আবহাওয়া ও জলবায়ু

৫০ বছরে দেশে আশঙ্কাজনক হারে ভূমিকম্পের প্রবণতা বেড়েছে

গত ৫০ বছরে দেশে ভূমিকম্পের প্রবণতা বেড়েছে আশঙ্কাজনক হারে। অতীতে ভূমিকম্পে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়ে বাংলাদেশ। ওইসব ঘটনায় ভূপৃষ্ঠে ফাটল, পাহাড় ও নদীপথ তৈরি, নদীর গতিপথ পরিবর্তন, সম্পদহানি, প্রাণহানিসহ মানুষের ব্যাপক ক্ষতি হয়। বাধ্য হয়ে পাকা ঘর নির্মাণে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল তৎকালীন শাসকরা।

এ অঞ্চলের ভূমিকম্পের ইতিহাস:

সৃষ্টির পর ভৌগলিক নানান পরিবর্তনে পৃথিবী। কোটি কোটি বছর ধরে ভূপৃষ্ঠের পরিবর্তনে বিলীন হয়েছে দৈত্য-দানব আকৃতির প্রাণীও।

বিজ্ঞানের ব্যাখ্যায়, পৃথিবী সৃষ্টি হয়েছে সাড়ে ৪০০ কোটি বছর আগে। আর এই গোটা পৃথিবীর ভূপৃষ্ঠ কয়েকটি স্তরে বিভক্ত। আবার প্রতিটি স্তর একাধিক টেকটনিক প্লেটে গঠিত। এসব বিশাল আকারের প্লেটগুলো নানান সময়ে পরিবর্তিত হয়ে তৈরি হয়েছে আলাদা আলাদা ভূমি। আর ঠিক এমনই ইউরেশিয়ান, ভারত ও বার্মা প্লেটের সংযোগ স্থলে তৈরি বাংলাদেশ। আর এসব প্লেটের ধাক্কায় অতীতে এ দেশে অনেকবার ভূমিকম্প হয়েছে।

ভূ-পর্যালোচকরা বলছেন, ১৮শ’ থেকে ২ হাজার বছর আগে কুমিল্লায় আসে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের একটি গোষ্ঠী। কুমিল্লার লালমাই পাহাড়ে আশ্রয় নিয়ে বৌদ্ধবিহার স্থাপন করলে ৮০০ থেকে হাজার বছর পর ভূমিকম্পে ভূপৃষ্ঠের পরিবর্তন হলে তাদের একটি অংশ পুনরায় ফিরে যায়।

১৫৪৮ সালে ভূমিকম্প সিলেট ও চট্টগ্রাম ভীষণভাবে প্রকম্পিত হয়। ভূপৃষ্ঠে ফাটলসহ কাদাপানি উদ্গীরণ হয়। আর ১৬৪২ সালেও তীব্র ভূমিকম্পে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয় সিলেট। ১৭৬২ সালে টেকনাফ মিয়ানমার চ্যুতিতে ৮ দশমিক ৫ মাত্রার ভূমিকম্পে সেন্টমার্টিন আইল্যান্ড ৬ মিটার উপরে উঠে যায়। এ ছাড়া মিয়ানমারের চিদুয়া আইল্যান্ড ৬ মিটার উপরে উঠে আসে এবং সীতাকুণ্ড পাহারে কাদাবালু উদ্গীরণ হয়।

১৭৭৫, ১৮১২, ১৮৬৫ সালে সিলেটে ভূমিকম্প অনুভূত হলেও ১৮৬৯ সালের ভূমিকম্পে বহু দালানকোঠা ও নদীর পার দেবে যায়। বলা হয়, এই ভূমিকম্পের ফাটলে পরে মারা পড়েছিল মরমী কবি ও বাউল শিল্পী হাসন রাজার হাতি। আর ১৮৯৭ সালে ৫ মিনিট ১৫ সেকেন্ডের ভূমিকম্পে বাড়িঘর ভেঙে ৫৪৫ জন মারা যান। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় ময়মনসিংহ রাজশাহীসহ ঢাকা জেলা। এ ছাড়া ১৯১৮ সালে শ্রীমঙ্গলে ৭ দশমিক ৬ মাত্রার ভূমিকম্পেও ঘরবাড়ি ও মালামালের ব্যাপক ক্ষতি হয়।

বাংলাদেশে ১৯০০ সালের পরবর্তী সময়ে প্রায় ১০০টির বেশি ভূমিকম্প রেকর্ড করা হয়েছে। তার মধ্যে প্রায় ৬৫টির বেশি ভূমিকম্প ১৯৬০ সালের পরবর্তী সময়ে রেকর্ড করা হয়। পরিসংখ্যান বলছে, বিগত ৫০ বছরে বাংলাদেশে ভূমিকম্পের ফ্রিকোয়েন্সি লাগামহীনভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।


Discover more from MIssion 90 News

Subscribe to get the latest posts to your email.

সম্পর্কিত সংবাদ

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

এছাড়াও পরীক্ষা করুন
Close
Back to top button

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker