জাতীয়

অকৃতকার্য হওয়া শিক্ষার্থীদের অপরাধ না: প্রধানমন্ত্রী

এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের আবারও সুযোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যারা কৃতকার্য হয়েছে তাদের অভিনন্দন জানাই। যারা হতে পারেনি, আমি মনে করি, একটা অস্বাভাবিক পরিবেশের মধ্যে পরীক্ষা হয়েছে। সেখানে শিক্ষার্থীদের কোনো দোষ নেই। অভিভাবকদের বলবো, শিক্ষার্থীদের জন্য আপনারা সুযোগ করে দেবেন। অকৃতকার্য হওয়া তাদের কোনো অপরাধ না। এটা বিশ্বব্যাপী এই সমস্যা হচ্ছে। শুধু বাংলাদেশ না, সারা বিশ্বে করোনা অতিমারির কারণে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আগামী দিনে আমাদের ছেলে-মেয়েরা আরও ভালো করে পড়াশোনা করবে এবং আগামীতে কৃতকার্য হবে সেই আশা আমি পোষণ করি।

আজ রোববার দুপুরে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ ফলাফল ঘোষণার আগে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৯৬ থেকে ২০০১ পর্যন্ত আমরা যখন সরকারে ছিলাম, আমরা একটা বিশেষ প্রকল্প নিয়েছিলাম যে নিরক্ষরতামুক্ত বাংলাদেশ গড়বো। সেই প্রকল্পের আওতায় আমরা প্রতিটি জেলাকে উৎসাহিত করছিলাম, বয়স্ক শিক্ষা, মসজিদভিত্তিক শিক্ষাকে। কারিগরি শিক্ষার ওপরে আমরা জোর দেই। অল্প সময়ে ৬৫ দশমিক ৫ ভাগে আমরা স্বাক্ষরতার হারকে উন্নীত করতে সক্ষম হই। ২০০১ সালে আমরা ক্ষমতায় আসতে পারিনি। ২০০৮ সালে নির্বাচনে জয়ী হয়ে যখন ২০০৯ সালে সরকারে আসি তখন দেখি, ৬৫ ভাগ থেকে সেটা আবার নিচে নেমে গেছে। আবার আমরা সেই পূর্বের জায়গায় ফিরে গেছি। আজ বাংলাদেশে শিক্ষার হার ৭৫ ভাগে উন্নীত করতে আমরা সক্ষম হয়েছি।

তিনি বলেন, করোনাভাইরাস শুধু বাংলাদেশ না, বিশ্বব্যাপী সমস্যার সৃষ্টি করেছে। নতুন এসেছে ওমিক্রন। আরেকটা নতুন ধরন। করোনাকালেও অনলাইনে বা টেলিভিশনের মাধ্যমে শিক্ষা কার্যক্রম সীমিত আকারে আমরা চালু রাখতে সক্ষম হই, কারণ ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলা আমাদের নির্বাচনী ইশতেহারে ঘোষণা ছিল। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলার কারণেই আমরা অনলাইনে বা টেলিভিশনের মাধ্যমে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যেতে সক্ষম হই। তবু আমি বলবো, করোনাভাইরাসে সব থেকে ক্ষতিগ্রস্ত আমাদের শিক্ষার্থীরা। একটা শিক্ষার্থী স্কুলে যাবে, কলেজে যাবে, বিশ্ববিদ্যালয়ে যাবে। শিক্ষার পরিবেশ থাকবে, তারা লেখাপড়া শিখবে, বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে মিশবে। তাদের জীবনটা একটা সুন্দর জীবন হয়। বর্তমান যুগে আসলে পরিবারগুলো ছোট, যার কারণে একাকীত্বে ভুগতে হয়েছে অনেক শিক্ষার্থীকে বা সঠিকভাবে পড়াশোনার সুযোগ হয়নি। অনলাইনে আমরা শিক্ষার ব্যবস্থা করেছি বা টেলিভিশনের দিয়ে দিয়েছি সেটা ঠিক, কিন্তু স্কুলে গিয়ে একটা সুন্দর পরিবেশ বা কলেজে যেয়ে বন্ধু-বান্ধবদের নিয়ে চলা সেই আনন্দটা থেকেই তারা বঞ্চিত ছিল।

যখনই আমরা করোনাকে নিয়ন্ত্রণে আনতে পেরেছি, আবার আমরা স্কুলগুলোকে চালু করেছিলাম। দুর্ভাগ্য হলো যে, আবার নতুন করে যে সংক্রমণ দেখা দিলো, ২০২১ সালের ১২ সেপ্টেম্বর থেকে সরাসরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম শুরু করি। ২০২২ সালে এসে ফেব্রুয়ারি মাস থেকে আবার ওমিক্রনের নতুন যে সংক্রমণ, আবার মানুষের মৃত্যু হচ্ছে, আবার মানুষ সংক্রমিত হচ্ছে। যে কারণে আবার বন্ধ করে দিতে হলো। আমি আশা করি, আমরা দ্রুত সমাধান করতে পারবো। আমরা টিকাও দিচ্ছি। যেসব ছেলে-মেয়ে ১২ বছরের উপরে তাদেরও টিকা দেওয়া শুরু করেছি। টিকা নেওয়ার ব্যাপারে অনেকের অনীহা থাকে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো যাতে খুলতে পারি, সে জন্য টিকা কার্যক্রম চলছে। এ মাসের শেষের দিকে হয়তো অবস্থার পরিবর্তন হবে। সে সময় আমরা স্কুল-কলেজ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আবার খুলে দিতে পারবো, বলেন প্রধানমন্ত্রী।


Discover more from MIssion 90 News

Subscribe to get the latest posts to your email.

সম্পর্কিত সংবাদ

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Back to top button

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker