শ্রীপুর

পুকুরে ঝাঁপ দিয়েও রক্ষা পেল না ছাত্রলীগ নেতা, পিটিয়ে মারল বিক্ষুব্ধ জনতা

গতকাল রাতে বিক্ষুদ্ধ জনতার রোষানল থেকে নিজেকে রক্ষার জন্য পুকুরে ঝাঁপ দেন ছাত্রলীগ নেতা নয়ন শেখ। কিন্তু শেষ রক্ষা আর হলো না। স্থানীয় জনতা পুকুরে নেমেই নয়ন শেখকে পিটিয়ে হত্যা করেছে। শ্রীপুরের কাওরাইদ বাজারে গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। নিহত নয়ন শেখ কাওরাইদ ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি পদপ্রার্থী ছিলেন। সর্বশেষ সে ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সদস্য ছিল।

এ ব্যাপারে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ক্রিকেট খেলাকে কেন্দ্র করে কাওরাইদ ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি প্রার্থী খায়রুল ইসলাম মীরের ছেলে অনুভব মীরকে বিকেলে মারধর করেন নয়ন ও তার বাহিনীর লোকজন। অনুভব বাড়িতে ফিরে তার বাবা খায়রুল মীরকে বিষয়টি খুলে বলে। এ সময় নয়ন ও তার লোকজন কাওরাইদ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ অফিসে অবস্থান করছিলেন।

খায়রুল মীর তখন ওই অফিসে গিয়ে তার ছেলেকে মারধরের কারণ জানতে চাইলে নয়ন ও তার লোকজন উত্তেজিত হয়ে ওঠে। এক পর্যায়ে বাবা-ছেলে দুই জনের মাথায় আঘাত করে রক্তাক্ত করে। এ ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর কাওরাইদ বাজার ও আশেপাশের লোকজন এসে প্রতিবাদ করে। এক পর্যায়ে তাদের প্রতিও উত্তেজিত হয়ে উঠে নয়ন। এতে উপস্থিত লোকজন নয়নকে ধাওয়া করে। ধাওয়া খেয়ে নয়ন পুকুরে ঝাঁপ দেয়। এর পর বিক্ষুব্ধ জনতা পুকুরে নেমেই তাকে মারধর করতে থাকে। এক পর্যায়ে সেখানেই নয়নের মৃত্যু হয়।

এ বিষয়ে নয়ন শেখের বড় ভাই রতন শেখ জানান, ক্রিকেট খেলায় ঝামেলা হওয়ার পর থেকেই, কাওরাইদ বাজারে দেশীয় অস্ত্র হাতে মহড়া দেন খায়রুল মীর ও তার লোকজন। রাত ৯টার দিকে নয়ন শেখকে আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে ঘণ্টাখানেক অবরুদ্ধ করে রাখে তারা। এক পর্যায়ে দলের কার্যালয়ের ভেতর ঢুকে নয়ন শেখের ওপর হামলা চালান খায়রুলসহ তার লোকজন। সেখান থেকে দৌড়ে পালানোর সময় নয়নকে ধাওয়া করে তারা। ধাওয়ার পর পাশে রেলওয়ের একটি পুকুরে পড়ে গেলে সেখানে পিটিয়ে হত্যা করা হয় নয়নকে।

এ সময় বিপ্লব নামে খায়রুল মীরের এক সহকর্মী বলেন, খায়রুল মীর কিংবা তার কোনো লোক হত্যাকাণ্ডে জড়িত নন। খায়রুল নিজেই হামলার শিকার হয়ে গুরুতর অবস্থায় চিকিৎসাধীন। তার ছেলে অনুভবের অবস্থাও ভালো নয়।

এ বিষয়ে কাওরাইদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আজিজুল হক বলেন, এটি একটা অমানবিক কাজ। আইন কখনোই হাতে তুলে নেওয়া যাবে না। মানুষকে পিটিয়ে হত্যা মানে আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া।

তিনি আরও বলেন, নয়ন শেখ এলাকায় একটি কিশোর গ্যাং গড়ে তুলেছিল। মানুষজনকে নানা ভাবে অত্যাচার করে আসছিল। মানুষজন তার অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিল।

এ ব্যাপারে শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খোন্দকার ইমাম হোসেন বলেন, রাত ১১টার দিকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker