বিশ্ব

ইউক্রেনকে আরো অস্ত্র দেবে ইইউ

ইউরোপীয় ইউনিয়নের শীর্ষ সম্মেলনের শুরুতেই হাঙ্গেরি আপত্তি তুলে নেওয়ায় ইউক্রেনের জন্য দীর্ঘমেয়াদি আর্থিক সাহায্যের পথে বাধা বৃহস্পতিবার দূর হয়েছে। এবার ইউরোপীয় পার্লামেন্টের অনুমোদন পেলেই যত দ্রুত সম্ভব সে দেশকে অর্থ দেওয়া যাবে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদোমির জেলেনস্কি সেই সিদ্ধান্তের পর স্বস্তি প্রকাশ করে বলেন, এই পদক্ষেপ রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের কাছে স্পষ্ট সংকেত পাঠাচ্ছে।

রাতের ভিডিও বার্তায় জেলেনস্কি বলেন, ক্রেমলিনের যাবতীয় প্রচেষ্টা বানচাল করে ইউরোপ যে ইউক্রেনের পাশে থাকছে, তা স্পষ্ট হয়ে গেল।

অন্যদিকে আটলান্টিকের অপর প্রান্তেও একটা স্পষ্ট বার্তা চলে গেল। ইউরোপ তার নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছে। ইউক্রেন এবার যুক্তরাষ্ট্রের সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা করছে। উল্লেখ্য, মার্কিন কংগ্রেসে রাজনৈতিক জটিলতার কারণে ইউক্রেনের জন্য মার্কিন সহায়তা নিয়ে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে।

প্রায় দুই বছর ধরে রাশিয়ার একটানা হামলার মুখে অর্থনীতি ও সরকারি বাজেটের বেহাল অবস্থা সামাল দিতে ইউক্রেন বিদেশ থেকে সাহায্যের ওপর অত্যন্ত নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি সেই হামলা শুরু হওয়ার পর থেকে প্রায় সাত হাজার ৩৬০ কোটি ডলার অঙ্কের আন্তর্জাতিক আর্থিক সহায়তা পেয়েছে। এর মধ্যে ইইউ দুই হাজার ৭৫০ কোটি ইউরো দিয়েছে। চলতি বছরের বাজেট ঘাটতি মেটাতে ইউক্রেন যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রায় তিন হাজার ৭০০ কোটি ডলার অঙ্কের সহায়তার জন্য অপেক্ষা করছে।

ইউক্রেনের উপপ্রধানমন্ত্রী ইয়ুলিয়া সভিরিডেংকো সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে এই তথ্য জানিয়েছেন।

আর্থিক সহায়তার পাশাপাশি রাশিয়ার হামলার মোকাবেলা করতে অস্ত্র ও গোলাবারুদের জন্যও ইউক্রেন আন্তর্জাতিক সহায়তার ওপর নির্ভরশীল। ইদানীং সেই সরবরাহ কমে যাওয়ায় সে দেশ কঠিন সমস্যার মুখে পড়েছে। জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শোলজ ইইউ দেশগুলো থেকে আরো অস্ত্র সরবরাহের উদ্যোগ নিচ্ছেন। বৃহস্পতিবার তিনি বলেন, ইতিবাচক সাড়া পেয়ে তিনি সন্তুষ্ট।

তবে তাঁর মতে, ইউক্রেনের জন্য সামরিক সহায়তার গতি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। চলতি বছরের প্রথম দিকেই এই উপলব্ধিতে আসতে হবে যে সে দেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় প্রতিরক্ষা সহযোগিতা কতটা জরুরি। ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে সেই বার্তাই পাঠানো হচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের পরই জার্মানি ইউক্রেনকে সবচেয়ে বেশি অস্ত্র সরবরাহ করেছে। শুধু চলতি বছরেই ৭০০ কোটি ইউরোরও বেশি অঙ্কের অস্ত্র পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শোলজ মনে করেন, ইউক্রেনের জন্য ইউরোপের সামরিক সহায়তা ওয়াশিংটনের কাছেও ইতিবাচক বার্তা পৌঁছে দেবে। সে ক্ষেত্রে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের পক্ষে কংগ্রেসের সম্মতি আদায় করতে সুবিধা  হবে।

জার্মান চ্যান্সেলর ইউক্রেনের জন্য সামরিক সহায়তার ক্ষেত্রে ইইউর অন্যান্য দেশের সতর্ক মনোভাব সম্পর্কে অভিযোগ করেছিলেন। বিশেষ করে ফ্রান্স, ইতালি ও স্পেনের ভূমিকা নিয়ে তিনি অসন্তুষ্ট। এবারের ইইউ শীর্ষ সম্মেলনে সেই মনোভাবে কিছু পরিবর্তনের আশা করা হচ্ছে। ইইউ পররাষ্ট্র বিষয়ক প্রধান জোসেপ বোরেল বলেন, চলতি বছর ইউক্রেন ইইউ থেকে দুই হাজার ১০০ কোটি ইউরো মূল্যের সামরিক সহায়তার আশা করতে পারে। তাঁর মতে, এখন পর্যন্ত তিনি যেসব দেশের কাছ থেকে এই মর্মে অঙ্গীকার পেয়েছেন, তার ভিত্তিতে তিনি এমন পূর্বাভাস দিচ্ছেন। তবে কোনো কোনো দেশ এখনো এ বিষয়ে মনস্থির করেনি, সে বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করেননি।

সম্পর্কিত সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এছাড়াও পরীক্ষা করুন
Close
Back to top button

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker