ক্রিকেট

নিউজিল্যান্ডকে বড় টার্গেট দিলো বাংলাদেশ

মিরপুরের মন্থর উইকেটে টস জিতে ব্যাটিং নিয়ে দারুণ শুরু করে বাংলাদেশ। শুক্রবার (৩ সেপ্টেম্বর) ব্যাট হাতে দুই ওপেনার লিটন ও নাঈমে ভর করে অবিচ্ছিন্ন ৫৯ রানের জুটিই পথ দেখায় টাইগার বাহিনীকে। বাংলাদেশের ইনিংস থামে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেটের বিনিময়ে ১৪১ রানে। নিউজিল্যান্ডকে জিততে হলে করতে হবে ১৪২ রান

মিরপুরের শের-ই-বাংলায় গত কিছুদিনের যে রেকর্ড, তাতে বাংলাদেশের এই স্কোরকেই যথেষ্ট নিরাপদ মনে হচ্ছে।

নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে সাবধানী শুরু পায় বাংলাদেশ। ধারাবাহিকভাবে ব্যর্থ টাইগার দুই ওপেনার নাঈম ও লিটন দাস শুরু থেকেই দারুণ ছন্দে ছিলেন।

ইনিংসের প্রথম ওভারে বাঁ-হাতি স্পিনার এজাজ প্যাটেলকে দিয়ে আক্রমণ শুরু করে নিউজিল্যান্ড। প্রথম বলেই তাকে মিডউইকেটে তুলে মেরে লক্ষ্যটা বুঝিয়ে দেন ওপেনার মোহাম্মদ নাঈম। প্রথম ওভার শেষে বাংলাদেশের রান দাঁড়ায় ৩। স্পিনার ম্যাকনকির বলে তুলে মারতে গিয়ে ক্যাচ দেন লিটন দাস। স্কয়ার লেগে ক্যাচ ছাড়েন গ্র্যান্ডহোম। পরের বলেই উঠেছে এলবিডব্লুর আবেদন। ২ ওভার শেষে রান দাঁড়ায় ৬। এ যেন ধীরে চলো নীতিরই বাস্তবায়ন।

তবে তৃতীয় ওভারে কিছুটা মারমুখি ছিলেন লিটন দাস। এজাজ প্যাটেলকে টানা দুই চার মারেন বাঁ-হাতি এই ওপেনার। প্রথম তিন ওভার স্পিনার দিয়ে করিয়ে যখন ফায়দা তোলা যাচ্ছিল না, ঠিক তখনি পেসারে ভরসা রাখেন কিউই কাপ্তান টম লাথাম। এ ম্যাচে দলে জায়গা পাওয়া হ্যামিশ বেনেট নিজের প্রথম ওভারেই স্লোয়ার মেরে ব্যাটসম্যানকে বোকা বানানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু সফল হননি। একটি চারসহ ৬ রান দেন।

বেনেটের পর আরেকপ্রান্তে আক্রমণে আসেন ডগ ব্রেসওয়েলও। পঞ্চম ওভারে বল করতে এসে তিনিও ৬ রান দেন। পাওয়ার প্লের প্রথম ৬ ওভার শেষে বাংলাদেশ বিনা উইকেটে ৩৬ রান তুলেছে।

মিরপুরের মন্থর উইকেটে যেখানে টিকে থাকাই দায়, সেখানে ৯ দশমিক ২ ওভার পর্যন্ত অবিচ্ছিন্নই ছিলেন দুই ওপেনার। পরে অবশ্য রাচিন রবিন্দ্রর বলে আউট হয়ে যান লিটন। তার আগে ব্যাট হাতে ২৯ বলে করেন ৩৩ রান। বাংলাদেশের প্রথম উইকেটের পতন ঘটে দলীয় ৫৯ রানে।

