান এ রায় ঘোষণা করেন। রায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত প্রত্যেক আসামিকে ২০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন মনোহরগঞ্জ উপজেলার নাথেরপেটুয়া ইউনিয়নের কান্দি গ্রামের হাজী আবদুল করিমের ছেলে ফয়েজ উল্লাহ, অহিদ উল্লাহ ও শহীদ উল্লাহ।
তবে রায় ঘোষণার সময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন না। তারা সকলেই পলাতক। কুমিল্লা আদালত পুলিশের পরিদর্শক মো. মুজিবুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৩ সালের ২৬ আগস্ট সকালে ৮৫ বছর বয়সী হাজি আবদুল করিমকে উপজেলার কান্দি গ্রামে তার বাড়ির পাশের একটি চা দোকানের সামনে রামদা-চাপাতি ও দেশি বিভিন্ন অস্ত্র দিয়ে প্রকাশ্যে কুপিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়।
সম্পত্তিসংক্রান্ত বিরোধ ও পারিবারিক কলহের জেরে এ খুনের ঘটনা ঘটে। দণ্ডপ্রাপ্তরা সকলেই হাজি আবদুল করিমের প্রথম স্ত্রীর সন্তান।
এ ঘটনায় ওই দিনই করিমের দ্বিতীয় স্ত্রী সাফিয়া বেগম মনোহরগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। প্রথম স্ত্রীর মৃত্যুর পর খুন হওয়ার প্রায় ৩০ বছর আগে মামলার বাদী সাফিয়া বেগমকে বিয়ে করেছিলেন তিনি।
এদিকে ৮৫ বছর বয়সী হাজি আবদুল করিম হত্যা মামলা থেকে পাঁচ আসামিকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে একজন মামলা বিচারাধীন থাকা অবস্থায় আদালতের ভেতরে আরেক আসামির ছুরিকাঘাতে খুন হয়েছেন। খুন হওয়া মো. ফারুক মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত অহিদ উল্লাহর ছেলে। খালাস পাওয়া বাকি চার আসামি হলেন মো. মিজান, মো. হাসান, মো. নূরুজ্জামান ও রিনা বেগম।
২০১৯ সালের ১৫ জুলাই কুমিল্লার আদালতে আবদুল করিম হত্যা মামলার সাক্ষ্য চলাকালে অব্যাহতিপ্রাপ্ত ফারুককে ছুরিকাঘাতে খুন করেন তারই আপন ফুপাতো ভাই মো: হাসান (২৫)।
করিম হত্যা মামলা থেকে খালাস পেলেও ফারুককে খুনের ঘটনায় হাসানকে আগেই মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
হাজি আবদুল করিমের দ্বিতীয় সংসারের সন্তান আবদুল মমিন বলেন, ‘আমরা চাই মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত খুনিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করা হোক। এ ছাড়া আদালতের রায় দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি জানাচ্ছি।’
কুমিল্লা আদালত পুলিশের পরিদর্শক মো: মুজিবুর রহমান বলেন, রায় ঘোষণার সময় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন না।