জাতীয়

ডলারের একক দাম নির্ধারণ করে দিলো বাংলাদেশ ব্যাংক

ডলারের একক দাম বেধেঁ দিলো বাংলাদেশ ব্যাংক। এখন থেকে আমদানি ব্যয় পরিশোধে ডলারের সর্বোচ্চ এ হার ৮৯ টাকা টাকা ১৫ পয়সা, আর আন্তঃব্যাংক লেনদেনে সর্বোচ্চ ৮৯ টাকায়। রোববার (২৯ মে) ব্যাংকগুলোর ট্রেজারী বিভাগকে এ হার বাস্তবায়নের নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি বলছে, এরপরও কোন ব্যাংক দর বাড়াতে অসম প্রতিযোগীতা করছে কিনা তাও নজরদারিতে রাখা হবে। এতে করে হুন্ডি বন্ধ হয়ে ব্যাংকিং চ্যানেলে প্রবাসী আয় আরোও বেড়ে যাওয়ার সম্ভব বলে জানালেন ব্যাংকাররা।

ডলারের একক দাম বেধেঁ দিলো বাংলাদেশ ব্যাংক। এখন থেকে আমদানি ব্যয় পরিশোধে ডলারের সর্বোচ্চ এ হার ৮৯ টাকা টাকা ১৫ পয়সা, আর আন্তঃব্যাংক লেনদেনে সর্বোচ্চ ৮৯ টাকায়। রোববার (২৯ মে) ব্যাংকগুলোর ট্রেজারী বিভাগকে এ হার বাস্তবায়নের নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি বলছে, এরপরও কোন ব্যাংক দর বাড়াতে অসম প্রতিযোগীতা করছে কিনা তাও নজরদারিতে রাখা হবে। এতে করে হুন্ডি বন্ধ হয়ে ব্যাংকিং চ্যানেলে প্রবাসী আয় আরোও বেড়ে যাওয়ার সম্ভব বলে জানালেন ব্যাংকাররা।

এর আগে আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে প্রতি ডলারে ৮৭ টাকা ৯০ পয়সা বেঁধে দিয়েছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। কিন্তু এই রেট মানছে না বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো। যার যার মতো ডলারে ‘যেমন খুশি’ দাম নিচ্ছে ব্যাংক। এতে করে বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে ডলার মার্কেটের অস্থিরতা কাটাতে দেশের সব এক্সচেঞ্জ হাউজে এক রেটে ডলার বিক্রি হবে। যার নির্ধারণ করবে এবিবি ও বাফেদা। আর বিষয়টি পর্যালোচনা করবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

বৃহস্পতিবার (২৬ মে) বিকেলে বাংলাদেশ ব্যাংক, বাংলাদেশ ফরেইন এক্সচেঞ্জ ডিলারস অ্যাসোসিয়েশন (বাফেদা) এবং ব্যাংকের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকারস, বাংলাদেশ (এবিবি) এর কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যদের সঙ্গে ত্রিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবিরের সভাপতিত্বে বাফেদার চেয়ারম্যান ও সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আতাউর রহমান প্রধান, এবিবির চেয়ারম্যান সেলিম আরএফ হোসেন, অগ্রণী ব্যাংকের এমডি শামস-উল ইসলাম, ইসলামী ব্যাংকের এমডি মনিরুল মাওলা ও মধুমতি ব্যাংকের এমডি মো. সফিউল আজমসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

সভা শেষে মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রয়োজনীয়তার নিরিখে লিকুইডিটি (ডলার বিক্রি) সাপোর্ট দেওয়া অব্যাহত রাখবে। রপ্তানিকারকের ব্যাংকের মাধ্যমে রপ্তানিমূল্য ডিসকাউন্টটিংসহ রপ্তানি মূল্য ওই ব্যাংকেই বিক্রি করতে হবে। বাফেদা এবং এবিবি একত্রে এক্সচেঞ্জ হাউজের জন্য ইউনিফর্ম এক্সচেঞ্জ রেট (এক রেট) নির্ধারণ কাজ করবে। যা দেশের সব এডি ব্যাংক মেনে চলবে।

