স্বাস্থ্য

রাজধানীর ২৭ ওয়ার্ডে ডেঙ্গুর ঝুঁকি বেশি

রাজধানী ঢাকার উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) ১৩টি ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) ১৪টি ওয়ার্ড ডেঙ্গুতে অধিক ঝুঁকিপূর্ণ। এসব এলাকার ১২ ভাগ বাসা-বাড়িতেই এডিস মশার বিস্তার সবচেয়ে বেশি।

বুধবার (২১ সেপ্টেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও দুই সিটি কর্পোরেশনের করা যৌথ বর্ষাকালীন জরিপের রিপোর্ট থেকে এ তথ্য জানা গেছে। 

অধিদপ্তরের সভাকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম। 

উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) ১৩টি ওয়ার্ড হলো- ১, ১১, ১৪, ১৬, ১৯, ২০, ২১, ২৪, ২৮, ৩৩, ৩৪, ৩৫, ৩৯ এবং দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) ১৪টি ওয়ার্ড হলো- ৭, ৮, ১১, ১২, ১৩, ১৪, ২৪, ৩৪, ৩৮, ৩৯, ৪১, ৪২, ৪৮, ৫১।

অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম জানান, গত দুই বছরের তুলনায় এবছর দেশে ডেঙ্গুর প্রকোপ কিছুটা কম হলেও একেবারে কম নয়। ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনের ২৭টি ওয়ার্ড ডেঙ্গুর জন্য অধিক ঝুঁকিপূর্ণ বলে গবেষণায় উঠে এসেছে। এসব এলাকার ১২ ভাগ বাসা-বাড়িতেই এডিস মশার বিস্তার সবচেয়ে বেশি।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক সমীক্ষা তুলে ধরে বলেন, সমীক্ষা চালানো বাসাগুলোর মধ্যে দুই হাজার ৭৫৮টিতে নেগেটিভ আসলেও ৩৯২টিতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যায়। শতকরা হারে এটি ১২ দশমিক ৪৫ শতাংশ। মোট পজিটিভ আসা বাড়িগুলোর মধ্যে ৬৩টি ডিএনসিসির এবং ৯৬টি বাড়ি ডিএসসিসির।

তিনি জানান, ডিএনসিসির ৪০টি ওয়ার্ডের ৪৮টি এলাকা এবং ডিএসসিসির ৫৮টি ওয়ার্ডের ৬২টি এলাকাসহ মোট ১১০টি এলাকার তিন হাজার ১৫০টি বাড়িতে ১১ থেকে ২৩ আগস্ট এ সমীক্ষা চালানো হয়।

জরিপে দেখা গেছে, দুই সিটিতে পড়ে থাকা বা ফেলে রাখা ভেজা পাত্রে সবচেয়ে বেশি ২১ দশমিক ৬১ শতাংশ মশার লার্ভা পাওয়া গেছে। এছাড়াও ঘর বা ভবনের মেঝে প্লাস্টিকের ড্রাম বা প্লাস্টিকের নানা ধরনের পাত্রেও এই লার্ভা পাওয়া যায়। ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ২৬ শতাংশ এ ধরনের পাত্রে ও ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ২২ শতাংশ পাত্রে মশার এই লার্ভা পাওয়া গেছে।

গবেষণায় এক হাজার ৩৩৭টি ভেজা পাত্র দেখেছিলেন জরিপকারীরা। যার প্রায় ২২ শতাংশে এডিসের লার্ভা মিলেছে। মশার ঘনত্ব সবচেয়ে বেশি দেখা গেছে ৮ নম্বর ওয়ার্ড (কমলাপুর ও মতিঝিল), ৩৮ নম্বর ওয়ার্ড (নবাবপুর ও বংশাল) এবং ৪১ নম্বর ওয়ার্ডে (ওয়ারী ও নারিন্দা)।

সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব আনোয়ার হোসেন হাওলাদার বলেন, এখনো থেমে থেমে বৃষ্টিপাত হচ্ছে। নিয়মিত বৃষ্টি হলে পানি জমে থাকে, ফলে এডিস মশার জন্ম হয়। ঢাকায় প্রচুর মানুষ ডাব খেয়ে থাকে, এগুলো অনেক সময় পরিষ্কার করা হয় না। এতে এডিস মশার প্রকোপ বাড়ে।

তিনি বলেন, ‘ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ আমাদের কাজ না, আমরা সেবা দিয়ে থাকি। হয়তো সবসময় সবকিছু হয় না কিন্তু চেষ্টা করা হয়। তবে সবাইকে প্রতিরোধের কাজটা করতে হবে। এ জন্য আতঙ্কিত হওয়া যাবে না। প্রথম দিকে যদি চিহ্নিত করা যায়, তাহলে চিকিৎসা দেওয়া অনেক সহজ হয়।’

সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম বলেন, ‘কোনো মৃত্যুই আমাদের কাম্য নয়। অধিকাংশ রোগী ভর্তির প্রয়োজন না হলেও অনেকে হচ্ছেন। কিন্তু পুরো কাজের জন্য জনবল ও অর্থ লাগে। কোভিডকালীন যেসব রোগীকে আমরা সেবা দিতে পারিনি, তারা এখন বেশি আসছেন। ফলে ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসা দেওয়াটা অনেক চ্যালেঞ্জের।’


Discover more from MIssion 90 News

Subscribe to get the latest posts to your email.

সম্পর্কিত সংবাদ

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Back to top button

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker