মাহফুজ হাসান, কিশোরগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি:
সেলুনে চুল, দাড়ি কামাতে গিয়ে দেখলেন সামনে সাজিয়ে রাখা একটি সেলফে থরেথরে বই। নরসুন্দর আপনার আগে আসা লোকটিকে যখন নিয়ে ব্যস্ত, সময়টা কাজে লাগাতে সেলফ থেকে পছন্দের বইটি নিয়ে পড়া শুরু করলেন। সেলুনেই হয়ে গেল সাহিত্যচর্চা বা নানা বিষয়ে জ্ঞান লাভ। ব্যাপারটি স্বপ্ন নয়, এমনটিই দেখা গেল কিশোরগঞ্জের কটিয়াদি উপজেলায়। সেলুনে লাইব্রেরি স্থাপন করলেন ফজলে রাব্বী নামে এক তরুণ।
উপজেলার মসূয়া বাজারের ভাই ভাই হেয়ার কাটিং সেলুনে এ লাইব্রেরি আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু। ফজলে রাব্বী একই এলাকার অধ্যাপক মাওলানা এখলাস উদ্দিনের ছেলে। তিনি ইসলামিক ইউনিভার্সিটির অধীনে ঢাকার তামীরুল মিল্লাত কামিল মাদরাসায় অনার্সে অধ্যয়নরত।
বিরল প্রতিভাধর অস্কার বিজয়ী সত্যজিৎ রায়ের পৈত্রিক গ্রামে মানুষের পাঠ্যাভ্যাস ও জ্ঞানার্জনে চালু হয়েছে ‘সেলুন লাইব্রেরি’। ব্যতিক্রমী এই উদ্যোগের জন্য প্রশংসায় ভাসছেন বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া তরুণ ফজলে রাব্বী।
এ বিষয়ে ফজলে রাব্বী মিশন নাইনটিকে জানান, বই জ্ঞান-মননের পরিধি বাড়ায়। তাই আমি সেলুনে চুল কাটতে আসা মানুষের অবসরের সময়টুকু কাজে লাগাতে এ ‘সেলুন লাইব্রেরি’ স্থাপন করেছি। আপাতত বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী, সুকুমার রায়ের তিনটি বিখ্যাত বইসহ ১০টি বই দিয়ে এ লাইব্রেরির যাত্রা শুরু হয়েছে। আগামী দিনে এ বইয়ের সংখ্যাও বৃদ্ধি পাবে।
সেলুনের মালিক বিশাল রবিদাস জানান, প্রতিদিন আনুমানিক ৫০/৬০ জন মানুষ চুল কাটতে আমাদের সেলুনে আসেন। চুল কাটতে আসা মানুষকে অনেক সময় সিরিয়ালে বসে থাকতে হয়। এখন থেকে তারা বই পড়ে সময় কাটাতে পারবেন।
সেলুনে চুল কাটাতে আসা অনেকে জানান, ফজলে রাব্বী সেলুনে লাইব্রেরি স্থাপনের যে উদ্যোগ নিয়েছেন সেটা অত্যন্ত চমৎকার। জ্ঞানের আলো ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে এ যেন যুগান্তকারী প্রদক্ষেপ।
এ বিষয়ে জেলা গ্রন্থাগারের লাইব্রেরিয়ান আজিজুল হক সুমন বলেন, ফজলে রাব্বির উদ্যোগকে আমরা স্বাগত জানাই। জেলায় প্রথম কোনো ‘সেলুন লাইব্রেরি’ স্থাপন হয়েছে। যা ঐতিহাসিক মসূয়া বাজার থেকে তরুণ ফজলে রাব্বীর মাধ্যমে যাত্রা শুরু হয়েছে। আমরা ফজলে রাব্বীর পাশে আছি।