মাথায় চুল না থাকায় পুরুষদের টাক নিয়ে রসিকতা করা যৌনহয়রানির সামিল বলে রায় দিয়েছেন যুক্তরাজ্যের একটি আদালত। নারীদের চেয়ে পুরুষদের মাথায় চুল না থাকার সমস্যা বেশি থাকায়, এ নিয়ে মন্তব্য করার মধ্যে লিঙ্গবৈষম্য রয়েছে বলে জানানো হয়েছে এ রায়ে। এমনকি, পুরুষদের টাক নিয়ে মন্তব্য করা আর নারীদের স্তন সম্পর্কে কথা বলা সমান বলে রায় দিয়েছেন আদালত। শুক্রবার এ খবর জানা গেছে দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে।
সম্প্রতি টনি ফিন নামে এক প্রবীণ ইলেকট্রিশিয়ান ও তার সাবেক কর্মস্থলের মধ্যকার চলমান মামলায় এ রায় দিয়েছেন যুক্তরাজ্যের কর্মচারী নিয়োগ ট্রাইব্যুনাল।
জানা যায়, পশ্চিম ইয়র্কশায়ারের ব্রিটিশ বুং কোম্পানিতে দীর্ঘ ২৪ বছর কাজ করেছেন টনি। ২০২১ সালের মে মাসে তাকে ছাঁটাই করা হয়। এরপর আদালতে মামলা করেন তিনি। মামলায় অন্যান্য অভিযোগের সঙ্গে টনি দাবি করেন, সাবেক কর্মস্থলে যৌনহয়রানিরও শিকার হয়েছেন তিনি।
টনি ফিনের অভিযোগ, ২০১৯ সালে কর্মক্ষেত্রে তকাতর্কির সময় তাকে একাধিকবার ‘টেকো’ বলে ডেকেছিলেন ওই কারখানার সুপারভাইজার জেমি কিং। এতে অপমানিত বোধ করেন টনি এবং পরে আদালতের দ্বারস্থ হন।
সম্প্রতি ট্রাইব্যুনালের তিন সদস্যের প্যানেলে ওই মামলার শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। এসময় বিচারকরা বলেন, টনি ফিনের মর্যাদা লঙ্ঘন এবং তার জন্য একটি ভীতিকর, প্রতিকূল, অপমানজনক বা আপত্তিকর পরিবেশ তৈরির উদ্দেশ্যে ওই শব্দগুলো উচ্চারণ করেছিলেন জেমি কিং। তিনি স্বীকার করেছেন, তার উদ্দেশ্য ছিল টনিকে হুমকি দেওয়া ও তাকে অপমান করা। আমাদের বিচারে ‘টেকো’ শব্দের সঙ্গে লিঙ্গবৈশিষ্ট্যের সম্পর্ক রয়েছে।
বিচারকরা বলেন, কোম্পানির আইনজীবী ঠিক বলেছেন যে, নারীরাও টাক হতে পারেন। তবে ট্রাইব্যুনালের তিন সদস্যই মনে করেন, নারীদের তুলনায় পুরুষদের মধ্যে টাক পড়ার হার অনেক বেশি। তাই আমরা মনে করি, এটি লিঙ্গবৈশিষ্ট্যের সঙ্গে সম্পর্কিত।
এসময় নারীর স্তনের আকার নিয়ে মন্তব্যের মাধ্যমে যৌন হয়রানির অভিযোগ ওঠা আগের একটি মামলার প্রসঙ্গও টেনে আনেন বিচারকরা। তাদের মতে, পুরুষদের টাক সমস্যা আর নারীদের স্তনের আকার নিয়ে কটূক্তি করা একই ধরনের অপরাধ।
শুনানিতে টনিকে ‘টেকো’ ডাকায় জেমি কিংকে দোষী সাব্যস্ত করা হলেও তার সাজা ঘোষণা হয়নি। এ বিষয়ে পরে সিদ্ধান্ত হবে।
Discover more from MIssion 90 News
Subscribe to get the latest posts to your email.