কালিয়াকৈরে শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের চেষ্টা অভিযুক্ত শিক্ষককে গ্রেপ্তারের দাবিতে শিক্ষার্থী, এলাকাবাসীর, বিক্ষোভ ও স্কুল ঘেরাও
গাজীপুরের কালিয়াকৈরে বড় গোবিন্দপুর এলাকার ফালুপলোয়ান উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেনীর ছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টার প্রতিবাদে এবং অভিযুক্ত শিক্ষক বাবুল সিকদারকে গ্রেপ্তার ও ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল মানবন্ধন কর্মসুচী পালন করা হয়েছে। গতকাল সোমবার সকালে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীর উদ্যোগে ওই কর্মসুচী পালন করা হয়। এছাড়া অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহন না করায় বিক্ষোব্ধরা বিদ্যালয় ঘেরাও করে প্রধান শিক্ষক আব্দুল করিমের বহিস্কারও দাবি করে।
অভিযুক্ত শিক্ষক বাবুল সিকদার কালিয়াকৈর উপজেলার বড় গোবিন্দপুর এলাকার মৃত বাছের সিকদারের ছেলে। তিনি ফালু পালোয়ান উচ্চ বিদ্যালয়ের ক্রিড়া শিক্ষক।
মানববন্ধন, শিক্ষার্থী ও এলাবাসী সুত্রে জানা যায়, গত ২৬ সেপ্টেম্বর সকালে কালিয়াকৈর উপজেলার বড় গোবিন্দপুর এলাকার ফালু পালোয়ান উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেনীর এক ছাত্রী বিদ্যালয়ের শিক্ষক বাবুল সিকদারের বাড়ীর পাশ দিয়ে প্রাইভেট পড়তে যাচ্ছিল। যাওয়ার পথে শিক্ষক বাবুল সিকদার ওই ছাত্রীকে কৌশলে ডেকে তার বাড়ীর ভেতর ভেতরে নিয়ে যায়। এ সময় ফাঁকা বাড়ি থাকায় ওই শিক্ষক নানাভাবে ভয় দেখিয়ে তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণের চেষ্টা করেন। এক পর্যায়ে ওই ছাত্রীর গলা চেপে ধরেন এবং ঘটনাটি কাউকে না জানানোর জন্য তাকে খুন-জখমের হুমকি দেন ওই শিক্ষক। এ ঘটনার তিন দিন পর ওই ছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়লে বিষয়টি পরিবারের লোকজন জানতে পারে।
এঘটনায় ওই স্কুল ছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে শনিবার রাতে কালিয়াকৈর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এদিকে দীর্ঘদিন ছুটি শেষে সোমবার সকালে স্কুলে গিয়ে বিষয়টি জানতে পেরে উত্তেজিত হয়ে উঠে তার সহপাঠীরা। পরে তারা ক্লাসে না গিয়ে পাইকপাড়া-জৈনার বাজার সড়ক অবরোধ ও স্কুল ঘেরাও রেখে ওই শিক্ষকের গ্রেপ্তার ও ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল মানববন্ধন করে। ওই মানববন্ধনে আরো অংশগ্রহণ করেন অন্যান্য শিক্ষার্থীদের অভিভাবক ও স্থানীয় লোকজন। এ সময় বিক্ষুব্দরা বিভিন্ন শ্লোগানে স্কুল ক্যাম্পাসের ভিতরে প্রায় ঘন্টাখানেক বিক্ষোভ করে। এছাড়া ওই লম্পট শিক্ষকের কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় প্রধান শিক্ষককে অবরোদ্ধ রেখে তাকে লাঞ্ছিত করেন বিক্ষুব্দরা। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করলে বিচার না হওয়া পর্যন্ত ক্লাস করবে না ঘোষণা দিয়ে চলে যান বিক্ষুব্দ শিক্ষার্থীরা।
এলাকার বাসিন্দা ও বিদ্যলয়ের অভিভাবক জসিম উদ্দিন, তজর উদ্দিন, জসিম মিয়াসহ অনেকেই ওই শিক্ষকের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচার দাবী করেন।
তাদের ছেলে মেয়েদের বিদ্যালয়ে নিরাপওার ও দাবী জানান। তারা প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার জোর দাবী জানান।
ফালু পালোয়ান উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল করিম বলেন, ওই ঘটনাটি স্কুল বন্ধ থাকা কালিন সময়ে ঘটেছে। এটা স্কুলে নয়, উনার বাড়িতে ঘটেছে। কমিটি ছাড়া ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে আমি কোনো ব্যবস্থা নিতে পারি না।
ফালু পালোয়ান উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সাইফুজ্জামান সেতু বলেন, ওই অভিযুক্তু শিক্ষককে শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে। তিনি সকলের সাথে একাত্ব ঘোষনা করে তাকে আইনের আওতায় আনার প্রতিশ্রুতি দেন। এ ছাড়া বিদ্যালয়ে কার্যত্রুম চালিয়ে যাবার অনুরোধ করেন।
কালিয়াকৈর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রাহাদুজ্জামান আকন্দ জানান, ওই ঘটনায় ওই ছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। এছাড়া স্কুলে বিক্ষোভের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করা হয়েছে। অভিযুক্ত শিক্ষককে গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।
Discover more from MIssion 90 News
Subscribe to get the latest posts to your email.