আরেফিন লিমন, গলাচিপা (পটুয়াখালী):
পটুয়াখালীর গলাচিপায় সত্য ঘটনা ধামাচাপা দিতে মিথ্যে মামলা দায়ের করে হয়রানি করার অভিযোগ উঠেছে।
গ্রামের শান্তিপ্রিয় নিরীহ গোলাম মোস্তফা খলিফা ও তার বড় ভাই মজিদ খলিফার পরিবারকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা । বুধবার সকালে গলাচিপায় সংবাদ কর্মীদের কাছে এ অভিযোগ করেন তারা।
গোলাম মোস্তফা খলিফা জানান, আমার ছোট ভাই, ভুমি দখলদার,লোভী ও উশৃঙ্খল এবং তার ছেলে হাসিব খলিফা ও ভাতিজা রাসেল খলিফা আমাকে ও আমার ছেলেকে, বড় ভাই মজিদ খলিফা তার ছেলে সাইদুল খলিফাকে হামলা করে মারাত্মক জখম করে ক্ষান্ত হয়নি এখন প্রাণ করতে না পেরে নানা হুমকি ও মিথ্যা মামলা দিয়ে আমাদের হয়রানি করছে। আমাদের হাত,পা ভেঙে, মাথা ফাটিয়ে তারা গুরুতর জখম করেছে আজ প্রায় এক সপ্তাহ ধরে হাসপাতালের বেডে শুয়ে যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছি আমার বড় ভাই মজিদ খলিফা ও ভাতিজা সাইদুল খলিফার অবস্থা আরো গুরুতর,এমন অবস্থায় আসামীরা আমাদের মিথ্যা মামালা দিয়ে হয়রানি করছে। তারা বিভিন্ন মাধ্যম ধরে ক্ষমতা ও অর্থ দিয়ে মিথ্যা মামলা করেছে অথচ তারা পলাতক এজাহার ভুক্ত আসামী ইতিমধ্যেই অভিযুক্ত হানিফ খলিফার ছেলে হাছিব খলিফাকে পুলিশ গ্রেফতার করে জেলা হাজতে পাঠিয়েছে, আসামীরা আমাদের নানা হুমকি দিয়ে যাচ্ছে মামলা তুলে নিতে ভয় ভীতি দেখাচ্ছে। তাদের ভয়ে এলাকায় কেউ কথা বলতে পারছে না।
তিনি আরো বলেন, পলাতক আসামি হানিফ খলিফা তার স্ত্রী কহিনুর বেগমকে বাদী করে গলাচিপা থানায় মিথ্যা মামলা করতে না পেরে ঘটনার ৬ দিন পরে পটুয়াখালী আদালতে গিয়ে আজ (৩০ জুন) মিথ্যা মামলা দায়ের করে। মামলায় আসামী করা হয়েছে আমাকে আমার বড় ছেলে নাইমুর রহমান মিরাজকে,বড় ভাই মজিদ খলিফা তার ছেলে সাইদুল খলিফাসহ আরো বেশ কয়েকজনকে। কোন রকম তদন্ত ছাড়াই মামলাটি এজাহারভুক্ত করা হয়েছে। মামলার এজহারে দেওয়া সকল তথ্য মিথ্যা ও বানোয়াট বলে দাবি করেন তিনি। যিনি বাদী হয়ে মামলা করেছে ঘটনার সময় তিনি উপস্থিত ছিলেন না এবং মামলায় যাদের আসামী ও স্বাক্ষী করা হয়েছে তাদের অনেকেই ঘটনা স্থলে উপস্থিত ছিলেন না এমনকি ঘটনার সাথে যুক্ত না এলাকায়ও ছিলেন না এমন ব্যাক্তির নাম ও এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে যা দেখেই প্রমান হয় মামলা টি মিথ্যা। আমারা আইনীভাবে এর মোকাবিলা করবো পুলিশ প্রশাসনের সহয়তা কামনা করছি।
এসময় তিনি ‘মিথ্যা মামলা’টি তদন্ত করে প্রকৃত ঘটনা খুঁজে বের করতে প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানান। অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হতে সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতিও আহ্বান জানান তারা।
উল্লেখ, গোলাম মোস্তফা খলিফা, মজিদ খলিফা ও হানিফ খলিফা ওয়ারিশ সূত্রে কলেজ পাড়া বনানী সড়কে জমি পেয়েছেন যা অনেকদিন হানিফ খলিফা জোর করে ভোগদখল করে আসছে। উক্ত জমির মালিকানা ও দখল নিয়ে তাদের ছোট ভাই হানিফ খলিফার মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। এ নিয়ে থানায় ও স্থানীয় পর্যায়ে কয়েক দফা শালিস বৈঠক হয়। ঘটনার দিন (বুধবার, ২৩ জুন) জমি সম্পূর্ন দখলে নিতে চায় নতুন ঘর নির্মান করতে চায় হানিফ খলিফা। এসময় অন্যান্য ওয়ারিশরা বাধা প্রদান করলে প্রতিবন্ধি এবং বৃদ্ধসহ পাঁচজনকে লাঠি ও রড দিয়ে আঘাত করে মারাত্মক জখম করে হানিফ খলিফা, হাছিব খলিফা,রাসেল খলিফা ও তাদের সহযোগীরা ।
ঘটনার পর আহত তিন জনকে গলাচিপা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে এবং গুরুতর আহত ২ জনের অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। এ ব্যাপারে গলাচিপায় থানায় একটা মামলা দায়ের করা হয়েছে যার মামলা নং ১৮/২১। গলাচিপা থানার ওসি শওকত আনোয়ার জানিয়েছেন, জমি নিয়ে মারামারির ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলার আসামী হাছিব খালিফা বৃহস্পতিবার সকালে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয় মানুষ দেখে আমাদের খবর দিয়েছে। আমরা তাকে গ্রেফতার করে গলাচিপা থানায় নিয়ে আসি এবং পরবর্তীতে তাকে জেল হাজতে পাঠিয়েছি। বাকি দুইজন আসামী গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।