কিশোরগঞ্জ

গীবত করে মানুষ দোষ ঢাকতে আর শ্রবণ করে গোল পাকাতে,উভয়ই থেকে স্বাবধান হোন

মাহফুজ রাজা,কিশোরগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি:
কবিগুরু বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তার কবিতার চয়নে ফুটিয়েছেন নিন্দা সম্পর্কে। 
নিন্দা দুঃখে অপমানে
যত আঘাত খাই,
তবু জানি কিছুই সেথা
হারাবার তো নাই।
হেন্স সেইলে বলেছেন, সেই মানুষই জয় লাভ করে যে জীবনে তীব্র নিন্দার ভয় করেনা এবং নিজের পথে এগিয়ে চলতে থাকে।
পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এর এক কর্মকর্তা কুতুব আহমেদ বলেন,যারা সমালোচনা করে তাদের যোগ্যতা কম। যার সমালোচনা করে সে অবশ্যই যোগ্যতায় শীর্ষে… মনে রাখতে হবে সাফল্য দেখে একদল আছে হিংসায় ফেটে যায় ওরা সারাজীবনই হিংসা করে তারা জীবনে সাফল্যর মুখ দেখে না।
একটি জরিপে দেখা গেছে প্রথমত কিছু লোক গিবত/নিন্দা  করে নিজের দোষ আড়াল করতে। একই ব্যক্তি যদি বারবার অন্যের গিবত করে তাহলে বুঝে নিতে হবে সে নিজেকে সাধু সাজাতে চাচ্ছে নিশ্চয়ই সে জগন্য পাপাচারে লিপ্ত তাই গিবতকারী থেকে দুরে থাকাই উত্তম। গিবত করা আর গিবত শোনা দুটিই জগন্য পাপ।
মনে রাখবেন হাদিসের পরিভাষায়, কেউ যদি আপনার কাছে অন্যের সমালোচনা করে তাহলে আপনার সমালোচনাও অন্যের কাছে করতে পারে।
গিবতকারীদের চক্ষু লজ্জা কম থাকে কারন তারা নিজের মাঝে হাজারটা দোষ রেখেও অন্যের একটা ছোট্ট দোষ সবার সামনে উন্মুক্ত করে গিবত করে থাকে। বলা যায়-চালুনি কয় সুই রে, তোর পাছায় ছ্যাঁদা।
শেখ সাদি বলে গেছেন, যদি তুমি সৎ হও তবে নিন্দা তোমার কোন অনিষ্টই করতে পারবেনা। জীবনে যদি আপনি অকৃতজ্ঞ মানুষের উপকার বারবার করেন তবে তারা আপনার গিবত করবেই কারণ এরা আপনার সততার ক্ষমতা সম্পর্কে জানে এবং আপনার সততার ভয়ে এরা ভিতু, এদের পরের জন্য নিজের কিছু করার যোগ্যতা নেই, তাই আপনার পিছনে পড়ে থাকে। এরা কখনোই আপনার সামনে যেতে পারবেনা, এরা পিছন থেকে আপনাকে আপনার গতিপথ রোধ করতে চাইবে,আপনাকে উপরে উঠতে দেবেনা ঝুলে থাকবে আপনার পায়ে ধরে। কিন্তু বিখ্যাত মনিষীদের মতে আপনি জীবনে জয়ী হতে চাইলে পিছনে তাকাবেন না,কারন একটা হরিণ ১০০ কিমি গতি সম্পন্ন অথচ একটা বাঘ ৯০ কিমি গতি সম্পন্ন তবুও বাঘ হরিণকে ধরে ফেলে এর কারন হরিণের দূর্বলতা হলো সে বারবার পিছন তাকিয়ে দেখে তাতে তার গতি ধীরতায় পড়ে।
মুসলিম শরিফের একটি হাদিসের বর্ণনা, ‘যারা অগ্র-পশ্চাতে অন্যের দোষ বলে বেড়ায়, তাদের জন্য রয়েছে ধ্বংসের দুঃসংবাদ। পবিত্র কোরআনে সুরা হুজুরাত এর ১২ নং আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন,আর তোমরা অন্যের দোষ খুঁজে বেড়াবে না।’  
‘দুর্ভোগ তাদের জন্য, যারা পশ্চাতে ও সম্মুখে লোকের নিন্দা করে।…অবশ্যই তারা হুতামাতে (জাহান্নামে) নিক্ষিপ্ত হবে। তুমি কি জানো হুতামা কী? তা আল্লাহর প্রজ্বলিত অগ্নি, যা হৃদয়কে গ্রাস করবে। নিশ্চয় বেষ্টন করে রাখবে, দীর্ঘায়িত স্তম্ভসমূহে।’(সুরা-১০৪ হুমাজা, আয়াত: ১-৯)।
অনেকে ভাবতে পারেন আমিতো গীবত করি না। অন্যে বলে আমি শুধু শুনি। না, তাদেরও রক্ষা নেই। কারণ তারা গীবতকারীকে সাহায্য করছে এই পাপ কাজ করতে। গীবতকারী গীবত করার জন্য যদি কাউকে না পায় তাহলে সে আর গীবত করতে পারবে না। আর তাই গীবত শ্রবণকারীদের জন্যও রয়েছে আল্লাহর হুকুম। ইসলামের দৃষ্টিতে গীবত করা যেমন নিষেধ, তেমনি গীবত শোনাও নিষেধ। যে গীবত শোনে সেও গীবতের পাপের অংশীদার হয়ে যায়। হাদিস শরিফে আছে, যখন কেউ আপনার সঙ্গে বসে অন্যের গীবত করে তখন তাকে থামতে বলুন, আল্লাহর হুকুমের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে সাবধান করুন। আর তাতেও যদি কাজ না হয় তবে সেখান থেকে সরে আসুন। কোনোভাবেই গীবত শোনা যাবে না।গীবত এবং অশ্লীল বাক্য মন্দ কিম্বা পথভ্রষ্ট লোকের হাতিয়ার।


Discover more from MIssion 90 News

Subscribe to get the latest posts to your email.

সম্পর্কিত সংবাদ

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Back to top button

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker