আগামীকাল শুক্রবার (৪ ফেব্রুয়ারি) চীনের রাজধানী বেইজিংয়ে শুরু হতে যাচ্ছে শীতকালীন অলিম্পিক। এবারের অলিম্পিক এখন পর্যন্ত অনুষ্ঠিত সবচেয়ে নিয়ন্ত্রিত আন্তর্জাতিক খেলার আসর হতে যাচ্ছে বলে বিবিসি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে। ইতোমধ্যে অলিম্পিকে অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন দেশের খেলোয়াড়, স্টাফ ও সংবাদকর্মীরা বেইজিংয়ে পৌঁছেছেন। করোনাভাইরাস যেন ছড়াতে না পারে সেজন্য সর্বত্রই জীবাণুনাশক ছিটানো হচ্ছে। এছাড়া পানীয় পরিবেশনে ব্যবহৃত হচ্ছে রোবট। সবার জন্য রয়েছে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রিত ঘুমের পড। আগামী কয়েক সপ্তাহ তারা এখানেই থাকবে।
পুরো পরিকল্পনার কেন্দ্রবিন্দু হল ক্লোজড লুপ বা ১০০ মাইল বিস্তৃত নির্ধারিত একটি অঞ্চল যেখানে আনুমানিক ৬০০০০ ক্রীড়াবিদ, কর্মকর্তা, সংবাদকর্মী, স্বেচ্ছাসেবকরা থাকবেন৷ তারা এর বাইরে বের হতে পারবেন না এবং বাইরের কেউ এই অঞ্চলে প্রবেশ করতে পারবে না। বেইজিং অলিম্পিকের এই আসরটিকে কেন্দ্র ১৬০ কিলোমিটার (১০০ মাইল) এলাকা জুড়ে ‘বাবল এলাকা’ গঠিত হয়েছে। বিস্তৃত এই অঞ্চলটি তিনটি প্রধান গেট দ্বারা সংযুক্ত। এর মধ্যেই আছে হোটেল, কনফারেন্স সেন্টার, ডরমিটরি থেকে সবকিছু। বাবল এলাকার এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় যাওয়ার জন্য আছে বাস ও ট্রেন।
গত বছর জাপানের টোকিও অলিম্পিকে প্রমাণ হয়েছে যে, করোনা মহামারীর যুগেও একটি সীমিত জায়গায় অলিম্পিক অনুষ্ঠিত হতে পারে। তবে চীন একটি বিশাল এলাকা তৈরি করে গোটা বিশ্বকে অবাক করে দিয়েছে।
যেভাবে কাটবে অলিম্পিকের রোবটিক জীবন
বিবিসি এক প্রতিবেদনে বর্ণনা করেছে যে, অংশগ্রহণকারীদের তাদের নিজস্ব রুম এবং খাওয়ার সময় বাদে সর্বত্রই একটি মাস্ক পরে থাকতে হবে এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। প্রত্যেকেরই প্রতিদিন একবার পিসিআরে সোয়াব টেস্ট করা হবে। যা অলিম্পিকের হেলথ অ্যাপে রেকর্ড থাকবে। বিবিসির প্রযোজক প্রতিক্ষা ঘিলদিয়াল বলেন, কেউ করোনা পজেটিভ হলেই কেবল খবর জানতে পারবে। এখন পর্যন্ত অলিম্পিকে যোগ দেয়া কয়েক হাজার লোকের মধ্যে প্রায় ৩০০ জনের দেহে করোনার উপস্থিতি পাওয়া গেছে। শনাক্তদের আইসোলেশনে নেয়া হয়েছে। তারা করোনামুক্ত হলেই ফের যোগ দিতে পারবেন। চীনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তাদের লক্ষ্য এটা নয় যে, কেউই আক্রান্ত হবে না, তাদের পরিকল্পনা হচ্ছে আক্রান্তদের থেকে যেন এটা না ছড়ায়।
ধর্মীয় স্থানগুলোতেও পরিচ্ছন্নকর্মীরা সর্বদা উপস্থিত থাকছে এবং রোবটগুলো ফ্লোরসহ সর্বত্র জীবাণুনাশক স্প্রে করছে। প্রেস কনফারেন্সের সময়ও একজন স্বেচ্ছাসেবক একটি প্রশ্নের পরপরই মাইক্রোফোনটি মুছে দেন। ক্রীড়া ভেন্যুগুলোর চারপাশের ঘুমানোর পডগুলো প্রতিবার ঘুমানোর পর পরিষ্কার করা হচ্ছে৷ ঘিলডিয়াল এক প্রতিবেদনে বলেছেন, গোলাপী এবং সাদা রোবটগুলোকে মানুষের চেয়েও বেশি দক্ষ মনে হচ্ছে। আমার সহকর্মীরা একটি রোবটকে কিছু আনতে নির্দেশ দিয়েছিল, আর আমি একজন মানুষকে বলেছিলাম। আমার অর্ডারের চেয়ে অনেক দ্রুত পরিবেশিত হয়েছে রোবটকে দেয়া আমার সহকর্মীদের অর্ডার।