হালকা যান (মোটরসাইকেল ও প্রাইভেট কার) চালানোর লাইসেন্স নিয়ে দুর্ঘটনাকবলিত বাসটি চালাচ্ছিলেন মোহন খান। বাসটির চালক মোহন খানের ভারী যান চালানোর লাইসেন্স ছিল না। ‘বাশার স্মৃতি পরিবহন’ বাসটির চালক মোহন খান দুর্ঘটনার পর থেকে পলাতক।
ওই দুর্ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে গঠিত তদন্ত কমিটির এক সদস্য এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি বলেন, চালক মোহন খানের কাছে হালকা যান (মোটরসাইকেল ও প্রাইভেট কার) চালানোর লাইসেন্স ছিল। তিনি ২০২০ সালে বিআরটিএ বরিশাল সার্কেল থেকে হালকা যান চালানোর সেই লাইসেন্স পেয়েছিলেন। তবে ‘বাশার স্মৃতি পরিবহন’ বাসটি চালানোর লাইসেন্স তার ছিল না। তাই বাসটি চালানোর কথা ছিল না তার।
পুলিশ চালকের লাইসেন্স সংক্রান্ত কাগজপত্র সংগ্রহ করেছে। বাসের ফিটনেস এবং রোড পারমিটের কাগজপত্র হালনাগাদ ছিল বলে ওই কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে ঝালকাঠির ছত্রকান্দা এলাকায় যাত্রীবাহী বাস দুর্ঘটনাটি চালকের অসাবধানতার কারণে হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বাসটির যাত্রী আর বিআরটিএ কর্তৃপক্ষ। তাদের দাবি, বাস চালানোর সময়ে চালক কথা বলতে থাকায় এক পর্যায়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পাশের পুকুরে গিয়ে পড়ে ।
এ ছাড়া বাসটির বিতরে অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই ছিল।
ঘটনার তদন্তে ঝালকাঠির অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মামুন শিবলীর নেতৃত্বে ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটিতে বুয়েটের অ্যাক্সিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউট থেকে একজন নেওয়া হয়েছে। আগামীকাল সোমবার কমিটির ঘটনাস্থলে পরিদর্শনের কথা রয়েছে।
তদন্ত কমিটির প্রধান মামুন শিবলী সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তদন্ত কাজ চলমান থাকায় তিনি এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
বিআরটিএর মোটরযান পরিদর্শক অনিমেষ মণ্ডল বলেন, চালকের অসাবধানতার কারণেই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। যাত্রীদের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, বাসটি চালানোর সময়ও চালক কথা বলছিলেন। তার অসতর্কতার কারণেই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে তারা প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
তিনি আরো বলেন, বাসটি ঢাকা থেকে রেজিস্ট্রেশন ও তৈরি হলেও পরে বরিশালে এনডোর্স করা হয়েছিল। ২০১১ সালে তৈরি বাসটির রুট পারমিট ছিল। চালকের লাইসেন্স পেয়েছি, সেখানে অসঙ্গতি রয়েছে। তা যাচাই বাছাই করা হচ্ছে।
বিআরটিএ কর্তৃপক্ষের মতে, বাসটি পার্শ্ববর্তী পুকুরে পড়েই উল্টে যায়। এর ফলে যাত্রীদের অনেকে বের হতে না পারায় নিহতের সংখ্যা বেড়েছে। বাসের মালিক আবুল কালাম আকনের বাড়ি ঝালকাঠি জেলায়।
শনিবার (২২ জুলাই) সকাল ১০টার দিতে ছত্রকান্দা সংলগ্ন এলাকাতেই রাস্তার পাশে একটি পুকুরে পড়ে যায়। এতে তিন শিশু, আট জন নারী ও ছয় জন পুরুষ নিহত হয়েছেন। আর ২১ জন পুরুষ ও ১২ জন নারী আহত হয়েছেন।