প্রথম ৯.২ ওভারে নেই কোনো উইকেট, এরপরের দুই বলে নেই দুই উইকেট! মুখোমুখি হওয়া প্রথম বলেই স্টাম্পড হয়েছেন মুশফিকুর রহিম। রবীন্দ্রর ঝুলিয়ে দেওয়া বলে খেলতে গিয়ে মিস করেছেন মুশফিক, তবে ক্রিজে পা ফেরাতে পারেননি। টম লাথাম ভেঙেছেন স্টাম্প, বাংলাদেশ হারিয়েছে দ্বিতীয় উইকেট।

লিটন-মুশফিকের আউট হওয়ার পরের ওভারেই কাটা পড়েন সাকিবও। ১১তম ওভারে ম্যাককঞ্চিকে দুটি চার মারলেও শেষ বলে তাকে তুলে মারতে গিয়ে আউট হন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। ৭ বলে ১২ রান করে বেশি তাড়াহুড়ো করতেই গিয়েই কাটা পড়লেন তিনি।

প্রথম ম্যাচে পুরোপুরি ব্যর্থ হলেও আজ যেন ছন্দটা খুঁজে পেয়েছেন নাঈম। শুরু থেকেই প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ক্রিকেট খেলে দলকে এগিয়ে নেন। ১২ তম ওভারে সিয়ার্সের শেষ দুই বলে দুই চার হাঁকান নাঈম। ১২ ওভার শেষে বাংলাদেশের স্কোর দাঁড়ায় ৩ উইকেটে ৮৩ রান। প্রথম চারে ভাগ্যের স্পর্শ পেলেও দ্বিতীয় চারটা সুন্দর শট দিয়েই পেয়েছেন।

টানা দুই চার মেরে দলকে এক শ পার করালেন টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তবে এরপরই আবারো রবীন্দ্রর আঘাত। আজকের দিনটা যেন এই তরুণতুর্কিরই। লিটন-মুশফিকের পর ফেরালেন নাঈমকেও। ৩৯ বলে ৩৯ রান করেছেন নাঈম। অনেক পরিশ্রমী ইনিংসে তিনটি চার ছিল তার। লং অনে ব্লান্ডেলের হাতে ধরা পড়েছেন চতুর্থ বাউন্ডারির আশায়।

১৬ ওভার শেষে ৪ উইকেটে ১০৭ রান করেছে বাংলাদেশ। নাঈমের পর ক্রিজে আসা আফিফের ইনিংস টিকল মাত্র ৩ বল। তিন বল থেকে তিন রান করে এজাজ প্যাটেলকে প্রথম উইকেটের স্বাদ দিলেন এই বাঁ-হাতি। ১৭ তম ওভারে এসে আউট হতে হতেও শেষ পর্যন্ত বেঁচে গেছেন সোহান।

১৯ তম ওভারে ব্রেসওয়েলের প্রথম বলে চারের পর দ্বিতীয় বলে ছক্কা হাঁকান মাহমুদউল্লাহ। আজ ভাগ্য যেন কোনো ভাবেই সঙ্গে ছিল না কিউইদের। বেশ কয়েকটি উইকেট পাওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হলেও কাজে লাগেনি। বরং বাউন্ডারি ছাড়া হয়েছে।

ইনিংসের শেষ বলে বাউন্ডারির আশায় তুলে মেরেছিলেন নুরুল। অনেক দূর দৌড়ে এসে দুর্দান্ত এক ক্যাচ ধরেছেন উইল ইয়ং। বাংলাদেশ থামে ১৪১ রানে। শেষ বলে আউট হওয়া সোহান ৯ বল খেলে করেছেন ১৩ রান। অন্যদিকে, অপরাজিত থাকা দলীয় কাপ্তান মাহমুদউল্লাহ ৩২ বলে ৩৭ রান করেছেন। ইনিংসে এটিই ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ।


Discover more from MIssion 90 News

Subscribe to get the latest posts to your email.

সম্পর্কিত সংবাদ

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Back to top button

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker