তেলের দাম বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে ভাড়া সমন্বয় করার দাবিতে দেশের বিভিন্ন জেলায় বন্ধ রয়েছে গণপরিবহন। পূর্বনির্ধারিত ঘোষণা ছাড়া এমন সিদ্ধান্তে ভোগান্তিতে পড়তে হয় যাত্রীদের।
উপায় না থাকায় বিকল্প ব্যবস্থায় বেশি ভাড়া দিয়ে অনেককে যেতে হয়েছে গন্তব্যে। সেই সঙ্গে ভাড়া নিয়ে যাত্রীদের সঙ্গে বাস কর্মীদের কথা কাটাকাটির অভিযোগও পাওয়া গেছে।
বন্দরনগরী চট্টগ্রামে ঢাকার পরেই গণপরিবহনের ব্যবহার সবচেয়ে বেশি। সেখানেই তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় শনিবার সকালে গণপরিবহন বন্ধ রাখেন বাস মালিকদের বিভিন্ন সংগঠন।
এতে ভোগান্তিতে পড়তে হয় শিক্ষার্থীসহ, অফিসগামীদের। বাস না থাকার সুযোগ বুঝে বাড়তি ভাড়া আদায় করেছেন সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও রিকশার চালকরা।
পরে তেলের নতুন দামের সঙ্গে ভাড়া সমন্বয়ের দাবিতে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করে গণপরিবহন শ্রমিকরা। দুপুরের পর বিআরটিএ কর্তৃপক্ষ দাবি বিবেচনার আশ্বাস দিলে স্বাভাবিক হয় পরিস্থিতি।
জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর পর খুলনায় গণপরিবহনে বাড়তি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
যাত্রীদের অভিযোগ, কোনো ঘোষণা ছাড়াই ভাড়া বাড়ানো হয়েছে। মহামারীর ক্ষতি এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেনি অনেকেই। এরই মধ্যে তেলের মূল্য বৃদ্ধি ভোগান্তি আরও বাড়াবে।
শনিবার সকালে কুমিল্লা থেকে চট্টগ্রামগামী বাসে বাড়তি ভাড়া আদায় করতে দেখা গেছে। এক দিন আগে কুমিল্লা থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে যাওয়া বাসের ভাড়া ছিলো ২৪০টাকা।
কিন্তু ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে সেই ভাড়া নেয়া হচ্ছে ২৯০ টাকা। জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির খবরে পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই বাড়তি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে।
বাস কর্মীরা জানান, ডিজেলের দাম বাড়ায় ভাড়া বাড়ানো হয়েছে। অপরদিকে বাস ধর্মঘট চলায় চট্টগ্রামে আটকা পড়ে গাড়িগুলো। তাই চট্টগ্রামগামী বাসের সংকট তৈরি হয়েছে।
এদিকে, বগুড়ার চারমাথা ও ঠনঠনিয়া বাস টার্মিনাল থেকে ছেড়ে যায়নি দূরপাল্লা ও অভ্যন্তরীণ রুটের বাস। বাস বন্ধ থাকায় চালকেরা কাটিয়েছেন অলস সময়।
জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার পর কোনো ধরনের ঘোষণা ছাড়াই রংপুরে এসি ও নন-এসি বাসের ভাড়া বাড়ানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে।
শনিবার সকালে নগরীর কামারপাড়া ঢাকা বাসস্ট্যান্ডে যাত্রীরা অভিযোগ করেন, দূরপাল্লার বাসের টিকিট নিতে তাদের বেশি টাকা দিতে হচ্ছে।
শনিবার সকাল থেকে চারমাথা আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল, শহরের হাড্ডিপট্টি বাস টার্মিনাল, ঠনঠনিয়া কোচ টার্মিনালে একই চিত্র দেখা গেছে।
স্বাভাবিক সময়ে এসব টার্মিনালে বাস ও যাত্রীদের ভিড় থাকলেও সকাল থেকে টার্মিনালগুলো অনেকটাই ফাঁকা।
অন্যদিকে গোপালগঞ্জে ফিলিং স্টেশনগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এতে তেল নিতে আসা মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন যানবাহনের ব্যাপক চাপ সৃষ্টি হয়।
এসময় অধিক মুনাফার আশায় মুহূর্তেই তেল শূন্য ঘোষণা করে ফিলিং স্টেশনগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন যানবাহন মালিকরা।
রাত ১২ টা থেকে ডিজেল, পেট্রল ও অকটেনের দাম বৃদ্ধি কার্যকর হওয়ার খবর পেয়ে কয়েকটি পাম্প ছাড়া জালানি তেল বিক্রি বন্ধ করে দেয় নোয়াখালীর বিভিন্ন ফিলিং স্টেশন।
এ সময় ভারি যানবাহনসহ বিভিন্ন বাইকাররা শহরের বিভিন্ন ফিলিং স্টেশন ঘুরে তেল না পেয়ে ভোগান্তির শিকার হতে থাকে।
জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার খবরে রাতে পটুয়াখালীতে পেট্রোল পাম্পগুলোতে উপচে পড়া ভিড় জমে মোটরবাইকের। নানা অজুহাত দেখিয়ে গ্রাহকদের বিলম্ব করায় পাম্পের বিক্রয় কর্মীরা।
নরসিংদীতে বাস বন্ধ থাকায় কাউন্টারে এসে ফিরে যেতে হয় যাত্রীদের। গ্যাসে চালিত গাড়ী রাস্তায় চলাচল করলেও যাত্রীদের দিতে হয় দ্বিগুণ ভাড়া।
পর্যটন এলাকা রাঙ্গামাটি ও খাগড়াছড়িতে বাস বন্ধ থাকায় দুর্ভোগে পড়েন পর্যটকসহ সব শ্রেণি-পেশার মানুষ। সেখানে ফেরত দেয়া হয়েছে আগাম টিকিটও।
সারা দেশের ন্যায় সিরাজগঞ্জেও তেলের মূল্য বৃদ্ধির ফলে পাম্পে তেল নিতে আসা গ্রাহকদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা যায়।
সরকার ঘোষিত তেলের মূল্য বৃদ্ধির কারণে সিরাজগঞ্জের পাম্পগুলোতে রাতে গ্রাহকদের উপচে পড়া ভিড় থাকলেও সকালে তা পুরোটাই স্বাভাবিক রয়েছে।
Discover more from MIssion 90 News
Subscribe to get the latest posts to your email.