কুমিল্লায় ধর্ষণ মামলায় মো: নূরুল ইসলাম ও আব্দুর রহমানকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন কুমিল্লার আদালত।
মঙ্গলবার (২০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে এ রায় দেন কুমিল্লা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক আব্দুল্লাহ আল মামুন।
মামলার বিবরণে জানা যায়- প্রায় ৪ বছর আগে সাজাপ্রাপ্ত আসামি মো: নূরুল ইসলামের সাথে ভিকটিমের বিয়ে হয়। দাম্পত্য জীবনে এক কন্যা সন্তান রয়েছে তাদের।
ভিকটিমের স্বামী নুরুল ইসলাম প্রায়ই তার পরিচিত লোকজনের সাথে খারাপ কাজ করার জন্য স্ত্রীকে পরামর্শ দিতেন।
ভিকটিম উক্ত প্রস্তাবে রাজী না হলে তাকে তার স্বামী মারপিট করতো এবং তাকে তালাক দিয়ে বাবার বাড়ি পাঠিয়ে দেয়ার হুমকি দিতেন।
২০২০ সালের ১ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় ভিকটিম মাগরিবের নামাজ পড়ে তার বাচ্চাকে নিয়ে তসবিহ জপতে থাকাবস্থায় তার স্বামী মো: নূরুল ইসলাম উকিল বাবা আব্দুর রহমানকে ঘরে নিয়ে আসেন। এবং জোরপূর্বক স্ত্রীকে ধর্ষণ করান।
এ ঘটনায় ২০২০ সালের ৩ সেপ্টেম্বর ভুক্তভোগী বাদী হয়ে স্বামী মো: নূরুল ইসলাম (৩৩) ও একই থানাধীন সৈয়দপুর নিবাসী উকিল বাবা মো: আব্দুর রহমানকে আসামী করে ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন (সং/০৩) এর ৯(১)/৩০ ধারায় মামলা করেন।
পরবর্তীতে ঘটনা তদন্তপূর্বক আসামীদ্বয়ের সংশ্লিষ্ট ধারায় অপরাধ প্রাথমিকভাবে সত্য প্রমাণিত হওয়ায় গত বছর ২৬ এপ্রিল উল্লেখিত আসামীদের বিরুদ্ধে বিজ্ঞ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা ফারুক আহমেদ।
এরপর সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে স্বামী মো: নূরুল ইসলাম নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ এর ধারা ৯(১)/৩০-এ দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড এবং ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড এবং উকিল বাবা আব্দুর রহমানকে সংশ্লিষ্ট ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা অর্থ দণ্ডে দণ্ডিত করেন আদালত।
রায়ে উল্লেখ করা হয়, ধর্ষণের শিকার ভিকটিম অর্থদণ্ডের অর্থ ক্ষতিপূরণ হিসাবে প্রাপ্য হবেন। আসামী নূরুল ইসলাম ও আব্দুর রহমান অর্থ দণ্ডের ৬০ হাজার টাকা পরিশোধ না করলে উক্ত টাকা আদায়ের নিমিত্তে আসামীদ্বয়ের স্থাবর বা অস্থাবর সম্পত্তি নিলাম বিক্রয় করে বিক্রয়লব্ধ অর্থ ভিকটিমকে ক্ষতিপূরণ বাবদ পরিশোধ করার জন্য ডিস্ট্রিক্ট কালেক্টারকে নির্দেশ প্রদান করা হয়।
রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন- কুমিল্লা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর পিপি এডভোকেট প্রদীপ কুমার দত্ত। আসামী পক্ষে ছিলেন এডভোকেট মো: আতিকুল ইসলাম।