শরীয়তপুর ভেদরগঞ্জ উপজেলায় অন্য মেয়েকে বিয়ে করায় প্রেমিকের বাড়িতে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেনে এক তরুণী।
রোববার (২৬ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা ৭টার দিকে উপজেলার সখিপুর ইউনিয়নের কাঁচিকাটা কান্দি (পতনা) গ্রামে আনোয়ার লস্করের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। দাবি মেনে না নেওয়া পর্যন্ত প্রেমিক আনোয়ারের বাড়িতে অবস্থান করবেন বলে জানান ওই তরুণী।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আট বছর ধরে আনোয়ার লস্করের সঙ্গে ওই তরুণীর প্রেমের সম্পর্ক চলে আসছিল। তবে মেয়েটির বাবা-মা অন্য এক ছেলের সঙ্গে বিয়ে দেন। কিছুদিন পর তাকে নিয়ে পালিয়ে যান আনোয়ার। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তরুণীর আগের স্বামীকে তালাক দিতে বাধ্য করেন আনোয়ার। দীর্ঘদিন একসঙ্গে ঢাকার মিরপুরে একসঙ্গে বাস করছিলেন তারা।
কিছুদিন আগে মেয়েটিকে কিছু না বলে বাড়ি আসেন আনোয়ার। পারিবারিকভাবে রোববার উত্তর তারাবুনিয়া ইউনিয়নের আরেক মেয়েকে বিয়ে করেন তিনি।
স্ত্রীর স্বীকৃতির দাবিতে রোববার সন্ধ্যা ৭টার দিকে আনোয়ারের বাড়িতে অবস্থান নেন। এক পর্যায়ে ঘরের দরজা বন্ধ করে আড়ার সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে গলা ফাঁস দেওয়ার চেষ্টা করেন তিনি। দরজা ভেঙে তাকে উদ্ধার করেন প্রতিবেশীরা।
স্থানীয় ইউপি সদস্য কামাল উদ্দিন ব্যাপারী জাগো নিউজকে বলেন, ‘ঘটনাটি শুনে আনোয়ারের বাড়ি গিয়ে তার মায়ের সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের বলেছি মেয়েটি যেহেতু থানায় অভিযোগ দিয়েছে আনোয়ারকে অন্য কোথাও যেন বিয়ে না করানো হয়। তবে তারা আমার কথা রাখেনি। গোপনে তারা বিকেলে আনোয়ারকে বিয়ে করায়। পরে শুনি সন্ধ্যায় আনোয়ারদের বাড়ি ঢুকে ঘরের দরজা বন্ধ করে ওই তরুণী আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিল। এলাকার লোকজন এসে দরজা ভেঙে তাকে উদ্ধার করে।’
মেয়ের মা অভিযোগ করে বলেন, ‘আমার মেয়েটারে আট বছর যাবত শান্তিতে থাকতে দেয়নি আনোয়ার। আমার মেয়েকে ভাগিয়ে নিয়ে যায়। সেই দুঃখে আমার স্বামী স্ট্রোক করে মারা গেলো। আমার মেয়ের সঙ্গে এক সঙ্গে থেকেও এখন অন্য মেয়েকে বিয়ে করছে। আমি সখিপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।’
প্রেমিকের মা সহুরার (বুয়া) বলেন, ‘মেয়েটি বিয়ে না করে আমার ছেলের সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক করলো কেন। আমার ছেলেকে বিয়ে দেওয়ার আগে বললো না কেন। তাকে বউ হিসেবে আমার ঘরে তাকে তুলবো না।’
তরুণী বলেন, ‘বিয়ের আশা দিয়ে আমার সঙ্গে সংসার করে আনোয়ার। ঢাকায় মিরপুরে গিয়ে আমরা দীর্ঘ আট বছর থাকি। আজ আনোয়ার অন্য মেয়েকে বিয়ে করছে। আমি এখন আনোয়ারের বাসায় আছি। স্ত্রীর স্বীকৃতি না দিলে আমি আত্মহত্যা করবো।’
এদিকে প্রেমিক আনোয়ারকে বাড়ি পাওয়া যায়নি। তার মোবাইল নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়। তিনি যে বাড়ি বিয়ে করেছেন সেখানেও তিনি নেই বলে জানা গেছে।
সখিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুজ্জামান হাওলাদার জাগো নিউজকে বলেন, ওই মেয়ে ডিভোর্সি। তিনি ঢাকায় আনোয়ারের সঙ্গে ছিলেন। তাই আমি বলেছি লিখিত অভিযোগ ঢাকায় দাও। ফাঁস দেওয়ার ঘটনা শুনিনি। যে ফাঁসা যে দেওয়ার চেষ্টা করবে তারও জেল হতে পারে। আমরা বিষয়টি তদন্ত করে দেখবো।