জাতীয়

এক বছরে আত্মহত্যা করেছে ১৪ হাজারের বেশি মানুষ

সারা দেশে করোনাকালে পুরুষের চেয়ে বেশি নারী আত্মহত্যা করেছে বলে প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। নারীদের ক্ষেত্রে এ সংখ্যাটা ৫৭ শতাংশ এবং পুরুষের ক্ষেত্রে ৪৩ শতাংশ। মোট আত্মহত্যার ঘটনা ১৪ হাজার ৪৩৬টি। এর মধ্যে নারীর আত্মহত্যার ঘটনা ৮ হাজার ২২৮টি এবং পুরুষের আত্মহত্যার ঘটনা ৬ হাজার ২০৮টি।
আত্মহত্যার ঘটনা পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে ২০ থেকে ৩৫ বছর বয়সী রয়েছেন ৪৯ শতাংশ, ৫ থেকে ১৯ বছর বয়সী ৩৫ শতাংশ, ৩৬ থেকে ৪৫ বছর বয়সী ১১ শতাংশ। সবচেয়ে কম আত্মহননকারী হচ্ছেন ৪৬ থেকে ৮০ বছর বয়সীরা, ৫ শতাংশ।
আত্মহত্যার কারণ
বিভিন্ন ধরনের পারিবারিক সমস্যার কারণে আত্মহত্যা করেছেন ৩৫ শতাংশ নারী-পুরুষ। এর বাইরে ২৪ শতাংশ সম্পর্কে টানাপোড়েনের কারণে এবং অজানা কারণে ৩২ শতাংশ মানুষ আত্মহত্যা করেছেন। আর্থিক ও লেখাপড়ার কারণে আত্মহত্যা করেছেন ৪ ও ১ শতাংশ।

মনোবিজ্ঞানীরা বলছেন, মানুষ হতাশ হলে ঠুনকো কারণে নিজের আবেগ ধরে রাখতে পারে না। তখন তিনি নিজেকে একা মনে করে এবং আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। আপাতদৃষ্টিতে, অন্যদের কাছে মৃত্যুর কারণ ছোট মনে হলেও ওই কারণ ওই মুহূর্তে ওই ব্যক্তির জন্য অনেক বড় কারণ হয়ে সামনে এসেছিল।
ওয়েবনিয়ারে মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ আজহারুল ইসলাম বলেন, বিষণ্ণতা থেকেই মূলত মানুষ আত্মহত্যা করে। দুশ্চিন্তা, উদ্বেগ থেকে মানুষ নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। আত্মহত্যার কারণগুলো যত তুচ্ছই হোক না কেন, আত্মহত্যাপ্রবণ ব্যক্তির কাছে তা অনেক বড় একটি ঘটনা।
শিক্ষার্থীদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা বেশি

গত ১২ ফেব্রুয়ারি রাতে আত্মহত্যা করেন গাজীপুরের এক শিক্ষার্থী। সে রাতে তাঁর বাবা মুঠোফোন কেড়ে নেওয়ায় অভিমানে মৃত্যুর পথ বেছে নেন উচ্চমাধ্যমিকের প্রথম বর্ষের এই শিক্ষার্থী। করোনাকালে শিক্ষার্থীদের মধ্যে আত্মহত্যার এমন প্রবণতার ঘটনা বেশি দেখা গিয়েছে উল্লেখ করে আঁচল ফাউন্ডশনের প্রতিষ্ঠাতা তানসেন রোজ বলেন, মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর আরও গুরুত্ব দিয়ে নাগরিকের বেঁচে থাকার পরিবেশ তৈরি রাষ্ট্র ও পরিবারের দায়িত্ব। তিনি বলেন, তরুণ প্রজন্ম বিশেষ করে শিক্ষার্থীদের মধ্যে যে হারে আত্মহত্যা বাড়ছে, সে হারে সচেতনতা বাড়ছে না।

মানসিক রোগ সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানোসহ ১১টি সুপারিশ তুলে ধরা হয় ওই প্রতিবেদনে। এর মধ্যে অন্যতম হলো আত্মহত্যাপ্রবণ ব্যক্তিকে একা না রাখা, ক্রাইসিস সেন্টার ও হটলাইন চালু করা, সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কাউন্সিলর নিয়োগ করা প্রমুখ।

আঁচল ফাউন্ডেশনের যাত্রা ২০১৯ সালের ২৫ এপ্রিল। তরুণদের এ সংগঠনটি মূলত শিক্ষার্থীদের দক্ষতা ও মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করে থাকে। প্রশিক্ষণ, কর্মশালার মাধ্যমে তারা করোনাকালেও শিক্ষার্থীদের নানা কাউন্সিলিং দিয়েছে।


Discover more from MIssion 90 News

Subscribe to get the latest posts to your email.

সম্পর্কিত সংবাদ

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Back to top button

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker