গাজীপুরের মৌচাক এলাকায় বসবাসকারী ফেসবুক লাইভে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি পদপ্রার্থী এসএম জোবায়ের হিমেলের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ আনা সেই তরুণী গত শুক্রবার সকাল থেকে পুলিশ হেফাজতে রয়েছে। দুপুরের মধ্যে তরুণীর দায়ের করা অভিযোগটি রুজু করার কথা থাকলেও প্রভাবশালী মহলের দিনভর দেন দরবারের কারণে ওসি আকবর আলী মামলাটি রুজু করতে পারেনি। তবে ওই তরুণীকে ওসি আকবর আলী খান নিরাপত্তা ও মামলা রজু করে আসামীকে গ্রেপ্তারের আশ্বাস দিয়েছেন বলে তরুণী এ প্রতিবেদককে ফেসবুক মেসেঞ্জারে জানান।
তরুণী জানান, গত বৃহস্পতিবার রাত নয়টার দিকে কালিয়াকৈর থানার ওসি আকবর আলী খানকে ফোনে পরিচয় দিয়ে মামলার বিষয়ে জানতে চাই। তিনি (ওসি) আমার ফোন পেয়ে থানার যাওয়ার অনুরোধ করে বলেন, পূর্ণ নিরাপত্তা দেওয়া হবে। মামলার তথ্যাদি সঠিক থাকলে রাতেই মামলা রুজু করে আসামী জোবায়ের হিমেলকে গ্রেপ্তারে পুলিশ মাঠে নামবে। ওই তরুণী নিরাপত্তাজনিত কারণে রাতে থানায় না গিয়ে শুক্রবার সকাল ১১টার দিকে থানা যাই। সেখানে ওসির রুমে বসলে ওসি আকবর আলী খান সব ঘটনা শুণে মামলা রুজুর জন্য সংশিষ্ট পুলিশ কর্মকতার্কে নির্দেশ দেন। কিন্তু এরি মধ্যে সরকার দলীয় কয়েকজন প্রভাবশালী নেতা থানায় ঢুকে ওসিকে মামলাটি না নিয়ে মীমাংসা করে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। কিন্তু ওসি আকবর আলী খান মীমাংসার পক্ষে নয় জানিয়ে দিলেও তিনভর আসামীর প্রভাবশালী মহল ও হিমেলের বাবা মোবারক হোসেন ও আসামী হিমেলের কিছু সমর্থক কর্মীরা নানাভাবে বিষয়টি ধামা চাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু ওসি আকবর আলী খাঁন প্রভাবশালীদের চাপে নত না হয়ে তরুণীকে আসামী হিমেল বিয়ে করে দুই পক্ষ আপোষ মীমাংসা করলে মামলা নেওয়া হবে না বলে আসামীর বাবা মোবারক হোসেনকে জানান। সন্ধ্যার পর পর হিমেলের বাবা মোবারক হোসেন ওসির কাছ থেকে দুই ঘন্টা সময় নিয়ে থানা থেকে বের হয়ে
যান।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত হিমেলের বাবা মোবারক হোসেন জানান, তরুণী থানায় অবস্থান করছেন। বিষয়টি মীমাংসা করা যায় কিনা তার জন্য ওসির কাছ থেকে কিছু সময় নিয়ে এসেছি। ছেলে হিমেলের সাথে কথা বলে আবার থানায় যাবো।
তরুণী জানান, জুম্মবার নামাজের আগে উপজেলা আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা মামলা না নিয়ে স্থানীয়ভাবে মীমাংসার করার জন্য ওসিকে অনুরোধ করলেও ওসি রাজি হননি। তিনি আইনি প্রক্রিয়ায় যা হয় তাই করবেন বলে তাদের জানিয়ে দেন।
ওসি আকবর আলী খান জানান, পুলিশের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে রাতেই মামলা রুজু করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ওই তরুণীকে পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে। তরুণীর পূর্ণ নিরাপত্তা দিবে পুলিশ।
উল্লেখ্য- গত বুধবার বিকেল তিনটার দিকে ওই তরুণী ফেসবুক লাইভে এসে কালিয়াকৈর উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি ও গাজীপুর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতির পদপ্রার্থী এসএম জোবায়ের হিমেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। এর আগে কালিয়াকৈর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। সেই থেকে তরুণী নিরাপত্তাহীনতায় ভোগছেন এবয় পালিয়ে বেড়ান। তরুণী বুধবার সন্ধ্যা থেকেই আত্নগোপনে রয়েছেন তার পরিবারের সদস্যরা জানান। ওই তরুণী বৃহস্পতিবারও মিথিলা আনজুম হিরা নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে দুপুরের ফেববুক লাইভে এসে ওই ছাত্রলীগ নেতা হিমেলের বিচার দাবী করেন। এ সময় ওই তরুণী মামলা থেকে কখনো সরে আসবে না বলেও উল্লেখ্য করেন।
বিভিন্ন সংবাদপত্রে ছাত্রলীগ নেতা এসএম জোবায়ের হিমেলের দেওয়া বক্তব্য প্রতিপক্ষরা আমাকে দিয়ে তার সম্মান নষ্ট করছে বলে যে বক্তব্য দিয়েছে তা সত্য নয়। আমার সাথে যে অসভ্যতা করেছে তার বিচার চাইতে থানায় অভিযোগ ও ফেসবুক লাইভে সচেতন মহলের কাছে সহযোগিতা চেয়েছি।