নওগাঁর ধামইরহাটে হাতের দুই আঙ্গুল কাটার নয় দিন পর অবশেষে মুখ খুেলছে আনারুল। বিপুল সংখ্যক মানুষ তার পার্শে দাঁড়ানোর ফলে সকল ভয়ভীতি ও আশংকা উপেক্ষা করে প্রকাশ্যে নিজের হাতের দুই আঙ্গুল কেটে দেয়ার ঘটনা প্রকাশ করেছে। প্রকৃত ঘটনা জানার পর এলাকাবাসী ও শিক্ষার্থীরা ফুঁসে ওঠেছে। বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধন কর্মসূচীর মাধ্যমে সুষ্টু বিচার দাবী করেছে বিভিন্ন সংগঠন। ঘটনার নয় দিন পর পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
গত ২১ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার সকালে বগুড়ার চকফরিদ কলোনী এলাকায় ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্রাবাসের বাথরুমে মেধাবী ছাত্র আনারুল ইসলাম (২২) কে অপরিচিত দুই জন সন্ত্রাসী অতর্কিত হামলা চালিয়ে তার ডান হাতের দুই আঙ্গুল কেটে দেয়। ভয়ভীতি ও অসহাত্বের কারণে নির্যাতিত ছাত্র আনারুল প্রথমে বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন তথ্য প্রদান করে। এক পর্যায়ে বলে সে নিজের হাত নিজে কেটেছে।
তার এ কথা কেউ বিশ্বাস করেনি। পরিবার,স্থানীয় জনপ্রতিনিধি,গণমাধ্যমকর্মী ও এলাকাবাসী তার পার্শে দাঁড়ানোর ফলে সে সাহস পেয়ে ওই দিনের প্রকৃত ঘটনা বর্ণনা করেন। আনারুল ধামইরহাট পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের চকউমর পাটারীপাড়া গ্রামের ভ্যান চালক নজরুল ইসলামের ছেলে। সে বগুড়া পলেটেকনিক ইন্সটিটিউডে ভর্তি হওয়ার জন্য বগুড়ায় গত ১১ সেপ্টেম্বর যায়। কিন্তু তার আওয়াজ মুখ থেকে বের হয়নি। তাছাড়া সন্ত্রাসীরা বাথরুমের পানির ট্যাব খুলে দিয়েছিল। এতে পানি বালতি প্রচন্ড শব্দ করে পড়ছিল। যার কারণে বাহির থেকে কেউ বাথরুমের শব্দ শুনতে পায়নি। পরবর্তীতে তার আর কিছু মনে নেই। জ্ঞান ফিরে পাওয়ায় দেখি বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালের বেডে শুয়ে রয়েছি। গত ২৬ সেপ্টেম্বর শনিবার হাসপাতাল থেকে বাড়ীতে আসি। আপেক্ষ করে সে আরও বলেন,আমারতো সব শেষ হয়ে গেল। আমার কিছুই চাওয়া পাওয়া নেই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রীর নিকট আমার আকুল আবেদন আমার সোনালী স্বপ্নগুলো যারা নষ্ট করেছে তাদেরকে খুঁেজ বের করে দৃষ্টামুলক দেয়া হয়। আমি এখন পঙ্গু মানুষ। আমাকে যেন একটা বেঁেচ থাকায় অবলম্বন করে দেয়া হয়।
মানববন্ধনে চলাকালে বক্তব্য রাখেন উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মো.সোহেল রানা,ধামইরহাট সফিয়া পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রহমান সাবু,পৌর কাউন্সিলর আলতাব হোসেন,উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আবু সুফিয়ান হোসাইন,মালয়েশিয়ার ইসলামিক সাইন্স ইউনির্ভাসিটির শিক্ষার্থী মারুফ হোসেন,শিক্ষার্থী রিয়াদ বাবু,নির্যাতিত আনারুল ও তার মা সায়রা বানু। বিষয়টি নিয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছিল।
এব্যাপারে ধামইরহাট থানার অফিসার ইনচার্জ কে,এম রাকিবুল হুদা জানান,আইনগত সহায়তা পাওয়ার সবাই অধিকার রয়েছি। ওই নির্যাতিত শিক্ষার্থীকে ঘটনাস্থলের আওতাধীন থানায় আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে পুলিশ তাকে সর্বাত্মক সহায়তা করবে।
Discover more from MIssion 90 News
Subscribe to get the latest posts to your email.