রামপুরা ব্রিজের ওপর শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করেছে। তবে সাধারণ যানবাহন চলাচল করতে দিচ্ছে বিশেষ শর্তে। রামপুরা এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শিক্ষার্থীরা আফতাব নগরের গেট থেকে রামপুরা ব্রিজের দখল করে রেখেছে। সেখানে সমস্বরে চিৎকার করে বলছে, ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস।’ এদের একটি দল সড়কের এক পাশের লেনকে উন্মুক্ত করে দিয়ে সাধারণ যানবাহন চলাচলের সুযোগ তৈরি করে দিয়ে তা তদারকি করছে। লেন মেনে যানবাহন চলছিল সীমিত আকারে। তাদের পাশেই একদল পুলিশ অবস্থান করছে।
একটি দল বাংলাদেশ টেলিভিশনের সামনের ইউলুপে বসিয়েছে চেকপোস্ট, তারা সমস্ত যানবাহনকে আটকে দিয়ে গাড়ির কাগজপত্র নীরিক্ষা করে তবে ছাড়ছে। এদের দলের একটি অংশ যানজট প্রতিরোধে ইউলুপে জমে থাকা গাড়ির কাগজ দেখে মার্কারি কলম দিয়ে একটি চিহ্ন দিয়ে দিচ্ছে, যেন চেকপোস্টে সহজেই সেটা ছাড়া পেয়ে যায়।
এর প্রভাব পড়ছে ডেমরা, আফতাব নগর এলাকা থেকে আসা যানবাহনের ওপর। বনশ্রী এলাকায় দেখা যায় দীর্ঘ যানবাহন। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত এই অবস্থা চলছিল।
হাফ পাস মেনে নেওয়ার পরেও রাস্তায় কেন? শিক্ষার্থীদের সাথে আলাপ করতে চাইলে একটি দল জানায়, ‘তারা তাদের সহপাঠী হত্যার বিচার চায়, নিরাপদ সড়ক চায়, সড়কে নিরাপত্তা চায়।’
জানা গেছে, মূলত রামপুরা এলাকায় গতরাতে একজন ছাত্র একটি বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে মারা গেছে। শিক্ষার্থী মইন রাজধানীর একরামুন্নেসা স্কুল থেকে এসএসসি দিচ্ছিলেন। মূলত মইন নিহতের ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে রাজধানীর ইমপিরিয়াল কলেজের শিক্ষার্থীরা। তারা সড়ক অবরোধ করলে অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকেও শিক্ষার্থীরা এসে এসে তাদের সঙ্গে যোগ দেয়।
এ দিকে নটরডেম কলেজের ছাত্র নাঈম ও সর্বশেষ মইন নিহত হওয়ার ঘটনায় রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার শিক্ষার্থীরা মঙ্গলবার পথে নেমেছে। তারা নিজেদের উত্থাপিত দাবির পক্ষে আরো জোড়ালো অবস্থান নিয়েছে।
শিক্ষার্থীদের ৯ দফা দাবির মধ্যে অন্যতম হলো- সব ধরনের গণপরিবহনে শিক্ষার্থীদের হাফ ভাড়া ও সড়ক আইনে কঠোর শাস্তির বিধান করা।
শিক্ষার্থীরা জানান, ৯ দফা দাবি আদায়ে গত বৃহস্পতিবার তারা সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) কার্যালয়ে গিয়েছিলেন। তখন বিআরটিএ কর্তৃপক্ষ এক সপ্তাহ সময় চায়। আজকের (৩০ নভেম্বর) মধ্যে দাবি মেনে প্রজ্ঞাপন জারি করা না হলে দুপুরের দিকে বিআরটিএ কার্যালয় ঘেরাও করবে তারা।
সড়ক অবরোধ কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন ঢাকা কলেজ, নিউ মডেল ডিগ্রি কলেজ, ইঞ্জিনিয়ারিং ইউনিভার্সিটি স্কুল অ্যান্ড কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ, বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রউফ পাবলিক কলেজসহ আরও কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা।
রাজধানীর রামপুরায় অনাবিল পরিবহনের বাসচাপায় মাঈন উদ্দিন নামের এক শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় রামপুরা ব্রিজ এলাকায় সকাল ১০টার দিকে বিক্ষোভ শুরু হয়। বিক্ষোভের জেরে ওই সড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।
রামপুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম বলেন, রামপুরা আইডিয়াল কলেজের শিক্ষার্থীরা ব্রিজের ওপর অবস্থান নিয়েছে। আমরা খবর পেয়েছি। ঘটনাস্থলে পুলিশের একাধিক টিম পাঠানো হয়েছে। ঘটনাস্থলে যাতে কোনো বিশৃঙ্খলা না হয়, সে বিষয়টি দেখা হচ্ছে।
সোমবার (২৯ নভেম্বর) দিনগত রাতে রামপুরায় রাস্তা পার হওয়ার সময় দুটি বাসের প্রতিযোগিতায় চাপা পড়ে নিহত হয় মাঈন উদ্দিন। এ ঘটনার জেরে রাতেই বেশ কয়েকটি বাসে অগ্নিসংযোগ করে বিক্ষুব্ধ জনতা।
Discover more from MIssion 90 News
Subscribe to get the latest posts to your email.