এর আগে ডলারের বাজারে অস্থিরতা নিরসনে গত ১৯ মে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলারস অ্যাসোসিয়েশন (বাফেদা) এক চিঠি দেয়। চিঠিতে বাংলাদেশ ব্যাংকে সুনির্দিষ্ট কিছু প্রস্তাব দেয় বাফেদা। সংগঠনটির প্রস্তাবে মধ্যে অন্যতম হলো- বৈধভাবে পাঠানো রেমিট্যান্সের প্রণোদনা আড়াই শতাংশ থেকে বাড়িয়ে পাঁচ শতাংশ করা, বাজারের চাহিদা বিবেচনা করে ডলার সরবরাহ করা, বাজারের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে ডলার ক্রয়-বিক্রয়ে আন্ত-ব্যাংক বিনিময় হার পুনঃনির্ধারণ করা। আর সব অনুমোদিত ডিলার (এডি) ব্যাংক বিদেশি এক্সচেঞ্জ হাউজগুলো থেকে ‘একক বিনিময় হারে’ লেনদেন করবে এবং সেই হার আন্ত-ব্যাংকের মধ্যে লেনদেনর থেকে কমপক্ষে শূন্য দশমিক এক শতাংশের কম হবে। এই একক বিনিময় হার কঠোরভাবে তদারকি করবে বাংলাদেশ ব্যাংক। বাফেদার এসব প্রস্তাবের প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ ব্যাংক ও বাফেদার মধ্যে আজ বৈঠক হয়।

চিঠিতে বাফেদার প্রস্তাবে আরও বলা হয়, এডি ব্যাংকগুলো রপ্তানির ক্ষেত্রে নিয়ম অনুযায়ী কর্তনমূল্যের সুযোগ নিশ্চিত এবং রপ্তানির কাগজপত্র যাচাই করবে। এছাড়া একমাত্র বাংলাদেশ ব্যাংক আমদানির এলসি বিল ও সরকারি বাধ্যতামূলক পাওনা পরিশোধে বৈদেশিক মুদ্রার বাড়তি চাহিদার তারল্য সরবরাহ করবে। আর রাষ্ট্রয়াত্ব এডি ব্যাংকগুলো নিজস্ব উৎস থেকে কেবল সরকারের বাণিজ্য ও বাধ্যতামূলক পাওনা বড়জোর তিন মাসের জন্য পরিশোধ করবে। তবে এসব ব্যাংক সরকারের আন্তঃব্যাংক বাজার পদ্ধতিতে বৈদেশিক মুদ্রার উৎস হিসেবে ব্যবহার হবে না।

বাফেদার এক সদস্য জানান, দেশে এখন আমদানির জন্য যে পরিমাণ অর্থ বা ডলার খরচ হচ্ছে, তা রপ্তানি ও প্রবাসী আয় দিয়ে তা মিটছে না। এর ফলে সংকট তৈরি হয়েছে। এজন্য বাজারে ডলারের সংকট দেখা দিচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংক যে পরিমাণ ডলার বিক্রি করছে, সেটি চাহিদার তুলনায় পর্যাপ্ত নয়। ফলে প্রতি মাসে প্রায় ১০০ কোটি ডলার ঘাটতি তৈরি হয়েছে।

বর্তমানে খোলাবাজারে ডলারের দামের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা কিছুটা কমে এসেছে। রাজধানীতে আজ প্রতি ডলার ৯৭-৯৮ টাকায় বেচাকেনা হয়েছে। আর বাংলাদেশ ব্যাংক ৮৮ টাকা ৯০ পয়সা দরে ডলার বিক্রি করছে।

সম্পর্কিত সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker