রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজারে বিস্ফোরণে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনটিতে আজ আবার উদ্ধার অভিযান চলবে। গতকাল মঙ্গলবার রাত পৌনে ১১টার দিকে এই তথ্য জানান ফায়ার সার্ভিসের ঢাকা বিভাগীয় উপপরিচালক দিনমনি শর্মা।
দিনমনি শর্মা বলেন, ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে গেছে। এ অবস্থায় ভবনের ভূগর্ভে উদ্ধারকাজ চালানো সম্ভব নয়। তাই উদ্ধারকাজ আপাতত স্থগিত করা হয়। আজ বুধবার সকালে সেনাবাহিনী আসবে, তারপর উদ্ধার কাজ শুরু হবে।
আরও পড়ুন: ‘আহারে, একটা সংসার শেষ হয়ে গেল’
এর আগে গতকাল মঙ্গলবার (৭ মার্চ) বিকেল পৌনে ৫টার দিকে হঠাৎ বিকট শব্দে বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে এলাকাটি। জানা গেছে, পাশাপাশি দুটি বহুতল ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। একটি ভবন সাততলা এবং আরেকটি ভবন পাঁচতলা। এর মধ্যে সাততলা ভবনের বেসমেন্ট, প্রথম ও দ্বিতীয় তলা বিধ্বস্ত হয়েছে। আর পাঁচতলা ভবনের নিচতলাও বিধ্বস্ত হয়েছে। এই ভবনের দ্বিতীয় থেকে পঞ্চম তলা পর্যন্ত ব্র্যাক ব্যাংকের কার্যালয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিকট শব্দে বিস্ফোরণের সঙ্গে সঙ্গে চারদিক ধোঁয়ায় ছেয়ে যায়। বিস্ফোরণে ইট-পলেস্তারা, কাঠের টুকরো বহু দূর পর্যন্ত ছিটকে পড়ে। এতে অনেকে আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে অনেকের অবস্থা গুরুতর।
ফায়ার সার্ভিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (মিডিয়া সেল) মো. শাহজাহান শিকদার বলেন, খবর পেয়ে প্রাথমিকভাবে ফায়ার সার্ভিসের পাঁচটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধারকাজ শুরু করে। পরে তাদের সঙ্গে আরো ছয়টি ইউনিট যোগ দেয়। এসি বিস্ফোরণ থেকে এ ঘটনা ঘটতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে বলেও জানান ফায়ার সার্ভিসের এই কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন: বিস্ফোরণের ঘটনায় মাথায় আঘাত ও রক্তক্ষরণে বেশি মৃত্যু : স্বাস্থ্যমন্ত্রী
বিস্ফোরণে নিহত ১৮ জনের লাশ ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আনা হয়। এদের মধ্যে ১৭ জনের নাম-পরিচয় হাসপাতালের রেকর্ড বইয়ে নথিভুক্ত রয়েছে।
বিস্ফোরণে নিহতরা হলেন- মো. সুমন (২১), ইসহাক মৃধা (৩৫), মুনসুর হোসেন (৪০), মো. ইসমাইল (৪২), আল আমিন (২৩), রাহাত (১৮), মমিনুল ইসলাম (৩৮), নদী বেগম (৩৬), মাঈন উদ্দিন (৫০), নাজমুল হোসেন (২৫), ওবায়দুল হাসান বাবুল (৫৫), আবু জাফর সিদ্দিক (৩৪), আকুতি বেগম (৭০), মো. ইদ্রিস (৬০), নুরুল ইসলাম ভুঁইয়া (৫৫), হৃদয় (২০), সম্রাট ও সিয়াম (১৮)।
আরও পড়ুন: বিস্ফোরণস্থল ঘিরে রেখেছেন নিরাপত্তাকর্মীরা
বিস্ফোরণের পরই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন ডিএমপি কমিশনার কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুকসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। এরপর কাজ শুরু করেছে বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট। কোনো নাশকতা থেকে বিস্ফোরণ, নাকি গ্যাস জমে বিস্ফোরণ হয়েছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, অনেক সময় মিথেন গ্যাস, এসির গ্যাস বা পয়োঃগ্যাস জমে এমন বিস্ফোরণ হতে পারে। এখন এটা নাশকতা না দুর্ঘটনা, তা আমাদের দায়িত্বরত বিশেষজ্ঞ দল তদন্ত শেষ করে বিস্তারিত বলতে পারবেন।