খেজুর স্বাদেও যেমন সুস্বাদু, এর স্বাস্থ্য উপকারিতাও অনেক। তাই স্বাস্থ্য সচেতনদের কাছে খেজুর একটি সুপারফুড হিসেবে বিবেচিত। যারা প্রক্রিয়াজাত চিনি বা মিষ্টি গ্রহণে আনিচ্ছুক তাদের জন্য খেজুর একটি সেরা বিকল্প। জানা যায়, সারা বিশ্বে প্রায় ৩০০০ প্রজাতির খেজুর আছে।
রমজানে খেজুরের চাহিদা অন্যান্য সময়ের তুলনায় অনেক বেড়ে যায়। ফলে বাজারে এই চাহিদাকে পুঁজি করে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ভেজাল ও মেয়াদ উত্তীর্ণ খেজুর বিক্রি করেন। তাই খেজুর কেনার আগে তাতে কৃত্রিম মিষ্টি বা অন্য কোনো উপাদান মেশানো আছে কি না তা নিশ্চিত হয়ে নেবেন।
এজন্য জানতে হবে ভালো খেজুর চেনার উপায়। বেশ কিছু বিষয় লক্ষ্য রাখার মাধ্যমে খেজুরের মধ্যে কোনটি ভালো ও সতেজ তা সহজেই চিনতে পারবেন। চলুন তবে জেনে নেওয়া যাক কীভাবে-
ভালো মানের খেজুর চেনার বেশ কিছু উপায় রয়েছে। তবে, মূলত সাধারণ তিনটি বিষয়ের উপর বিবেচনা করে নির্বাচন করা সম্ভব ভালো কিনা।
* সতেজ ও তাজা খেজুরের চামড়া সাধারণত একটু কুঁচকানো হবে। তবে শক্ত হবে না। আবার উপরের চামড়াও বেশি নরম হবে না। উপরের চামড়া হবে চকচকে ও উজ্জল।
আবার খেজুরের গায়ে কোনোভাবেই স্ফটিকযুক্ত চিনি বা দানাদার কিছুর উপস্থিতি থাকবে না। যদি খেজুরের বাইরে তেল বা পাউডারজাতীয় কিছুর উপস্থিতি দেখেন তাহলে বুঝবেন সেটি ভেজাল, মানহীন কিংবা নিম্নমানের খেজুর।
* বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে খেজুরের উৎপাদন হয়ে থাকে। তবে সব খেজুরের মান ভালো নয়। খেজুর উৎপাদনের দিক থেকে মিশর বিশ্বে প্রথম। এরপর ইরান ও সৌদি আরবের অবস্থান তৃতীয়। চতুর্থ অবস্থানে আছে সংযুক্ত আরব আমীরাত।
এরপর উৎপাদনে শীর্ষে আছে পাকিস্তান, আলজেরিয়ায় ও আফগানিস্তান। তাই খেজুর কেনার আগে কোন দেশেরটা কিনছেন তা জেনে নিন।
* বিভিন্ন ধরনের খেজুরের মধ্যে আজুয়া, আনবারা, সাগি বা সুগায়ি, সাফাওয়ি, মুসকানি, মরিয়ম খেজুর অন্যতম। আরও আছে খালাস, ওয়াসালি, বেরহি, শালাবি, ডেইরি, মাবরুম, ওয়ান্নাহ, সেফরি, সুক্কারি, খুদরি ইত্যাদি। এদেশে আজওয়া ও মরিয়ম খেজুরের চাহিদা বেশি।
* ভালো কিংবা খারাপ বা নিম্ন মানের খেজুর কি না তা যাচাই করার আরও এক উপায় হলো খেজুরে উপস্থিত মিষ্টির মাত্রা খেয়ে দেখা। খেজুরের প্রাকৃতিকভাবে থাকা মিষ্টি হবে সহনীয় পর্যায়ের।
যারা অতিরিক্ত মিষ্টি খেতে পছন্দ করেন না তারাও খেতে পারে এমন মিষ্টি থাকে উন্নতমানের খেজুরে। মনে খেজুর খাওয়ার সময় যদি অতিরিক্ত মিষ্টি লাগে তাহলে বুঝতে হবে সেখানে কৃত্রিম কিছু দেওয়া হয়েছে।
* ভালো খেজুর চেনার আরও এক কৌশল হলো পিঁপড়া ও মাছির উপস্থিতি লক্ষ্য করা। যদি দেখেন খেজুরের সামনে মাছি ও পিঁপড়া ভিড় করছে, তার মানে সেটি ভালো খেজুর না।
কারণ প্রাকৃতিকভাবে বিদ্যমান যে মিষ্টি খেজুরে থাকে তা কোনোক্রমেই পিঁপড়াদের আকৃষ্ট করবে না। যদি না তাতে কৃত্রিম চিনি বা মিষ্টি মেশানো হয়। এটি পরীক্ষা করতে ঘরের কোনো খোলা স্থানে খেজুর রাখুন। তারপর পরীক্ষা করুন।
* খেজুর মুখে নেওয়ার পর ও খাওয়ার সময়ের মিষ্টি কম বেশি হলে বুঝতে হবে সেখানে কৃত্রিম কিছু আছে।
* প্যাকিং করা খেজুর কেনাই সবচেয়ে ভালো। এই খেজুরগুলোর প্যাকেটে সাধারণত মেয়াদ লেখা থাকে। এছাড়া খোলা খেজুর কিনতে হলে খেয়াল রাখতে হবে খেজুরে যেন পচা গন্ধ, পোকা ধরা, বেশি কালছে, বেশি শুকিয়ে যাওয়া না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
খেজুর সাধারণত দেড় বছর পর্যন্ত ভালো থাকে। তবে খেজুর ভালো রাখার সবচেয়ে সহজ উপায় হচ্ছে ফ্রিজের নরমালে রাখা। ফ্রিজের নরমাল তাপমাত্রা খেজুর ভালো রাখে।
Discover more from MIssion 90 News
Subscribe to get the latest posts to your email.