ইসলাম

পশ্চিমী সংস্কৃতিকে টেক্কা দিয়ে বিশ্বজুড়ে বাড়ছে হিজাবের জনপ্রিয়তা

দুনিয়া জুড়ে যখন পশ্চিমী সংস্কৃতির প্রসারণ ঘটে চলেছে, বেড়ে চলেছে খোলামেলা পোশাকের জনপ্রিয়তা ঠিক তার সাথে সাথে বেড়েই চলেছে হিজাব পরিহিত নারীর সংখ্যা। রুচিসম্মত ওহ মানানসই অথচ মার্জিত ও শালীন পোশাক হিজাবের প্রতি রয়েছে নারীদের ব্যাপক আকর্ষণ ও সমর্থন। শুধু মুসলিম সমাজ বলে না হিজাব আকর্ষিত করেছে বহু অমুসলিম সম্প্রদায়ের নারীকেও।

ইসলামী সংস্কৃতি ও সভ্যতার ও পর্দার প্রতীক হিজাব! হিজাব মুসলিম জাতির কাছে সম্মান! কারণ পর্দা করা ইসলাম শিক্ষা অনুযায়ী আসমানী কুদরতের একটা। মহান রাব্বুল আলামীন সমগ্র নারী জাতিকে পর্দার নির্দেশ দিয়েছে। ধর্মীয় অনুশাসন মেনে নিজেদের সম্মান এবং মর্যাদা রক্ষার ত্যাগীদে মুসলিম বিশ্বে এই পোশাকটির রয়েছে বিশেষ মর্যাদা। মুসলিম নারীদের পছন্দের পোশাক এর মধ্যে একটা হলো হিজাব। এ হিজাবকে স্মরণে রেখে এবং পর্দার ব্যাপারে ইসলামী বিধান অনুসরণকারী সব মুসলিম নারীদের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টির জন্য গত কয়েক বছর ধরে নিউ ইয়র্কে নানা রকমের কর্মসূচির মধ্য দিয়ে পালিত হচ্ছে ‘বিশ্ব হিজাব দিবস’। এরই ধারাবাহিকতা বিগত ১ ফেব্রুয়ারি ২০২২, নিউ ইয়র্কে পালিত হয়েছে ‘বিশ্ব হিজাব দিবস’।

‘হিজাব ইজ আওয়ার ক্রাউন, নট অ্যা ক্রাইম’ ( HIZAB IS OUR CROWN, NOT A CRIME) বা ‘হিজাব আমাদের মুকুট, কোনো অপরাধ নয়’-এই প্রতিপাদ্য নিয়ে এবার উদযাপিত হয়েছে দিনটি। মুসলিম জাতির কাছে বিশেষত নারীদের কাছে হিজাব হলো সম্মানের। হিজাব তাদের কাছে ডিগনিটি।

২০১৩ নাজমা খান নামক এক বাংলাদেশী ছাত্রী তার মুসলিম পোশাক আসাক কারণে জ্যামাইকায় হেনস্তার স্বীকার হন। ওই ঘটনার নিন্দা প্রতিবাদ এবং সর্ব সাধারণকে সচেতন করার জন্য হিজাব দিবস পালন শুরু হয়। আর তখন থেকেই একই চেতনায় দিবসটি পালিত হয়ে আসছে। কারণ এই ২১ শতকেও মানুষ জাত পাত ধর্ম বর্ণ পোশাক আশাক নিয়ে বৈষম্য করে। ফলস্বরূপ হেনস্থার স্বীকার হয় বহু পড়ুয়া, পদযাত্রী প্রমুখ।

বিশ্ব হিজাব দিবস উপলক্ষে ফেসবুকের (যোগাযোগ মাধ্যমের অন্যতম প্ল্যাটফর্ম) ‘ওয়ার্ল্ড হিজাব ডে’র ফ্যান পেজে ( WORLD HIZAB DAY FAN PAGE) নিজেদের হিজাব-অনুভূতি ও মন্তব্য নিয়ে নানান মন্তব্য অনুভূতি পোস্ট করেন হিজাব প্রেমীরা। হিজাব পরে ছবি আপলোডও করছেন তারা। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সব দেশের সব বয়সের নারীই তাদের অনুভূতি শেয়ার করেছেন কোটি মানুষের সঙ্গে।

যখন প্রসঙ্গ হিজাব এর তাহলে আসুন জেনে নি হিজাব কি? কি ভাবে তার উৎপত্তি?

হিজাব হলো এক ধরনের স্কার্ফ বা একটি নেকাব যা মাথা থেকে বুক পর্যন্ত ঢেকে রাখে, বয়ঃসন্ধি বয়স থেকে মুসলিম নারীদেরকে তার পরিবার হতে আদেশ দেওয়া হয় হিজাব পড়ার জন্য। হিজাব পড়ার মূল উদ্দেশ্য হলো বাহিরের,ও ঘরের প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষের প্রত্যক্ষতা এড়াতে এটি ব্যবহার করা হয়। শুধু মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে না হিজাব অমুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যেও অনেক ছড়িয়ে  গেছে।

হিজাব নিয়ে ইসলামিক দৃষ্টি-

আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘(হে নারীগণ!) তোমরা ঘরের মধ্যে অবস্থান করবে, অজ্ঞতার যুগের নারীদের মত নিজেদের প্রদর্শন করবে না। আর নামায প্রতিষ্ঠা করবে, জাকাত আদায় করবে এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের আনুগত্য করবে।’ (সুরা আহযাব: আয়াত ৩৩)

এছাড়াও অনেক ব্যাখ্যায় বলা হয় আল্লাহ রাব্বুল আলামীন সর্ব জাহানের মালিক তার প্রিয় হাবিবকে অন্য আয়াতে নির্দেশ দিয়ে বলেন, ‘হে নবি! আপনি আপনার স্ত্রী দের, কন্যাদের এবং মুমিন নারীদের বলে দিন, তারা যেন তাদের চাদরের কিয় দাংশ নিজেদের ওপর টেনে দেয়।’

অনেক জায়গায় এটা ফ্যাশন হয়ে গেছে, রোদ ধুলো বালি থেকে বাঁচার জন্য অনেকেই হিজাব পরে। কিন্তু শুধু তাই নয় আবার অনেক দেশে হিজাব নিষিদ্ধ হয়ে গেছে। ইউরোপের অনেক দেশেই হিজাব নিষিদ্ধ এবং হিজাব পরিধান করলে জরিমানা পর্যন্ত হয়। সে নিয়ে বিতর্কের অন্ত নেই। সব কিছুর পরেও হিজাব পরিধান করা কেউ বন্ধ করতে পারেনি। আর পারবেও না ইন শা আল্লাহ। বরং হিজাব পরিধান দিনের পর দিন বেড়েই চলেছে ক্রমশ। কারণ এটি ইসলাম জাতির কাছে গর্ব।


Discover more from MIssion 90 News

Subscribe to get the latest posts to your email.

সম্পর্কিত সংবাদ

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

এছাড়াও পরীক্ষা করুন
Close
Back to top button

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker