জাতীয়

বঙ্গবন্ধুর খুনিদের পৃষ্ঠপোষকতাকারী বিএনপির বিচার করতে হবে : বাহাউদ্দিন নাছিম

বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা, পরবর্তী সময়ে হত্যায় জড়িতদের পৃষ্ঠপোষকতা ও রাজনীতিতে পুনর্বাসন করার দায়ে বিএনপির বিচার দাবি করে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেছেন, বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিল জিয়াউর রহমান। তিনিই পরবর্তী সময়ে খুনি ও স্বাধীনতাবিরোধীদের রাজনৈতিকভাবে লালন-পালন করতে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন বিএনপি নামক রাজনৈতিক সংগঠন। দেশের ইতিহাসের এই কলঙ্কজনক অধ্যায় মুছতে বিএনপির বিচার করতে হবে।

বৃহস্পতিবার (১২ আগস্ট) ধোলাইখালের ক্রস রোডে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের উদ্যোগে অসহায়-দুস্থ মানুষের মাঝে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া।

আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম বলেন, জিয়াউর রহমান খুনিদের পৃষ্ঠপোষকতা করেছিল, তাদেরকে প্ররোচিত করেছিল। বঙ্গবন্ধুর খুনিরা পরবর্তী সময়ে দেশি-বিদেশি সংবাদমাধ্যমে ঘোষণা দিয়ে বলেছিল ‘আমরা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছি, আমাদের বিচার করার ক্ষমতা কারো নাই। আমাদের সঙ্গে জিয়াউর রহমান আছে।’ তিনি আমাদের ইনডেমনিটি দিয়েছেন। জিয়াউর রহমান ‘৭৫-এর খুনিদের দেশে-বিদেশে চাকরি দিয়ে, ব্যবসা-বাণিজ্য দিয়ে পুরস্কৃত করেছিল, রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা দিয়েছিল। তারা ফুলেফেঁপে একটি বিশাল দানবের রূপ লাভ করেছিল। আজকে আমাদের সেই কথা ভুলে গেলে চলবে না। জিয়াউর রহমান, ক্যান্টনমেন্টের ছাউনিতে বসে বিএনপি নামক রাজনৈতিক দলের নামে আদর্শ-নীতিহীন, খুনিদের নিয়ে দল গঠন করেছিল। খালেদা জিয়াও ‘৭৫-এর খুনিদের রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠিত করেছে। খুনি ফারুক-রশিদ চক্রকে নির্বাচন করার সুযোগ দিয়েছে। খুনিদের পৃষ্ঠপোষকতা করেছিল খালেদা জিয়া ও জিয়াউর রহমানের বিএনপি।

বিএনপি সরকার বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারী ও স্বাধীনতাবিরোধীদের এমপি-মন্ত্রী বানিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার দল বিএনপি স্বাধীনতাবিরোধীদের রাজনৈতিক আশ্রয় দিয়ে তাদেরকে এমপি বানিয়েছে, মন্ত্রী পদমর্যাদা দিয়েছে। স্বাধীনতাবিরোধীদের গাড়িতে দেশের সম্মান পতাকা তুলে দিয়েছে। এই পতাকা অর্জনে আমাদের লাখ লাখ মানুষ শহীদ হয়েছে, অসংখ্য বীরাঙ্গনা হয়েছে।

তিনি বলেন, একাত্তরেও যেমন ঘাতক দালাল ছিল বর্তমানেও তারা আছে। ‘৭১-এর যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করেছে জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা। জামায়াত মানুষ হত্যাকারী, যুদ্ধাপরাধী। তারা বাংলাদেশবিরোধী শক্তি। যুদ্ধাপরাধের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার কারণে জামায়াতের রাজনীতি আজকে নিষিদ্ধ হয়েছে। ঠিক একইভাবে ‘৭৫-এর খুনিদের পৃষ্ঠপোষকতা, রক্ষা, রাজনীতিতে পুনর্বাসন করার দায়ে, পুরস্কৃত করার অপরাধে বিএনপিকেও বিচার করে রাজনীতি থেকে নিষিদ্ধ করতে হবে। খুনিদের আশ্রয়দাতা, স্বাধীনতাবিরোধীসহ সব দেশ বিরোধীশক্তিকে দল-মত-নির্বিশেষে রুখে দিতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।

বিএনপি নামক দলটি করোনার এই সময়ও ইসলামী সংগঠনের নামে, ধর্মীয় উত্তেজনা ছড়িয়ে বাংলাদেশে অরাজকতা, অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চায়। এরা যুদ্ধাপরাধীদের প্রশ্রয় দিয়েছে, বঙ্গবন্ধুর খুনিদের প্রশ্রয় দিয়েছে। এরা এখনো জঙ্গিদের প্রশ্রয় দেয়। জঙ্গিদের দিয়ে সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করতে চেয়েছিল। সিরিজ বোমার কাণ্ড ঘটিয়ে বোমাবাজের দেশে পরিণত করেছিল। তারা ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা করেছিল। এই অপরাধীরা এখনো বাংলাদেশবিরোধী অপরাধের সঙ্গে জড়িত।

তিনি বলেন, বাঙালি, অবাঙালি, চাকমা, মারমা, পাহাড়ি নৃগোষ্ঠী- সবাই মিলে একটি সোনার বাংলা গঠনের স্বপ্ন দেখেছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারকে হত্যার মাধ্যমে তার স্বপ্নকে খুনিরা মুছে দিতে চেয়েছে। সেসব খুনিদের নেতৃত্ব দিয়েছিল জিয়া। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর তারাই দেশের ক্ষমতা দখল করে দেশের স্বাধীনতাকে হত্যা করতে চেয়েছিল। কিন্তু তারা সফল হয়নি।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড বাংলার ইতিহাসে একটি ন্যক্কারজনক ঘটনা। ভাগ্যক্রমে বেঁচে গিয়েছিলেন শেখ হাসিনা, তিনি আছেন বলেই আমরা এই বৈশ্বিক করোনাভাইরাসকে মোকাবেলা করতে পারছি।মাননীয় প্রাধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, করোনা ভাইরাসের ভ্যাক্সিন দেশের মানুষকে দিতে যত টাকা প্রয়োজন হোক তা বাংলাদেশের মানুষকে দেওয়া হবে। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফির সভাপতিত্বে এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক এফ এম শরিফুল ইসলামের আয়োজনে ও সঞ্চালনায় ত্রাণ বিতরণ অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ ২ আসনের সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম বাবু, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সাজেদা বেগম, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক শেখ মোহাম্মদ আজহার, দপ্তর সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ প্রমুখ, প্রচার সম্পাদক চৌধুরী সাইফুন নবী সাগর, সাংস্কৃতিক সম্পাদক আব্দুল মতিন ভূইয়া, সদস্য মহায়মেন বয়ান, সিরাজুম মনি টিপ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি কামরুল হাসান রিপনসহ থানা ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের নেতারা।

সম্পর্কিত সংবাদ

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

এছাড়াও পরীক্ষা করুন
Close
Back to top button

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker