বিতর্কিত মন্তব্য করে তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রীর পদ হারানো ডা: মুরাদ হাসান তাঁর লাইসেন্স থাকা দুটো আগ্নেয়াস্ত্র ধানমণ্ডি থানায় জমা দিয়েছেন। এ ছাড়া তাঁর ডাক্তার স্ত্রীও একটি অস্ত্র জমা দিয়েছেন। আগ্নেয়াস্ত্রগুলোর মধ্যে একটি শটগান ও একটি পিস্তল ডা: মুরাদ হাসানের নামে। আরেকটি শটগান রয়েছে তাঁর স্ত্রীর নামে। অন্যদিকে মুরাদ হাসানের বিরুদ্ধে ধানমণ্ডি থানায় দায়ের করা জিডির তদন্তের জন্য আদালতে অনুমতির আবেদন করেছিল পুলিশ। গতকাল সেই আবেদন মঞ্জুর করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্র জানায়, ডা: মুরাদের বিরুদ্ধে মারধর ও হুমকির অভিযোগ এনে গত ৬ জানুয়ারি তাঁর স্ত্রী একটি জিডি করেন ধানমণ্ডি থানায়। হুমকি ও মারধরের অভিযোগ থাকায় তাঁদের কাছে থাকা লাইসেন্স করা অস্ত্রগুলো জমা চায় পুলিশ। পরে স্বামী-স্ত্রী দুজনই গত শনিবার ধানমণ্ডি থানায় তিনটি অস্ত্র জমা দেন বলে ধানমণ্ডি থানার ওসি ইকরাম আলী আজ রবিবার বিকেলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন।
ইকরাম আলী জানান, ডা: মুরাদের স্ত্রী তাঁর বিরুদ্ধে নির্যাতন ও প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগে একটি জিডি করেছেন, তাই তাঁর নিরাপত্তা নিশ্চিতে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে ডা: মুরাদের নামে লাইসেন্স করা অস্ত্রগুলো থানায় জমা দিতে বলা হয়। থানার নির্দেশনা অনুযায়ী তিনি শনিবার এসে দুটি অস্ত্র জমা দিয়ে যান। এছাড়া ডা: মুরাদের স্ত্রীকেও তাঁর লাইসেন্স করা অস্ত্র জমা দেওয়ার কথা বললে তিনিও শনিবার অস্ত্র জমা দিয়ে গেছেন। স্বামী-স্ত্রী দুজনে তিনটি অস্ত্র জমা দিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘যেহেতু জিডিতে নিরাপত্তাজনিত বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে তাই আমরা অস্ত্রগুলো জমা নিয়েছি। বিষয়টি নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত তাঁদের অস্ত্রগুলো থানায় জমা থাকবে।’
পুলিশ সূত্র জানায়, থানায় জিডি করার সময় তাঁর স্ত্রী মারধরের সপক্ষে কোনো মেডিক্যাল সার্টিফিকেট জমা দেননি। এসব কারণে জিডিটিকে ননকগনিজেবল হিসেবে ধরা হয়েছে। ননকগনিজেবল জিডি হওয়ায় সেটি তদন্তের জন্য আদালতের অনুমতি চাওয়া হয়। আদালত অনুমতি দেওয়ার পর এখন পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করে দেখবে।
উল্লেখ্য, গত ৬ জানুয়ারি ডা: মুরাদ স্ত্রী-সন্তানদের গালাগাল করে মারধর করতে গেলে তাঁর স্ত্রী ডা: জাহানারা এহসান ৯৯৯-এ ফোন দিয়ে সহায়তা চান। অভিযোগ পেয়ে ধানমণ্ডি থানার পুলিশ তাঁদের বাসায় গেলে মুরাদ বাসা থেকে বের হয়ে যান। পরে ডা: মুরাদের বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ এনে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন তাঁর স্ত্রী।
এর আগে বিএনপি নেতা তারেক রহমানের মেয়ে জাইমা রহমানকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য ও চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহিকে অশ্রাব্য কথা বলার অডিও ক্লিপ ছড়িয়ে পড়ার পর প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে তথ্য প্রতিমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন মুরাদ হাসান। এরপর তাঁকে আওয়ামী লীগ থেকেও বহিষ্কার করা হয়। বিতর্কের মুখে দেশ ত্যাগ করলেও কানাডায় ঢুকতে না পেরে দেশে ফিরে আসেন তিনি।
ওই সময় সারা দেশে আলোচনায় থাকেন ডা: মুরাদ। তাঁর আলোচনার বিষয়ও থেমেও যাচ্ছিল। এরই মধ্যে গত ৬ জানুয়ারি তাঁর স্ত্রী থানায় জিডি করায় আবারও আলোচনায় এলেন ডা: মুরাদ হাসান।
Discover more from MIssion 90 News
Subscribe to get the latest posts to your email.