বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ

বিএনপি আমলে জনগণ বিদ্যুৎ পায়নি, পেয়েছিলো খাম্বা: ওবায়দুল কাদের

‘লোডশেডিং এর কারণে সরকারের পতন হবে’, – বিএনপি নেতাদের এমন রঙিন খোয়াব অচীরেই দুঃস্বপ্নে পরিণত হবে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

এ সময় তিনি বলেন, বিএনপি আমলে জনগণ বিদ্যুৎ পায়নি, পেয়েছিলো খাম্বা।

মঙ্গলবার (১৯ জুলাই) সকালে তার বাসভবনে ব্রিফিংকালে বিএনপি নেতাদের বিভিন্ন উস্কানিমূলক বক্তব্যের প্রতিবাদে এসব মন্তব্য করেন সেতুমন্ত্রী।

বিদ্যুৎ নিয়ে বিএনপি নেতাদের কথা বলা প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের পাল্টা প্রশ্ন রেখে বলেন, বিদ্যুৎ নিয়ে বিএনপি কোন মুখে বড় কথা বলে? তাদের কি বিন্দুমাত্র লাজ-শরম নেই?

যারা দেশকে অন্ধকারে নিমজ্জিত করেছিলো, দিনের পর দিন যাদের শাসনামলে দিনের অর্ধেক সময় লোডশেডিং চলতো, শিল্প কারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছিলো, তারা আজ বিদ্যুৎ নিয়ে কথা বলে। বিএনপি নেতাদের এসব স্মরণ করিয়ে দিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, জনগণ বিদ্যুৎ সংযোগহীন খাম্বা দুর্নীতির কথা এখনো ভুলে যায়নি। ভুলে যায়নি বিদ্যুৎ এর দাবিতে মিছিলে গুলির কথা, হারিকেন-কুপি নিয়ে বিক্ষোভ এবং বিদ্যুৎ ভবব ঘেরাও করার কথা।

করোনার কারণে সারা পৃথিবীর অর্থনৈতিক কর্মকান্ড ব্যাহত হয়েছে, বাংলাদেশেও করোনার করাল গ্রাসের সঙ্গে সংগ্রাম করেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদক্ষ নেতৃত্বে নিজেদের অর্থনীতিকে সচল রেখেছে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, সাম্প্রতিকালে রাশিয়া -ইউক্রেন যুদ্ধ এবং এর আন্তর্জাতিক পরিণতি বিশ্বের অনেক দেশের মতো বাংলাদেশের অর্থনীতিকে আবারও কিছুটা হুমকির মুখে ফেলেছে।

ওবায়দুল কাদের জানান, যুদ্ধের প্রভাবে জ্বালানি মার্কেট চরম অস্থিতিশীল হয়ে উঠেছে, এই পরিস্থিতিতে দেশের অর্থনীতি যাতে বড় কোন ক্ষতির সম্মুখীন না হয় সে লক্ষ্যে সরকারকে আগেভাগেই কিছু সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতে হবে।

জাপানের মত উন্নত ও অর্থনৈতিক ভাবে সমৃদ্ধ দেশও তাদের সাড়ে তিন কোটির বেশি মানুষকে নিয়মিত বিদ্যুৎ সুবিধা দিতে পারছে না, একই অবস্থা অস্ট্রেলিয়ারও এমনটা জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, তাই সবাইকে এই সংকটকালীন সময়ে রেশনিং করতে হচ্ছে।

তিনি বলেন, যুক্তরাজ্যে জাতীয় জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে, উন্নত রাষ্ট্র আমেরিকাতেও এসএমএস এর মাধ্যমে জনগণকে এনার্জির ব্যবহার লিমিট করতে বলা হয়েছে।

বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য ১৩০০-১৪০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের প্রয়োজন, সেখানে শিল্প ও কৃষি খাতকে অগ্রাধিকার দিয়ে ১০০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস বিদ্যুৎ উৎপাদন খাতে সম্ভব হবে বলেও জানান সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী।

দেশের অর্থনীতি ও কর্মসংস্থানকে চাঙা রাখার লক্ষ্যে সরকার শিল্প কারখানায় নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করছে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিশ্বব্যাপী পরিবর্তিত সংকটময় পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় ও বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যয় সরকার ও জনগণের সাধ্যের মধ্যে রাখার লক্ষ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদন কমিয়ে এবং রেশনিং এর মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহ অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।

দেশ ও জনগণের কল্যাণে সরকার কর্তৃক গৃহীত এবং গৃহীতব্য ব্যবস্থার সঙ্গে সকলকে এগিয়ে আসার আহবান জানান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

সাময়িক এ অসুবিধায় ধৈর্য ধরার এবং সহযোগিতা করার জন্য দেশবাসীকে আহবান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, যিনি সংকটকে সম্ভাবনায় রূপ দেন তার ওপর অতীতে যেমন আস্থা রেখেছেন, এখনও রাখুন।

ওবায়দুল কাদের কারো কথায় কান না দেওয়ার আহবান জানিয়ে বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অল্প সময়ের মধ্যেই এ সংকট থেকে উত্তরণ হবে।

সম্পর্কিত সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button