কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরে ওরশ দেখতে গিয়ে দুবৃর্ত্তদের পরিকল্পিত হামলায় রাতুল (২২) নামের এক যুবক খুন হয়েছেন। তিনি উপজেলার সিদলা ইউপির সাহেবের চর গ্রামের মৃত, রফিকুল ইসলামের একমাত্র ছেলে। ময়নাতদন্ত শেষে বুধবার (৮ ফেব্রুয়ারি) তার মৃতদেহ দাফন করা হয়েছে।
জানা যায়, গত রোববার (৫ই ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাতে সাহেবের চর হযরত ছুলু শাহ (র:) এর মাজারে ওরশ মোবারক দেখতে আসলে হাজী বাড়ির রাতুল ও রিফাতের ওপর পরিকল্পিত অর্তকিত হামলা চালায় আততায়ীরা। এতে উভয়েই গুরুতর আহত হন। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে হোসেনপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। তিনদিন চিকিৎসাধীন অবস্থায় থাকার পর অবস্থার উন্নতি না হলে ঢাকা নিয়ে যাবার পথে মঙ্গলবার বিকেলে তার মৃত্যু হয়। নিহত রাতুল গাজিপুরের একটি পোশাক কারখানায় কাজ করতেন। হোসেনপুর সরকারি কলেজের ছাত্র ছিলেন রাতুল। ১৪ ফেব্রুয়ারি সৌদি আরব যাওয়ার কথা ছিল বলে জানা যায়।
স্থানীয়রা জানান, বড় পর্দায় বিগত বিশ্বকাপ খেলা দেখতে একই গ্রামের ভাটিপাড়ার কয়েকজন যুবক হাজীবাড়ীতে যায়, এবং উশৃংখল আচরণ করে পরে স্থানীয়রা তাদের খেলা দেখতে আসতে বারণ করে এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তারা উৎপেতে থাকে।
গত রোববার (৫ ফেব্রুয়ারি) রাতে রাতুল মিয়া গাজীপুরপুর থেকে এসে রিফাতসহ কয়েকজন বন্ধু মিলে উপজেলার সাহেবেরচর গ্রামের ছুলু শাহ (র:) মাজারে মেলা দেখতে যান। সে জানতোও না তার উপর হামলা হতে পারে। কিন্তুু হায়! ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস, এ সময় পূর্বের জেরে একই গ্রামের আজিজ মিয়ার ছেলে বকুল, খোকন মিয়ার ছেলে মুন্না ও কবির হোসেনের ছেলে তালিবসহ রাতুল মিয়া ও রিফাতের উপর দেশীয় অস্ত্রসহ হামলা করে এবং নৃশংস আঘাত করে মাটিতে ফেলে চলে যায় ,পরে স্থানীয়রা আহত অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতাল ও পরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। মঙ্গলবার সকালে অবস্থার অবনতি হলে রাতুলকে ঢাকা নেওয়ার পথে তাঁর মৃত্যু হয়।
রাতুলের অকাল মৃত্যুতে স্যোসাল মিডিয়ায় খুনিদের শাস্তির দাবিতে শতশত শুভাকাঙ্ক্ষী ও সুধিজনদের পোস্ট লক্ষ্য করা যাচ্ছে। নিশ্পাপ যুবকের মৃত্যুতে সাহেবের চরসহ প্রতিবেশী এলাকাগুলিতেও শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
একমাত্র ছেলের মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন মা বিলকিছ আক্তার। কান্না জড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘আমার ছেলে বিদেশ যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিল। কিন্তু ওরা (অভিযুক্তরা) আমার ছেলেকে মেরে ফেলল।
বুধবার (৮ ই ফেব্রয়ারি) বিকাল ৩ টায় দাফন সম্পন্ন হয়। জানাজার মাঠে অসংখ্য মানুষের সমাগম হয়েছে।
দুষিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চেয়ে বক্তব্য রাখেন, রাতুলের স্বজন স্থানীয় ইউপি সদস্য কামরুজ্জামান কাঞ্চন, ফরিদ আহমেদ, নজরুল ইসলাম, সাবেক চেয়ারম্যান সিরাজ উদ্দীন, স্থানীয় চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান কাঞ্চন।
বক্তরা বলেন, অত্যন্ত নম্র, ভদ্র ছেলে ছিল রাতুল, ছোট বেলায় বাবাকে হারিয়ে লেখা পড়ার পাশাপাশি সংসারের হাল ধরে ছিলেন। খুনিদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবিও জানান তারা।
হোসেনপুর থানার ওসি আসাদুজ্জামান টিটু বলেন, যারা এ অপরাধের সাথে জড়িত তারা অবশ্যই শাস্তি পাবে, যার যার ভূমিকা অনুযায়ী, এতে কোন সন্দেহ নাই। অভিযুক্তদের ধরতে সাঁড়াশি অভিযান চালানো হয়েছে।
Discover more from MIssion 90 News
Subscribe to get the latest posts to your email.