অনেক নাটকীয়তার জল্পনা কল্পনার পর জামিন পেলেন চিত্রনায়িকা পরীমনি। চার বার নিম্ন আদালতে পরীমণির জামিন নাকচ হবার পর শেষ পর্যন্ত তিনি জামিন পেলেন। একবার পরীমনির আইনজীবীরা জামিনের জন্য আবেদনই জানাননি। পরীমনির আইনজীবীরা তার সঙ্গে আইনি বিষয় নিয়ে কথা বলার আর্জি জানিয়েছিলেন। কিন্তু আদালত এ সুযোগও না দিয়ে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এরপর বিষয়টি যায় উচ্চ আদালতে। দীর্ঘ শুনানির পর উচ্চ আদালত জামিনের আবেদন শোনার জন্য নিম্ন আদালতকে নির্দেশনা দেন। রুলে পহেলা সেপ্টেম্বরের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়। একই সঙ্গে রুলে গত ২২শে আগস্ট দেয়া আদেশ কেন বাতিল করা হবে না তার কারণও জানতে চাওয়া হয়।
অবশেষে সকল নাটকীয়তার জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে আজ (১ সেপ্টেম্বর) গাজীপুর মহানগরের কাশিমপুর কারাগার থেকে সকাল সাড়ে নয়টার দিকে জামিনে মুক্ত হয়ে কারগার থেকে বের হয়ে আসেন।
এ সময় ঢাকাই চলচিত্রের নায়িকা পরিমনিকে দেখতে পরিমনির ভক্তরা ও হাজার হাজার উৎসুক জনতারা ভীড় করেন কারাগারের মূল ফটকে।
মঙ্গলবার বারে জামিনের আদেশ হলেও কাগজ পত্র কারাগার কতৃপক্ষের কাছে পৌঁছাতে দেরী হওয়ায় বুধবার সকালে কারাগার থেকে সাদা প্রাইভেট কারে করে বের হতে দেখা যায়।
এই পটভূমিতেই মঙ্গলবার নায়িকা পরীমনি ২৭ দিন কারাগারে থাকার পর জামিন পান। এদিন পরীমনিকে আদালতে আনা হয়নি। জামিন লাভের আগ পর্যন্ত তিনি কাশিমপুর কারাগারেই ছিলেন। গত ৪ঠা আগস্ট বনানীর বাসা থেকে ঢাকার চলচ্চিত্রের অত্যন্ত জনপ্রিয় নায়িকা পরীমনিকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। অভিযান শেষে বলা হয় নায়িকার বাসা থেকে বিভিন্ন ধরনের মাদক দ্রব্য জব্দ করা হয়। পরে মাদক আইনে মামলা করে র্যাব। পরীমনি তখন মিডিয়াকে জানান, তার বাসায় যেসব মদের বোতল পাওয়া গেছে তা ছিল খালি। সিআইডি বলেছে, পরীমনি নিজেই খালি করেছেন। দীর্ঘ সময় দরজা আটকিয়ে রেখেছিলেন এই নায়িকা। সিআইডির ধারণা, এ সময় তিনি বোতলগুলো মদ শূন্য করে রেখেছেন। মাদকের এই মামলায় তিন দফায় তাকে ৭ দিন রিমান্ডে নেয়া হয়। এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানান বিলেত প্রবাসী জেষ্ঠ্য সাংবাদিক আব্দুল গাফফার চৌধুরীসহ ১৭ জন বুদ্ধিজীবী। তারা যুক্ত বিবৃতিতে জানান, চলচ্চিত্র জগতের একজন অভিনেত্রীকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের নব্য ধনীক সমাজের যে চেহারা ফুটে উঠেছে তাতে আমরা গভীরভাবে চিন্তিত ও উদ্বিগ্ন।সামাজিক মাধ্যমেও তার মুক্তির দাবিতে ঝড় উঠে।
মঙ্গলবার আদালতে সরকার পক্ষ পরীমনির জামিন আবেদনের বিরোধিতা করেন। আইনজীবী আব্দুল্লাহ আবু আদালতকে বলেন, পরীমনির বাসা থেকে ভয়ঙ্কর আইস ও মদ উদ্ধার করা হয়েছে। পরীমনির আইনজীবী মুজিবুর রহমান সরকার পক্ষের এই অভিযোগ খন্ডন করেন।বলেন, পরীমনি একজন জনপ্রিয় নায়িকা।সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত প্রীতিলতা নামক একটি চলচ্চিত্রে অভিনয় করছেন। এখন তার শিডিউল চলছে। তাছাড়া পরীমনি শারীরিকভাবে অসুস্থ। তিনি জামিন পেলে মামলায় কোন ধরনের প্রভাব পড়বে না। যে কোন শর্তে আমরা তার জামিন চাই। উভয়পক্ষের যুক্তি-তর্ক শুনে বিচারক ইমরুল কায়েস ৫০ হাজার টাকা মুচলেকায় জামিন মঞ্জুর করেন।
কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারের মহিলা সেলের সুপার হালিমা খাতুন জানিয়েছেন, নির্ধারিত সময়ের আগ পর্যন্ত পরিমনির জামিনের কোনো কাগজ-পত্র আসেনি। তাই মঙ্গলবার পরীমনি জামিনে মুক্ত হতে পারছেন না। বুধবার নথি পাওয়ার পর তার মুক্তি হতে পারে
উল্লেখ্য যে, পরীমনির তারকাখ্যাতি শুধু দেশে নয় বিদেশেও ছড়িয়েছিল। স্বীকৃতি এসেছিল আন্তর্জাতিক মিডিয়া থেকেও। বিখ্যাত ফোর্বস ম্যাগাজিনে এশিয়ার ১০০ ডিজিটাল তারকার তালিকায় স্থান পান পরীমনি। সোস্যাল মিডিয়ায় তার রয়েছে প্রায় এক কোটি ফলোয়ার। ‘আমার প্রেম, আমার প্রিয়া’ সিনেমার মাধ্যমে টাইমলাইনে আসেন।
Discover more from MIssion 90 News
Subscribe to get the latest posts to your email.