বাংলা নববর্ষ উপলক্ষ্যে জামালপুর সদর উপজেলার বাশচঁড়া দুইদিন ব্যাপী গ্রামীণ লাঠি খেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
গতকাল সোমবার সদর উপজেলার বাঁশচড়া বাজারে এই খেলার উদ্বোধন হয়েছিল। যা আজ মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) শেষ হয়েছে। বিলুপ্তপ্রায় গ্রাম বাংলার লাঠি খেলা দেখতে ভীড় জমায় নানা বয়সী মানুষ। ঢাক-ঢোলের বাজনা আর গানের সুরের তালে তালে চলে লাঠিয়ালদের লাঠির কসরত। খেলায় প্রতিপক্ষের লাঠির আঘাত থেকে নিজেকে রক্ষা করে পাল্টা আঘাত করতে মরিয়া হয়ে ওঠেন লাঠিয়ালরা।
এ আয়োজনকে ঘিরে উৎসবের আমেজ বয়ে যায় পুরো এলাকায়। এমন আয়োজন যেন প্রতি বছর হয় এমন দাবি জানিয়েছেন খেলা দেখতে আসা দর্শকরা।
টুকুরানী নামের এক দর্শক জানান, আগে এমন খেলা প্রায়ই হতো। বিভিন্ন এলাকা এলাকা থেকে অনেকেই খেলা দেখতে আসতো। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে এসব খেলাধুলা হারিয়ে যাচ্ছে। দীর্ঘদিন পর হলেও লাঠি খেলা দেখে অনেক ভালো লাগছে। আয়োজকদের কাছে প্রতি বছর এ ধরণের খেলার আয়োজনের দাবি জানান তারা।
হাফেজ আলী তারা নামের একজন বলেন, লাঠি খেলার ঢোলের শব্দ শুনলে এখনো নিজেকে ধরে রাখতে পারি না। আমাদের ছোট সময় অনেক বাজারে বাজারে এই খেলার আয়োজন করা হতো। এখন বছরে এই মেলাকে কেন্দ্র করে এই খেলার আয়োজন করা হয়। গ্রাম বাংলা ঐতিহ্যবাহী এই খেলাকে বাঁচিয়ে রাখতে হলে আরো বেশি এই খেলার আয়োজন করা দরকার।
মো: ফজলুল হক নামে এক লাঠিয়াল বলেন, আমাদের বাপ-দাদারা এসব খেলা খেলতো। তারা দেশের বিভিন্ন জায়গা গিয়ে লাঠি খেলা খেলেছে। কিন্তু ডিজিটাল যুগে লাঠিয়ালদের কদরও কমে গেছে। এখন খেলা খুব একটা হয় না। মাঝে মধ্যে ডাক পড়লে মনে আনন্দ নিয়েই এই খেলা খেলি। এ খেলাকে বাঁচিয়ে রাখতে হলে বেশি বেশি খেলার আয়োজন করা দরকার।
আয়োজক কমিটির সদস্য মোশারফ হোসেন মুসা মিশন নাইনটি জানান, বর্তমান যুগের ছেলে-মেয়েরা মোবাইল ও ইন্টারনেটে ঝুকে গেছে। এই যুগের অনেক ছেলে মেয়ে জানেই না লাঠি খেলার কেমন। তাই গ্রামীণ ঐতিহ্য্যকে ধরে রাখতেই প্রতি বছরই এ ধরেনর আয়োজন করা হবে বলে জানান তিনি।