ময়মনসিংহ

ছোট বোনকে ধর্ষণ চেষ্টা, বিচার চাওয়ায় বড় বোনকে হুমকি

চতুর্থ শ্রেনিতে পড়ুয়া এক ছাত্রীকে (৯) ধর্ষণের চেষ্টা চালায় প্রতিবেশী এক প্রবাসি। এ ঘটনার বিচার চাওয়ায় ওই প্রবাসি ছাত্রীর পরিবারকে নানান হুমকি ছাড়াও দম্ভোক্তি করে বলেন,‘ছোট্টারে (ছোট) তো পারলাম না অহন (এখন) বড্ডারে (বড়) ধরবাম, এরপর ফিরাইছ (বাধা)।’ আজ সোমবার ছাত্রীর মা এমন অভিযোগ করেন। ময়ময়নসিংহের নান্দাইল উপজেলার সদর ইউনিয়নের ভাটি ছারিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।

খবর পেয়ে আজ সোমবার সকালে ওই গ্রামে গেলে জানা যায়, গত শুক্রবার বিকেলে এ ঘটনা ঘটলেও প্রবাসির হুমকি-ধামকির মুখে ছাত্রীর পরিবার ভীতসন্ত্রস্থ হয়ে আছে। বিদ্যালয়ের যাওয়ার চেষ্টা করলেও নিরাপত্তার কারণে যেতে পারছে না। উপরুন্ত আজ সোমবার সকাল থেকেই ফের অভিযুক্ত প্রবাসিসহ পরিবারের লোকজন উচ্চ-বাচ্য করতে থাকলে বাধ্য হয়ে মেয়েকে নিয়ে অভিযোগ দিতে থানার উদ্দেশ্যে রওনা হন মা। 

যৌননিপীড়নের শিকার ছাত্রী জানায়, গত শুক্রবার সকালে তাকে বাড়িতে রেখে বড় বোনকে নিয়ে মা এক  আত্মীয়ের বাড়িতে যান। এ সময় খালি বাড়ি পেয়ে পাশের বাড়ির আব্দুল মান্নানের ছেলে এনামুল (৩০) তাকে ধরে বাড়ির পিছনে গোয়াল ঘরে নিয়ে যায়। এক পর্যায়ে তাকে মুখ চেপে ধরে ধর্ষনের চেষ্টা করলে সে চিৎকার দিলে এনামুল দৌড়ে চলে যায়। 

খবর পেয়ে মা ও বোন বাড়িতে এলে ঘটনা অবহিত হয়ে রাতেই সমাজের লোকজনের কাছে বিচার চাওয়া হয়। কিন্তু গত দুই দিনেও কোনো বিচার পায়নি শিশুটির পরিবার। উপরুন্ত অভিযুক্ত এনামুল বাড়িতে এসে হুমকি দেয় বিষয়টি নিয়ে বাড়াবাড়ি করলে ব্যাপক খারাপ হবে।

শিশুটির মা জানান, গতকাল রবিবার সকালে এনামুল ও তার ভাই মজিবুর বাড়িতে এসে তাকে মারতে উদ্যত হয়। এ ঘটনার পর থেকে তিনি আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত এনামুল জানান, ওই ছাত্রীর পরিবারের সঙ্গে তাদের জমিজমা নিয়ে বিরোধ রয়েছে। কোনোভাবেই ঘায়েল করতে না পেরে মিথ্যা অপবাদ ছড়াচ্ছে। হুমকি দেওয়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বলেন,‘তারা মামলার হুমকি দিলে আমি কি করবাম? জানা যায়, এনামুল দীর্ঘদিন ওমানে থাকতেন। গত কয়েক বছর ধরে তিনি দেশেই অবস্থান করছেন। ইতোমধ্যে তিনি একাধিক বিয়ে করেছেন।

এ বিষয়ে নান্দাইল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন কাজল জানান, খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে জানতে পেরেছেন ঘটনা সত্য। বিষয়টি নিয়ে বিচারের চেষ্টা করলে অভিযুক্ত এনামুল কোনো পাত্তা দেয়নি। উপরুন্ত দম্ভোক্তি করে নানান ভাষায় কথা বলে। এর বিচার হওয়া প্রয়োজন।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে নান্দাইল থানার ওসি মিজানুর রহমান আকন্দ জানান, বিষয়টি তদন্ত করতে একজন পুলিশ কর্মকর্তাকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হবে। সত্যতা পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সম্পর্কিত সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এছাড়াও পরীক্ষা করুন
Close
Back to top button

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker