কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরের গ্রামগুলিতে একটা সময় অনেক বেশি চোখে পড়তো কাঠঠোকরা পাখিটি। বর্তমানে উপজেলা থেকে বিলুপ্তির দিকে কাঠঠোকরা পাখি। অন্যান্য পাখির মতো কাঠঠোকরাদেরও (woodpeckers) অনন্য বৈশিষ্ট্য রয়েছে। পাখিদের বিভিন্ন অনন্য আচরনের অবশ্যই একটি কাঠঠোকরা পাখির কাঠ ঠোকরানো। আপনি কি কখনও ভেবে দেখেছেন যে কাঠঠোকরা কেন কাঠ ঠোকায়?
জানা যায়, কাঠঠোকরা পাখির কাঠ ঠোকরানোর ৬ কারণ তাদের এই অনন্য আচরণের পিছনে রয়েছে যুক্তিযুক্ত কারণ। আসলে, আচরণটি তাদের জীবনযাত্রার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
এই গ্রহের অন্য যে কোনও প্রাণীর মতো, কাঠ ঠোকরার খাবার খোঁজার নিজস্ব একটি অনন্য উপায় রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, ঈগল পাখি জলের পৃষ্ঠে আসে এবং মাছ ধরার জন্য তাদের পা পানিতে ডুবিয়ে দেয়।
তবে কাঠঠোকরার আলাদা কৌশল আছে। তারা যখন কোনও কাঠের মধ্যে লার্ভা, পিঁপড়া বা অন্য কোনও পোকামাকড় দেখতে পায়, তখন সেগুলি খাওয়ার জন্য কাঠ ঠোকরানো শুরু করে।
মজার বিষয় হল, একবার যখন তারা গাছের ছাল ভেদ করে ফেলে, তখন তারা কীটপতঙ্গগুলি ধরার জন্য আশ্চর্যজনক দীর্ঘ জিভ ব্যবহার করে।
অন্যান্য অনেক পাখির মতো কাঠঠোকরা গলার স্বর (Vocal) দিয়ে যোগাযোগ করতে পারেনা, গান গাইতেও পারেনা। কাঠ ঠোকরানোর মাধ্যমে তারা বিভিন্ন শব্দ তৈরি করে। মজার বিষয় হল, এই শব্দটি তাদের সম্ভাব্য শিকারী এবং প্রতিদ্বন্দ্বীদের ভয় দেখাতে সহায়তা করে। এছাড়াও, এই শব্দটি তাদের সাথীদের আকর্ষণ করতে সহায়তা করে।
বেশিরভাগ পাখি তাদের ভবিষ্যতের বাড়ির কাঠামো তৈরি করার জন্য ডানা এবং ঘাস সংগ্রহ করে তবে কাঠঠোকরা নয়। অন্য কথায়, কাঠঠোকরা বাসা তৈরির জন্য তাদের খোদাইয়ের দক্ষতার উপর নির্ভর করে। কাঠে ঠোঁট মেরে, তারা তাদের ভবিষ্যতের বাসা গঠনের জন্য গাছে ছিদ্র তৈরি করে।
মজার বিষয় হলো যদি কোনো কাঠঠোকরা কোন গাছে একাধিক ছোট গর্ত তৈরি করে, তার অর্থ তারা সেখানে শুধুমাত্র খাবারের জন্য ঠুকরিয়েছে। তবে, যদি দেখেন কোনও বড় গর্ত করার চেষ্টা করছে তবে এটি তাদের বাসা বাঁধার প্রচেষ্টার ইঙ্গিত।
কাঠঠোকরা পাখির মতো আর কোন পাখি নেই যারা কাঠ ঠোকরা পাখির মতো পিক (peek) করতে সক্ষম। বেশিরভাগ পাখির চেয়ে কাঠঠোকরার শক্ত ঘাড় এবং চঞ্চু থাকে, যা তাদের নিজের ক্ষতি না করেই ক্রমাগত কাঠ ঠোকরানো রাখতে সক্ষম করে।
তারা দিনে ১০,০০০ বার ঠোকরাতে সক্ষম। তাদের শক্ত ঘাড়ে এক ধরনের প্রাকৃতিক ঝাকুনি শোষণকারী থাকে যা তাদের কম্পনে ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়তা করে।
প্রতিটি প্রাণী এমনকি মানুষও নিজ নিজ জায়গা চিহ্নিত করে রাখতে পছন্দ করি। আমরা মানুষেরা সাধারণত বেড়া দিয়ে আমাদের সম্পত্তি চিহ্নিত করি।
একইভাবে কাঠ ঠোকরাদেরও নিজ এরিয়া চিহ্নিতকরনের জন্য নিজস্ব পদ্ধতি রয়েছে। কাঠঠোকরা গাছ/কাঠের উপর জোরে জোরে আঘাত করে অন্য পাখিদের জানায় যে তারা সেই অঞ্চলে উপস্থিত রয়েছে।
Discover more from MIssion 90 News
Subscribe to get the latest posts to your email.