ভয়াবহ হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় পড়ার পরও সৌভাগ্যক্রমে বেঁচে গিয়েছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। তিনি নিজেই সেই কথা গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন।
শনিবার রাজধানীর হোটেল লেকশোরে ন্যাশনাল পলিসি ডায়ালগে অংশ নিয়ে সেই দুর্ঘটনার এই স্মৃতিচারণ করেন তিনি।
মন্ত্রী জানান, ১৯৬৬ সালে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় পড়েন তিনি। যাতে চালকসহ ২৪ জন ছিলেন। এর মধ্যে ২৩ জনই মারা যান।
মান্নান বলেন, দুর্ঘটনায় একমাত্র আমি বেঁচে ছিলাম। আমি তখন শুধু আল্লাহকে ডাকছিলাম আর মায়ের কথা ভাবছিলাম।
সেই দিনটির কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, সেদিন ছিল বুধবার, ১৯৬৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের দুই তারিখ। আমেরিকার সাহায্য সংস্থা কেয়ারের ঢাকা অফিসে চাকরি করতাম তখন।
আমাকে ফরিদপুর ও কুষ্টিয়া পাঠানো হলো। পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্স তখন কিছু হেলিকপ্টার সার্ভিস চালু করেছিল, যা কিছু অঞ্চলে যাত্রী পরিবহন করত।
দুপুর দুই নাগাদ কুষ্টিয়ার উদ্দেশ্যে যাওয়ার জন্য হেলিকপ্টারে উঠি। ওই হেলিকপ্টারটিতে সব মিলিয়ে ২৪ জন ছিলো।
হেলিকপ্টারটি ঢাকা থেকে প্রথমে ফরিদপুর হয়ে পরে কুষ্টিয়া যাওয়ার কথা ছিল। ফরিদপুরের কাছাকাছি যখন হেলিকপ্টারটি পৌঁছায় তখন ওপর থেকে বিকট শব্দ শোনা যাচ্ছিল।
মুহূর্তের মধ্যেই হেলিকপ্টারটি ঘুরতে-ঘুরতে মাটিতে পড়ে যায়। আমি তখন শুধু আল্লাহকে ডাকছিলাম আর মায়ের কথা ভাবছিলাম।
মাটিতে পড়ার পর ওই হেলিকপ্টারের মধ্যে প্রচণ্ড ধোঁয়ার সৃষ্টি হয়। প্রাণপণ চেষ্টায় বেঁচে আছি। এই জীবনে চাওয়া-পাওয়ার কিছু নেই। মানুষের জন্য কাজ করতে চাই, বলেন মন্ত্রী।
এ সময় তিনি আরও বলেন, আমি গ্রামের ছেলে, নিম্ন আয়ের পরিবার থেকে উঠে এসেছি। জীবনের তাগিদে ব্যবসা করেছি, চাকরি করেছি।
পরে মানুষ সেবার তাগিদে রাজনীতিতে যোগ দেন। একদম অপরিচিত হয়েও মানুষের কাছে গিয়ে ভোট চেয়ে তিনবার বিজয়ী হয়েছেন বলেও জানান তিনি।
নিজেকে হাওয়া এলাকার সন্তান হিসাবে উল্লেখ করে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, গ্রামের মানুষের কষ্টের কথা বুঝি, হাওরের সন্তান হিসেবে এই অঞ্চলের মানুষের কষ্ট আমাকে পীড়া দেয়।