মাহফুজ রাজা, কিশোরগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি:
প্রকৃতিতে শীতের ক্লান্তি লগ্ন, আসতে শুরু করেছে বসন্তের আগমনী বার্তা।
শীতের জীর্ণতা সরিয়ে ফুলে ফুলে সাজতে ব্যস্ত প্রকৃতি। গাছে গাছে নতুন পাতা, স্নিগ্ধ সবুজ কচি পাতার ধীর গতিময় বাতাস জানান দিচ্ছে নতুন লগ্নের। ফাল্গুনের আগমনী বার্তায় পলাশ, শিমুল গাছে লেগেছে আগুনের খেলা,উকি দিচ্ছে কলি, মধুর বসন্তের সাজ রব সর্বত্র। পুরো প্রকৃতিতে চলছে বসন্তের আগমনের ধ্বনি ।
শিমুল যদি হইতাম আমি শিমুলের’ই ডালে শোভা পাইতো রূপ আমার ফাগুনেরও কালে’। প্রকৃতিতে ফুটে থাকা শিমুল ফুল নিয়ে এমন কালজয়ী অনেক গান রচিত হয়েছে। শুধু কি গান আর কবিতা? বাংলা সাহিত্যের পাতায়ও স্থান পেয়েছে শিমুলের রক্তরাঙ্গা ফুলের অপরূপ সৌন্দর্য। মাঘের তীব্র শীত পেরিয়ে কয়েকদিন পরেই প্রকৃতিতে ঋতুরাজ বসন্তের আগমন ঘটবে। আর সেই আগমনী বার্তা ছড়াচ্ছে শহর আর গ্রামের পথে প্রান্তরে। যেন উদাসী মনে আকাশ পানে চেয়ে ফুটতে শুরু করেছে সদ্যফোটা শিমুলের দল। রক্তিম মনোলোভা শিমুল ফুলগুলো কয়েকদিনের মাঝেই পূর্ণতা পাবে।বসন্ত আসার আগেই গাছে গাছে সীমিত আকারে শিমুল ফুল ফুটতে শুরু করেছে।
মাঘের শেষ হতে এখনো কয়েকদিন বাকি, আর এরই মধ্যে প্রকৃতিতে বইতে শুরু করেছে বসন্তের হাওয়া। ঋতুরাজ বসন্ত তার আগমনী বার্তা নিয়ে প্রকৃতির দরজায় কড়া নাড়ছে।
বসন্তের আগমনী বার্তা পেয়ে শীতের রিক্ততা ভুলিয়ে ফাগুনের আগুনে মানুষের মন আর প্রকৃতিতে লেগেছে পরিবর্তনের ছোঁয়া। বসন্তের রঙ্গ ও রূপে নিজেকে সাজাতে প্রকৃতি এখন মেতে উঠেছে। প্রকৃতি ধারণ করতে শুরু করেছে রূপ লাবণ্যে ভরা মনোহরী ভাব।
ফাল্গুনের আগুনে শীতের তীব্র রুক্ষতা কেটে পাতাঝরা বৃক্ষগুলির মাথায় দেখা দিয়েছে সবুজ পাতা, কলি ও ফুল। প্রকৃতিতে বসন্তের সাজ-সাজ রব।
কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর উপজেলার বাজিতপুর -কটিয়াদি সড়কে যেতে যেতে দেখা যায়, নতুন কুঁড়ি ও ফুলে কয়েকটি শিমুল গাছ রঙিন হয়ে উঠতে শুরু করেছে, রাস্তার ধারে শিমুল গাছে প্রকৃতির আদরমাখা স্পর্শ যেন জেগে উঠেছে। শীতের রুক্ষতা কাটিয়ে প্রকৃতি ফিরে পেতে চলছে ফুল, ফল ও সবুজের এক অপরূপ সমারোহ, যা আগমনী বার্তা ছড়াচ্ছে বসন্তের। শিমুলের প্রস্ফুটিত হাসিতে শিমুল বনে যেন লেগেছে লেলিহান লাল রঙ্গের আগুনের ঘনঘটা। নানা প্রজাতির পাখিরা তার মিষ্টি কুহুতানে মাতাল করতে আসা শুরু ঋতুরাজ বসন্ত সবুজ-শ্যামল বাংলায়।
প্রকৃতির নিয়ম অনুযায়ী ঋতু বদলায় তার রূপ, রং আর সৌন্দর্য নিয়ে। আগের প্রকৃতি আর বর্তমান প্রকৃতির মধ্যে অনেক পার্থক্য। প্রকৃতি নিয়ে বয়োজ্যেষ্ঠদের মুখ থেকে শোনা যায় এক ঋতুর আবহাওয়া আরেক ঋতুর ১০ দিন আগেই বিস্তার লাভ করে। তাই তো মাঘ মাস শেষ হতে না হতেই প্রকৃতিতে বইতে শরু করেছে ফাল্গুনের হাওয়া। সেই হাওয়ায় শিমুল গাছে ফুটতে শুরু করেছে ফুল। বসন্তের বার্তা নিয়ে শিমুল গাছের কলি খাওয়ায় মেতে উঠেছে পাখির দল। সেই সাথে আম, লিচু, জাম ও বেল গাছে মুকুলে ভরে উঠছে।
জেলার পাকুন্দিয়া উপজেলার পুলেরঘাট-হোসেনপুর সড়কের দুই ধারের শিমুল গাছগুলি নতুন কুঁড়ি ও লাল ফুলে প্রকৃতি যেন অনাবিল আনন্দ ও নৈসর্গিক সৌন্দর্যের লীলা ভূমির মহা ধামামা। ইট-কাঠের এই যান্ত্রিক যুগে বসন্তে প্রকৃতি যেন তার সব সৌন্দর্য উজাড় করে দিবে।
কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলার হোসেনপুর আদর্শ মহিলা ডিগ্রি কলেজের অধ্যাপক আশরাফ আহমেদ বলেন, বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ষড়ঋতুর বাংলাদেশে ঋতুর চারিত্রিক পরিবর্তন হচ্ছে। আর এর প্রভাব পড়ছে পরিবেশ ও প্রকৃতিতে।
জেলার পাকুন্দিয়া উপজেলার চর আদর্শ মহাবিদ্যালয়ের সিনিয়র প্রভাষক মোহাম্মদ জাকির হোসেন বলেন, বসন্ত ঋতু আসার আগে শিমুল ফুল ফোঁটার পেছনেও আবহাওয়ার পরিবর্তণের প্রভাব পড়েছে।ফুল দেখলে সবার মন অব্যক্ত এক ভালোলাগায় ভরে যায়।আর শিমুল ফুল তো আবেদনময়ী এক ফুল।
Discover more from MIssion 90 News
Subscribe to get the latest posts to your email.