ঢাকাই সিনেমার দুই সুপারস্টার শাকিব খান ও শবনম বুবলীর সন্তানের খবর নিয়ে শুধু বিনোদন পাতা নয়, গোটা শহর সরগরম। ঘুরেফিরে সবার একটাই প্রশ্ন- আড়াই বছর গোপন থাকলো কিভাবে?
মঙ্গলবার (২৭ সেপ্টেম্বর) অপু বিশ্বাস ও শাকিব খানের সন্তান আব্রাম খান জয়ের সপ্তম জন্মদিনে নিজের ফেসবুক পেজে বেবি বাম্পের ছবি প্রকাশ করে যেই গুঞ্জনের সূত্রপাত করেছিলেন ঢাকাই সিনেমার নায়িকা বুবলী, শুক্রবার (৩০ অক্টোবর) তার সুরাহা করেন শাকিব ও বুবলী।
দু’জনই নিজেদের ফেসবুক পেজে আড়াই বছর বয়সী শেহজাদ খান বীরের ছবি প্রকাশ করে ঘোষণা দেন আব্রাম খান জয়ের ভাই পাওয়ার কথা।
আগের বারেও শাকিবের বিরুদ্ধে অভিযোগ অপু বিশ্বাসকে সন্তানের কথা গোপন রাখতে বলেছিলেন তিনি। এবারও আড়াই বছর ধরে অন্তরালে রেখেছিলেন সন্তান জন্মের খবর। গুঞ্জন উঠেছে এরই মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদও হয়েছে এ দম্পতির।
ফলে অনেকটা যেন স্বীকৃতির দাবির মতো করে সন্তানের খবর সামনে আনলেন বুবলী আর সাকিবও স্বীকৃতি দেয়ার মতো করেই যেন দিলেন প্রত্যুত্তর।
শুক্রবার (৩০ অক্টোবর) আড়াই বছরের এই গোপনীয়তার রহস্য নিয়ে কথা বলতে মাহবুব হাসানের সঞ্চালনায় একাত্তর সংবাদযোগে হাজির হয়েছিলেন বিনোদন সাংবাদিক তানভীর তারেক, চলচ্চিত্র প্রযোজক মোহাম্মদ ইকবাল এবং সহকর্মী বুলবুল আহমেদ জয়। বুবলী পরবর্তী সময়ে কথা বলার বিষয়ে জানালেও, বাসার সামনে অপেক্ষমাণ সংবাদকর্মীদের কিছুই জানাননি সাকিব।
বুলবুল আহমেদ জয় জানালেন, শুক্রবার রাত পর্যন্তও আনুষ্ঠানিকভাবে মিডিয়ার সামনে কোনো কথা বলেননি শাকিব ও বুবলী কেউই।
এতদিন গোপন রাখার কি ব্যাখ্যা তাদের- সঞ্চালক মাহবুব হাসান জানতে চাইলে বুলবুল আহমেদ জয় বলেন, গণমাধ্যম একটি নীতিমালার মধ্যে চলে। সে নীতিমালা অনুযায়ী একজন তারকাকে ব্যক্তিগত বিষয়ে প্রশ্ন করা রীতিবহির্ভূত। ফলে বুবলী-সাকিবের বিয়ে-সন্তান বিষয়ে অনেকে জানলেও তা নিয়ে তারা ব্যক্তিগতভাবে না জানানোয় এ বিষয়টি প্রকাশ্যে আনা হয়নি কখনও। তবে নানা সময়ে আকারে-ইঙ্গিতে শাকিব খান বিষয়টি সামনে এনেছেন বলেও জানান তিনি।
সুপারস্টারদের সামাজিক দায়বদ্ধতার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বিনোদন সাংবাদিক তানভীর তারেক বলেন, তাদের ব্যক্তিগত বিষয়ও আসলে আর ব্যক্তিগত না। একজন ব্যক্তি সুপারস্টার পরিণত হন অনেক তরুণের রোল মডেলে যারা সামাজিক, পারিবারিক ও ব্যক্তিজীবনেও তাদের অনুসরণ করেন। ফলে তাদের ইমেজ নিয়ে আরেকটু সচেতন ও যত্নবান হওয়া উচিত।
আর এই আড়াই বছর গোপন থাকায় গণমাধ্যমের ব্যর্থতার দায় অস্বীকার করে তিনি বলেন, এই যে তাদের এই গোপন করতে পারাটা এটা গণমাধ্যমের ব্যর্থতার চেয়েও আসলে বেশি শিল্পী ও কলা-কুশলীদের যে সংগঠন রয়েছে, অর্থাৎ শিল্পী সমাজের মুরুব্বীদের ব্যর্থতা। শিল্পী সমাজের কার্যকর কোনো অভিভাবক না থাকায় এমনটা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
সুপারস্টারদের এমন গোপন করা ও মিথ্যাচার শুধু তাদের ব্যক্তিগত ইমেজ নয়, সংবাদকর্মীদের বিশ্বাসযোগ্যতারও ক্ষতি করছে উল্লেখ করে তানভীর তারেক বলেন, আমেরিকা থেকে ফিরে বুবলী জানান যে তিনি ফিল্ম নিয়ে নিউ ইয়র্কে পড়াশোনা করতে গিয়েছেন। সেসময় এমন খবর প্রকাশের পর তার সহকর্মীরাই এ নিয়ে টিপ্পনী কেটেছেন। আড়াই বছরে তো আর এমন কম মিথ্যে হয়নি, আর গণমাধ্যমও তা ছাপতে বাধ্য হয়েছে- আজ যার সবই প্রমাণিত মিথ্যে।
চলচ্চিত্র প্রযোজক মোহাম্মদ ইকবাল, যার বীর সিনেমার মাধ্যমেই শাকিব-বুবলীর পরিচয়, তিনি বলেন, বীর সিনেমার সেট থেকেই বিষয়টি জানলেও আর্টিস্টদের কাছে প্রযোজকদের জিম্মিদশার কারণে বিষয়টি তিনি সামনে আনতে পারেননি।