কিশোরগঞ্জের ভৈরবের চানপুর গ্রামে বর্বরোচিত এক তত্ত্ব প্রকাশ পেয়েছে, নিজের ভাইকে হত্যা করে হত্যা মামলার বাদী হয়েছিলেন রিপন মিয়া,পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের(পিবিআই)তদন্তে বেরিয়ে আসে এ চাঞ্চল্যকর তত্ত্ব। শনিবার সন্ধায় কিশোরগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ শহিদুল ইসলাম চৌধুরীর কাছে ১৬৪ ধারায় হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দেন রিপন। আরও ৫ জনের নাম উল্লেখ করেন জবানবন্দিতে এ হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত।
চানপুর গ্রামের মৃত দেওয়ান আলীর ছেলে চা বিক্রেতা স্বপন মিয়া(৩৮)।২৮ জুলাই বাড়ির সংলগ্ন একটি কালভার্টের নিচে থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়,এ বিষয়ে নিহত স্বপনের ছোট ভাই রিপন মিয়া (৩৫)বাদী হয়ে ভৈরব থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।উক্ত মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয় পিবিআই কে।
পিবিআই পুলিশ পরিদর্শক (নিঃ)মোহাম্মদ সাখরুল হক খান মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পান।তদন্তকালে বাদীর আচরণে সন্দেহ হলে,গত শুক্রবার মামলার বাদী রিপন মিয়াসহ ৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়,
গ্রেফতারকৃত অপর ৩ জন হল একই গ্রামের আব্দুর রব(৩৫),ইমান আলী(২৮),এবং সবুজ (৩৫)
সিবিআইয়ের পুলিশ সুপার মোঃ শাহাদাত হোসেন পিপিএম জানান-রিপন মিয়া কয়েকজন বন্ধুর সাথে নিয়মিত মাদক সেবন করতেন, জমিজমা নিয়েও তার বড় ভাই স্বপনের সাথে বিরোধ ছিল,এছাড়াও মাদক সেবনের বিষয়েও স্বপন তার মাকে জানিয়েছিলেন,এসব কারনে স্বপনের উপর ক্ষিপ্ত ছিল রিপন।অপরদিকে বাড়ী থেকে নতুন রাস্তা নির্মাণের খরচ বাবদ ১৫ হাজার টাকা না দেওয়ায় স্বপনের উপর প্রতিশোধ নেওয়ার উপায় খুজতে থাকে রিপন,
গত ২৫ জুলাই রাতে একটি পুকুর পাড়ে বসে রিপনসহ কয়েকজন মিলে স্বপনকে হত্যার পরিকল্পনা করেন,পরিকল্পনা অনুযায়ী দুশত টাকার এসিড ক্রয় ও একটি গাড়ীও( বিভাটেক)ঠিক করে রাখেন।
২৬ শে জুলায় রাতে ১২ টার দিকে একই গ্রামের ইমান আলী,সবুজ,বুলবুল,আব্দুর রব এবং বিভাটেক চালক কে নিয়ে গ্রামের লতিফ মার্কেটের ভিতরে অবস্থান নেয় রিপন।স্বপন মোবাইলে কথা বলতে বলতে লতিফ মার্কেটের সামনে আসতেই সবাই মিলে স্বপনকে ঘিরে ধরেন,বুলবুল ও সবুজ পিছন থেকে গামছা দিয়ে নাকে মুখে পেচিয়ে ধরেন,ইমান আলী ও রব স্বপনকে জোর করে গাড়ীতে উঠিয়ে ফেলেন,গাড়িটি ছোট রাজাকাটা কবরস্থানের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় কৌশলে স্বপন চলন্ত গাড়ী থেকে লাফিয়ে পালানোর চেষ্টা করেন।এ সময় ইমান আলী এসিডের বোতল স্বপনের নাক,মুখ লক্ষ্য করে ছুড়ে মারেন,এসিড স্বপনের চোখ, নাক,মুখে লাগলে তিনি বাঁচার জন্য চিৎকার করতে করতে বিলের পানিতে ঝাপিয়ে পড়েন।
সাথে সাথে তারাও পানিতে নেমে স্বপনকে ধরে ফেলেন,রিপন,ইমান আলী,রব স্বপনের হাত পা জোর করে ধরে রাখেন এবং বুলবুল ও সবুজ মিয়া স্বপনের ঘাড় ভেঙ্গে ফেলেন এতে তাৎক্ষণিক ভাবে স্বপনের মৃত্যু হয়।
পরে স্বপনের লাশ বিল থেকে উঠিয়ে বিভাটেকে তুলে
৫০-৬০ গজ দূরে নিয়ে একটি কালভার্টের নিচে রেখে আসেন।হত্যার পরিকল্পনা করার সময় সবুজকে ৫ হাজার টাকা দেন রিপন এ ছাড়াও হত্যাকান্ডে সফল হলে প্রত্যেককে খুশি করারও আশ্বাস দেন।পিবিআই পুলিশ সুপার সাংবাদিকদের এসব জানান।
বুলবুল ও অজ্ঞাত বিভাটেক চালক কে গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রেখেছে বলে পিবিআই মারফত আরো জানা যায়।
Discover more from MIssion 90 News
Subscribe to get the latest posts to your email.