টাঙ্গাইলের সখীপুরে ৭ বছরের শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠেছে মোর্শেদ (২০) নামে এক বখাটের বিরুদ্ধে। ধর্ষকের পরিবার স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী হওয়ায় ধর্ষিতার পরিবারকে বিভিন্ন ভাবে ভয় দেখিয়ে ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার ডিপোজিট করার বিনিময়ে সমাধান হতে বাধ্য করেছে বলে জানা যায়।
গত ২ ডিসেম্বর উপজেলার কাকড়াজান ইউনিয়নের মহানন্দপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত ওই যুবক ইউনিয়ন আ’লীগের সাবেক আহ্বায়ক ও বীরমুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফার ছেলে। ধর্ষক পুলিশের ভয়ে আত্ম গোপনে রয়েছে।
এলাকাবাসী জানান, ২ ডিসেম্বর (বুধবার) সন্ধ্যায় বখাটে মোর্শেদ (২০) মহানন্দপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রথম শ্রেনীতে পড়ুয়া শিশুটিকে বাড়িতে ডেকে নিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। ধর্ষণের শিকার গুরুতর আহত অবস্থায় শিশুর স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে সখীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে রেফার্ড করে। পরে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে গাইনী ডা: নিছফুন নাহার এর তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা নেয়। এ দিকে ধর্ষক মোর্শেদ পলাতক রয়েছে।
কয়েক দফা বৈঠক করে ধর্ষকের বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা, মাওলানা বায়েজিদ, বড়চওনা-কুতুবপুর কলেজের প্রভাষক আলা-আমিন, মনসুর আলীসহ আরো কয়েকজন মিলে শিশু ধর্ষিতার পিতা আবুল কাশেমকে জমি ও ১৮ হাজার টাকা নগদ দিয়ে বাকী ১ লক্ষ ৩২ হাজার টাকা ডিপোজিট করে দিবে এ শর্তে ধর্ষণের বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করে এমনকি মামলা করলে বা কাউকে জানালে হত্যার হুমকি দিয়েছে বলে জানান ধর্ষিতার মা রহিমা বেগম।
ধর্ষককের চাচা বড়চওনা-কুতুবপুর কলেজের প্রভাষক আল-আমিন বলেন, ঘটনা সত্য এ বিষয়ে ১৮ হাজার টাকা নগদ দিয়ে বাকী টাকার ডিপোজিট করে দেওয়া হবে। ধর্ষিতার বাবা বলেন, আমি গরীব মানুষ এখানেই আমি দূর্বল। আমার মেয়ের যে সর্বনাশ করেছে তার বাবা এ সমাজের প্রভাবশালী লোক স্থানীয় লোক যে ভাবে বলছে সে ভাবেই মেনে নিতে হয়েছে। আল্লাহ সঠিক বিচার একদিন করবেই।
মহানন্দপুর বিজয়স্মৃতি উচ্চ বিদ্যালয় সাবেক প্রধান শিক্ষক বীর মুক্তিযোদ্ধা শামছুল হক বলেন, ঘটনাটি অতি নেক্কারজনক। ধর্ষণের অভিযুক্ত মোর্শেদের বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা আমার কাছে আসছিল। সামাজিক ভাবে কয়েকদফায় বসে বিয়ষটি মীমাংসা করার চেষ্টা চলছে। মেয়ে বাবা অতি দরিদ্র হওয়ায় ছেলে পক্ষ মেয়ে পক্ষকে ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার ডিপোজিট করে দিবে।
তিনি আরোও বলেন, ছেলের পক্ষ থেকে কিছু দিন সময় নিয়েছেন। মেয়ের বাবার কিছু জমি বেদখল করে আবাদ করে আসছিল ওই ধর্ষকের বাবা। সে বিষয়েও কোন হস্তক্ষেপ করবে না এমন শর্তে সমাধান হয়।
কাকড়াজান ইউনিয়নের নব নির্বাচিত চেয়ারম্যান দুলাল হোসেন মোবাইল ফোনে বলেন, এ ঘটনার সমাধান হয়েছে কিন্তু কোন শর্তে সমাধান হয়েছে জানি না। সখীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একে সাইদুল হক ভূইয়া বলেন, এ ঘটনার এখন পর্যন্ত কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Discover more from MIssion 90 News
Subscribe to get the latest posts to your email.