মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের মাধবপুরের ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড লঙ্গুরপার গ্রামের সোহেল আহমেদ ঢাকায় একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। তার মা হাজেরা বিবি (৫০) বৃহস্পতিবার (২৯ জুলাই) সকাল থেকে নিখোঁজ হয়েছেন বলে জানতে পারেন তিনি। আশপাশ এলাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় খুঁজেও মায়ের সন্ধান পাওয়া যায়নি।
ফোনে মায়ের নিখোঁজ হওয়ার খবর শুনে লকডাউনে শনিবার রাতে ঢাকা থেকে সাইকেল চালিয়ে ২৩০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দেন সোহেল।
জানা যায়, কমলগঞ্জের মাধবপুর ইউনিয়নের লংগুরপার গ্রামের মানিক মিয়ার স্ত্রী ও মাধবপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি আসিদ আলীর ছোট বোন হাজেরা বিবি। বুধবার (২৮ জুলাই) বড় ভাই আসিদ আলীর বাড়ি থেকে রাতের খাবার খেয়ে হাজেরা বিবি প্রতিবেশী রকিব মিয়ার বাড়িতে রাত্রিযাপন করেন। বৃহস্পতিবার ভোরে ঘুম থেকে উঠে রকিব মিয়ার স্ত্রীকে চা বানানোর কথা বলে ঘর থেকে বেরিয়ে যান। রকিব মিয়ার স্ত্রী চা তৈরি করলেও হাজেরা বিবি আর ফিরে আসেননি। সেই থেকে তিনি এখনো নিখোঁজ রয়েছেন।
নিখোঁজ হাজেরার বড় ভাই আসিদ আলী বলেন, বোন নিখোঁজ শুনে বোনের বাড়িতে গিয়ে দেখি দরজা তালাবদ্ধ, বাইরের বাতি জ্বলছে। গোয়াল ঘরেও গাভীগুলো ডাকাডাকি করছে। তখন আশপাশ এলাকার বাড়ি-ঘরে খুঁজতে শুরু করলে প্রতিবেশী রকিব মিয়ার স্ত্রী তাকে বোন নিখোঁজের বিস্তারিত বলেন। পরে সম্ভাব্য সব আত্মীয়-স্বজনদের বাড়িতে খোঁজ নিয়েও কোনো সন্ধান না পেয়ে শুক্রবার রাতে কমলগঞ্জ থানায় সাধারণ ডায়েরি করি।
পরে শনিবার ফোনে ঘটনাটি ঢাকায় অবস্থানকারী সোহেল আহমেদকে জানাই।
সোহেল জানান, মায়ের নিখোঁজ হওয়ার খবর শুনে কঠোর লকডাউনে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় নিজেই বাইসাইকেল চালিয়ে ঢাকা থেকে রওয়ানা দিই। ১৪ ঘণ্টা পর কমলগঞ্জের লঙ্গুরপারে গ্রামের বাড়ি পৌঁছাই। শনিবার সন্ধ্যার পর রওনা দিয়ে কোথাও না থেমে সকাল ১০টার আগে বাড়ি পৌঁছে যাই।
সোহেল বাড়ি পৌঁছেই লোকজন নিয়ে রবিবার সারাদিন বাড়ির আশপাশের প্রায় ৫ কিলোমিটার এলাকার ডোবা, পুকুরসহ সব আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে খোঁজ করেও মা হাজেরা বিবির সন্ধান পাননি।
সোহেল ও তার খালাতো ভাই সেলিম মিয়া জানান, প্রায় ২০/২৫ বছর আগে একইভাবে সোহেলের বাবা মানিক মিয়াও নিখোঁজ হয়েছিলেন। তারও কোনো সন্ধান আজ পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।
কমলগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ইয়ারদৌস হাসান সাংবাদিকদের বলেন, এ ঘটনায় নিখোঁজ নারীর পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় সাধারণ ডায়রি করা হয়েছে। নিখোঁজ হওয়া নারীকে খুঁজে বের করার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।