তৃতীয় ধাপে অনুষ্ঠিত ইউপি নির্বাচনের সহিংসতার ঘটনায় বিজিবির ছোড়া গুলিতে ঘিটোব কেন্দ্র এলাকায় তিনজনের মৃত্যু হয়। সে থেকেই গ্রাম জুড়ে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। এর মাঝে শোক সামলে উঠার আগেই পুলিশের করা মামলার কারনে পুরুষ শূণ্য হয়ে পরেছে গ্রামটি।
সোমবার(২৯ নভেম্বর) ঘিডোব গ্রামের অজ্ঞাতনামা প্রায় ৬০০ থেকে ৭০০ জন উল্লেখ করে একটি সহিংসতার মামলা করেছে পুলিশ। পীরগঞ্জ থানায় করা এই মামলার কারনেই গ্রেফতার আতংকে পালিয়ে বেড়াচ্ছে ঘিডোব গ্রামের পুরুষেরা। এতে করে প্রায় পুরুষ শূন্য হয়ে পরেছে গ্রামটি।
মামলা হওয়ার পর সনগাঁও ইউনিয়নের ঘিডোব গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, ঘিটোব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দেয়ালে দেয়ালে গুলি বিদ্ধের ছিদ্র ও যেখানে সেখানে রক্তের চিহ্ন। যা আগের রাতের সহিংসতার পরিমাণ বর্ণনা করে দিচ্ছে। এই স্কুলটি এবার ইউপি নির্বাচনের কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছিলো। কেন্দ্রর আশেপাশের এলাকায় থমথমে নিস্তব্ধ পরিবেশ। কেউ কান্না করতে চাইলেও হয়তো শব্দের ভয়ে চেপে রেখেছে। অপরিচিত মানুষ দেখলেই ভয়ে সরে যেতে চাইছে। এছাড়াও গ্রাম ঘুরে কিছু ষাটোর্ধ বৃদ্ধ ছাড়া আর কোনো পুরুষ মানুষের দেখা পাওয়া যায়নি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নারী জানান, ঘিটোব শান্ত প্রকৃতির একটি গ্রাম ছিলো। কিন্তু ভোটের সঠিক ফলাফলের দাবি করাই আমাদের হয়তো ভুল হয়েছে। আমরা সংঘাত চাইনি। তবুও এই নির্বাচনটি আমাদের জন্যে দুঃস্বপ্নের মত এসেছে।
এই নারী জানান, পুলিশ বিজিবির গুলি বর্ষণের পরেই অনেকে গ্রাম ছেড়ে পালিয়েছে। তবে মামলা হওয়ার পর থেকে সম্পূর্ণ গ্রাম ভয়ে প্রায় পুরুষ শূন্য হয়ে গেছে। আমরা নারীরাও ভয় পাচ্ছি। আমরাও নিজেদের নিয়ে আটকের শঙ্কায় আছি। তবে বাড়ি ভিটার মায়ায় যেতে পারনি।
তিনি বলেন, আমরাই মরলাম আবার আমরাই মামলার স্বীকার হলাম। স্বজন হারানোর ব্যথা আমাদের, সাথে গ্রেফতারের ভয়ে আমাদেরকেই থাকতে হচ্ছে। আহত স্বজনের চিকিৎসার খরচ আমাদের নিম্ন আয়ে সম্ভব না। উপরন্তু পালিয়ে থাকার কারনে খাবারের জন্যে অর্থ উপার্জন বন্ধ হয়ে গেছে। এখন শান্তির জীবনের আশাও ভুলে যেতে হচ্ছে।
এই বিষয়ে পীরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, থানা পুলিশ বাদি হয়ে ৬০০/৭০০ জনের নামে অজ্ঞাতনামা মামলা করেছে। তবে এখনও কাউকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি।
Discover more from MIssion 90 News
Subscribe to get the latest posts to your email.